১৭৬৫ সনে উন্মত্ত বার্মিজ সৈন্যদের লাগানো আগুনের ছাই থেকে আবার সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়ানো আয়ুথিয়ার রাজকীয় প্রাসাদ "সানফেত প্রাসাত থর্ন হল
"If man has no knowledge of the past, he is nothing but a vessel without a rudder on the high seas", claims the Ancient City's sage-like founder, Lek Viriyaphant
একটি দেশের উপর দিয়ে আপনি পায়ে হেটে পেরিয়ে যাচ্ছেন মাইলের পর মাইল, যাচ্ছেন সেদেশের ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে, দেখছেন পর্যটক প্রিয় প্রাচীন সৌধ আর স্থাপনাগুলো মাত্র সাত ঘন্টায় ! এই বিশাল দেশের সবটুকু ঐতিহ্য সাত ঘন্টায় দেখা এও কি সম্ভব ? হ্যা সেটা সম্ভব যদি আপনি ব্যাংককের গা লাগোয়া বিভাগ সামুদ প্রাখানে একটিবার যেতে পারেন। আগে একটু কষ্ট হলেও এখন আপনি স্কাই ট্রেনে করেই কয়েক মিনিটে যেতে পারবেন সুকুম্ভিতের যে কোন বিটিএস স্টেশন থেকে খেহা পর্যন্ত যা সামুদ প্রাখানে গিয়ে শেষ হয়েছে।
যাই হোক বলছিলাম সাত ঘন্টায় থাইল্যান্ড ভ্রমন নিয়ে। আসলে এটি খোলা আকাশের নীচে একটি উন্মুক্ত যাদুঘর স্থানীয় ভাষায় যার নাম মুয়াং বোরান অর্থাৎ প্রাচীন শহর। তাদের গর্বের মাতৃভুমি থাইল্যান্ডের মানচিত্রের আদলে ছোট আকারে তৈরী যাদুঘরটির নির্মাতা প্রয়াত ধনকুবের Lek Viriyaphant ।
ইতিহাস ও ঐতিহ্য প্রিয় পর্যটকদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকা এই যাদুঘরের নির্মাতা মিঃ লেক দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করতেন যে কোন মানুষ যদি তাদের নিজেদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে কিছু না জানে তবে সে হবে সমুদ্রের মাঝে ভেসে থাকা এক দিকভ্রান্ত জাহাজ,যার কাছে তীরে ফেরার কোন দিক নির্দেশনা নেই।
এই ধারনা থেকেই থাইবাসীকে তাদের শেকড় চেনানোর উদ্দেশ্যে মিঃ লেক ১৯৬৩ সনে ব্যংককের লাগোয়া প্রদেশ সামুদ প্রাখানে আনুমানিক ২৬০ একর জায়গার উপর নির্মান করেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত যাদুঘর।এখানে রয়েছে গোটা থাইল্যান্ডের ৩২০ টি শহরের ১০৯ টি বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থাপত্য যা পর্যটকদের চুম্বকের মত টেনে নিয়ে আসে।
প্রাচীন নগরী শ্যাম বা মুয়াং বোরানে নির্মিত অসংখ্য ঝর্নার মাঝে একটি
এই মানচিত্র আকারের যাদুঘরের প্রতিটি স্থাপনা দেশের যেখানে যে অবস্থায় আছে ঠিক অবিকল সেভাবেই তৈরী ও সাজানো । নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস হওয়ার কথা না। এই সৌধগুলোর কোনটাই ক্ষুদ্রাকৃতির নয়, কিছু কিছু আসল আকার থেকে সামান্য ছোট বা প্রমান সাইজের যা বিস্মিত করে পর্যটককূলকে ।
আজকের আধুনিক থাইল্যান্ড বলতে অধিকাংশ মানুষই একে এক প্রমোদ নগরী ভেবে থাকে, এখানে মানুষ আসে বুঝি শুধু তাদের মনোরঞ্জন ও শপিং এর জন্য। কিন্ত তা নয়,বহু প্রাচীন যুগ থেকেই চির-স্বাধীন থাইল্যন্ডের রয়েছে এক সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য, যার গোড়াপত্তন হয়েছিল খৃষ্টপুর্ব ৩৬০০ বছরেরও আগে। বিভিন্ন রাজন্যবর্গের রাজত্বকাল যেমন সুকোথাই,লান্না,হরিপুঞ্চাই,আয়ুথিয়া, থনবুরি ও বর্তমান রাত্তানাকোসিন রাজত্বকালের সমস্ত উল্লেখযোগ্য স্মৃতিসৌধগুলোকে মিঃ লেক ফুটিয়ে তুলেছেন তার এই ২৬০ একর জমির উন্মুক্ত যাদুঘরে ।
সানফেট প্রাসাত থর্ন হলের ছাদের অপরূপ কারুকাজ
প্রাচীন রাজধানী এবং ঐতিহাসিক আয়ুথিয়া নগরীর সানফেট প্রাসাত প্যালেস, সুকোথাই্, ফিটসানুলক ও কামপেং ফেটের ঐতিহ্যময় মন্দিরগুলো, ক্যাম্বোডিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে রশি টানাটানি করা সি-সাকেটের বিখ্যাত প্রি বিহারা, নাখন রাচাসিমার ফিমাই, লপবুরির বিখ্যাত মাংকি টেম্পল যা খেমার রাজত্বকালে খেমার স্থাপত্যকলার অনুসরনে নির্মিত হয়েছিল। এমনকি এখানে থাইল্যন্ডের বিখ্যাত ফ্লোটিং মার্কেটও রয়েছে ছোট আকারের। তাতে আছে রেস্তোরা ও হাতে তৈরী বিভিন্ন জিনিসের ভাসমান দোকান-পাট যেমনটি রয়েছে দামুনেন সাদুয়াকে,রয়েছে প্রাচীন থাইল্যান্ডের একটুকরা গ্রাম। ছোট আকারের এক নদী তাতে প্রাচীন যুগের সাধারন নৌকা থেকে রাজকীয় বজরা। ফলে কারো যদি পুরো থাইল্যান্ড ঘোরার সুযোগ বা সময় না থাকে তবে এখান থেকেই সে দেখে নিতে পারবে সব কিছু, যাকে বলে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মত।আর আপনার পরিবার ও বাচ্চাদের নিয়ে এখানে সারাদিনের ভ্রমন হবে একটি নতুন দেশ সম্পর্কে জানা যা অত্যন্ত শিক্ষামুলক এবং সেই সাথে আনন্দদায়ক তো বটেই।
পথ চলা
এবার আসা যাক সেই বিস্ময়কর যাদুঘর ভ্রমনে যার শুরু হয়েছিল ছুটির দিনের এক মেঘমেদুর সকালে। স্কাই স্টেশন খেহাতে নেমে ট্যক্সি নিয়ে প্রবেশ করলাম দুর থেকে দেখতে পাওয়া দৃষ্টি নন্দন গেটের ভেতর। টিকিট ফি বিদেশী মাথাপিছু ৭০০ বাথ এটা একটু বেশিই মনে হলো আমাদের কাছে। ব্যংককের প্রধান যাদুঘর আমি দেখেছি ২০০ বাথ দিয়ে । সামান্য কিছু খেয়ে নিয়ে এই বিশাল এলাকাটি ঘোরার জন্য আটঘাট বেধে নামলাম । ঘন্টা প্রতি ৩০০ বাথ দিয়ে ড্রাইভার ছাড়া একটি গলফ গাড়ী ভাড়া নিলাম। কারন বুড়ো হাড়ে ২৬০ একর জায়গা পায়ে হেটে ঘুরে দেখা সম্ভব না ।
এনসিয়েন্ট সিয়াম এর প্রবেশ তোরণ যা অনেক দূর থেকেই চোখে পরবে সবার
কিছুদুর এগিয়ে গেলেই হাতের বায়ে চোখ ঝলসানো মন্দির নাম মহা ভাজিরাধাম্মা বিহার
অত্যন্ত পবিত্র এই মন্দিরে রয়েছে ২৮টি বুদ্ধ মুর্তি এবং অনেকগুলো প্যাগোডা যার মাঝে আছে বারোটি রাশির জন্য আলাদা আলাদা মন্দির গৃহ।
এই স্থাপনার ভেতরের দৃশ্য
প্যাভিলিয়ন অফ দ্যা এনলাইটেন।
প্রাচীন থাই সাহিত্য থেকে নেয়া বোটানিক্যাল গার্ডেন যেখানে রয়েছে একগুচ্ছ তাবু আকৃতির কুটির। থাইবাসীরা একসময় প্রকৃতির খুব কাছাকাছি বসত করতো, বিভিন্ন গাছ আর ফুলের সমারোহ ছিল তাদের বাড়ীর আশেপাশে। যা এখনো আছে তাদের বাগান জুড়ে আর জীবন জুড়েও। এই বিষয়টি তাদের সাহিত্যে ব্যাপক স্থান দখল করে আছে। সেই থাই সাহিত্য থেকে নেয়া বাগান ঘেরা এক প্যাভিলিয়ন
প্যাভিলিয়ন থেকে সামান্য এগিয়ে আসতেই এই নজর কাড়া লেক। আর ছোট এই লেকের মাঝে তৈরী হয়েছে দারুন সুদৃশ্য এক ফোয়ারা যেখানে বোধিসত্ব আলোকিতেস্বরা বর্ননা করেছেন ক্ষমার দেবী কুয়ান ইন তার অলৌকিক ক্ষমতার বলে অশুভশক্তিকে তাড়িয়েছেন
সেই ঝরনার মাঝে কৃত্রিম পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে থাই পুরাণের বিভিন্ন অশুভ আত্মারা যাদের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে ক্ষমার দেবী কুয়ান ইন
ঘুরতে ঘুরতে এখানেও এসে দেখি মায়ে-নাকের চেয়েও নাকি ভয়ংকর এই লম্বা গলার মহিলা ভুত। একদম পেছনে দাঁড়িয়ে কি যেন নির্দেশ দিচ্ছে। গাইড আমার হাত ধরে টানতে টানতে সরিয়ে নেয়ার আগে কোন রকমে একটা ফতো তুলে নিলাম
এরপর আমরা আসলাম বিশাল লেকের উপরে গোলাপী রঙের অপুর্ব দৃষ্টি নন্দন নকশায় নির্মিত এই মন্দিরটিতে, নাম সালা রামায়না। এই নাম দেখেই বোঝা যায় হিন্দু দেবতার মন্দির
সরোবরের উপর দিয়ে বানানো এমন পদ্ম কুড়ির সেতু দিয়েই যেতে হবে আপনাকে মুল মন্দিরে
মুল মন্দিরের মাঝখানে রয়েছে স্বর্নালী রঙের চার মুখওয়ালা দেবতা নারায়ন
খানিকটা এগিয়ে যেতেই আরেক সরোবর যার মাঝখানে রয়েছে অসাধারন নান্দনিক নকশায় নির্মিত বৌদ্ধধর্মাবল্মবীদের কল্পিত স্বর্গপুরী। এই ছবিটি নেট থেকে নেয়া
বুদ্ধ ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী এটা তাদের স্বর্গপুরী যার অবস্থান সুমেরু পর্বত চুড়ায়, এই পর্বত রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে। এই স্বর্গপুরীকে ঘিরে আছে বিশাল একটি মাছ যার নাম আনন্দ মাছ, আমার কাছে অনেকটা মাগুর মাছের মত লাগলো দেখতে
স্বর্গপুরীকে ঘিরে থাকা অতিকায় আনন্দ মাছ হা করে আছে
আস্তে আস্তে দুপুর হয়ে এলো, খিদেয় সবার পেট চো চো করছে, এখানে গেটে ঢুকেই কফি আর স্যান্ডউইচ খেয়েছিলাম তা বারবার গাড়ীতে ঊঠানামা করতে করতেই হজম।এবার গাইড আমাদের নিয়ে গেলো সেখানে নির্মিত ফ্লোটিং মার্কেটের এক রেস্তোরায় ।
এই গেট দিয়ে ঢুকে পাশের কাঠের বাড়ি্টাই একটি রেস্তোরা যেখানে আমরা খেয়েছিলাম
খাবার দাবার নিয়ে বেশি এক্সপেরিমেন্ট করতে আমার ভয় হয় । তাই গরম গরম ভাত খাও সুয়ে আর ফ্রাইড চিকেন সাথে কাচা পেপের সালাদ সোমতাম অর্ডার দিলাম আমার জন্য। যে যার পছন্দ মত খেয়ে নিয়ে বের হয়ে আসলাম ফ্লোটিং মার্কেট থেকে। এবার আমাদের গন্তব্য পাহাড় চুড়োয় প্রি বিহারায় । সকাল থেকেই আকাশটা মেঘলা ছিল যার জন্য ঘুরতে অত ক্লান্ত হইনি, কিন্ত খেয়ে দেয়ে বের হতেই আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি আসল। কাম্ফেংফেটের ভাংগা দেয়ালের পাশে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে গলফ কার্ট রওনা দিল গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
প্রাচীন রাজ্য কামফেংফেট নগরীর নিরাপত্তা দেয়াল। জায়গায় জায়গায় ভেঙ্গে পরা শ্যাওলা ধরা দেয়ালটি বাস্তবে যেমনটি আছে এখানেও ঠিক তেমনি করেই নির্মান করেছেন মিঃ লেক তার দারুন দক্ষতায়
গলফ কার্ট চলে আসলো খেমার নকশায় ১১শ শতাব্দীতে নির্মিত সি-সাকেট প্রদেশের বিখ্যাত প্রি-বিহার মন্দিরে উঠার বৃষ্টি ভেজা সিড়ির সামনে
এই সিড়িটি বেয়ে উঠে আপনি আরেকটি ধাপে চলে আসবেন
ঐতিহ্যবাহী খেমার শিল্পের অন্যতম অনুসংগ নাগরাজকে এখানেও দেখতে পাবেন কারন এটা যে সেই এংকরভাট আমলেই নির্মিত। এই সিড়ি বেয়ে উঠলে আপনি চলে যাবেন পাহাড়ের সর্বোচ্চ চুড়ায় যেখান থেকে আপনি পুরো মন্দিরটি দেখতে পাবেন
এখানে দাঁড়াতেই চোখের সামনে হাজির হলো থাই-ক্যাম্বোডিয়া সীমান্ত ঘেষা দুর্গম দাংরেক পাহাড়ের চুড়ায় বহু প্রাচীন প্রি-বিহার মন্দিরের বৃষ্টি ভেজা উঠোনটি । এই মন্দিরের মালিকানা নিয়ে ক্যাম্বোডিয়ার সাথে থাইল্যান্ডের দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব চলছিলো। শেষ পর্যন্ত হেগের আন্তর্জাতিক আদালত একে ক্যাম্বোডিয়ার সম্পত্তি বলে রায় দেয়। ক্যাম্বোডিয়া থেকে এখানে যাবার পথটি ভয়ংকর দুর্গম আর বিপদ শংকুল। তবে সহজ ভাবে মন্দিরে প্রবেশের মূল পথটি রয়েছে কিন্ত থাইল্যান্ডের দিকেই।
খেমার নকশায় গড়া প্রি-বিহার নামের মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল খেমার রাজা প্রথম সুর্যবর্মনের সময়কালে।
বিখ্যাত খেমার নকশায় তৈরী প্রাসাত ফিমাই ( Prasat Phimai )
এই মন্দিরটির অবস্থান থাইল্যান্ডের পুর্ব দক্ষিন সীমান্ত প্রদেশ নাখন রাচাসিমায় Nakhon Ratchasima যার সংক্ষিপ্ত নাম খোরাট। থাইল্যান্ডে অবস্থিত সব খেমার মন্দিরের মাঝে এটাই আকারে সবচেয়ে বড়। প্রায় ক্যাম্বোডিয়ার এংকরভাটের সমান জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত। ১১ শ/ ১২শ শতাব্দীতে হিন্দু দেবতা শিবের উদ্দেশ্যে নির্মিত এই খেমার মন্দিরটি ইতিহাসে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। ১৯৬৩ -৬৯ সালে যেই সব ফরাসী বিশেষজ্ঞ এংকরভাট পুনরুদ্ধার করছিলেন তারাই এটি পুনরুদ্ধার করেন।
ফিমাই মন্দিরের চুড়োয় ঝালরের কারুকাজ
প্রাসাত শিখোরাফুম নামের ৩২ মিটার উচু লাল রঙের এই মঠটি সুরিন প্রদেশের গর্ব বলে পরিচিত।
সুরিন আর সি-সাকেট শহরের মাঝখানে এই মন্দিরটিও খেমার রাজা দ্বিতীয় সুর্য্যবর্মনের সময় স্যান্ডস্টোন আর ইট দিয়ে তৈরী হয়েছিল। এর দেয়াল আর দরজার ফ্রেমে খোদাই করা আছে বিভিন্ন দেব-দেবী আর অপ্সরাদের মুর্তি। এখানে বাৎসরিক একটি হাতী প্রদর্শনী হয়ে থাকে ।
পোড়া ছাই থেকে ফিনিক্স পাখীর মত আবার আগের রূপে উঠে আসা রাজপ্রাসাদ সানফেট প্রাসাত থর্ন হল। প্রাচীন রাজধানী আয়ুথিয়ার বিখ্যাত রাজপ্রাসাদ এর রেপ্লিকা যার ভেতরের দেয়ালের স্বর্নালী কারুকাজ আর সোনার সিংহাসন চোখ ধাধিয়ে দিয়েছিল আমার।
ভেতরের ছবি তোলা নিষেধ এটা দেখার আগেই আমি এই ছবিটি তুলেছিলাম।
১৭৬৫ সনে যখন বার্মিজরা থাইল্যান্ড আক্রমন করে রাজধানী আয়ুথিয়াকে জালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিল তখন এই রাজপ্রাসাদটিও জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে মাটির সাথে মিশে গিয়েছিল উম্মত্ত বর্মী দর আক্রমনে। এখন আয়ুথিয়া নগরীতে শুধু ভিত্তিটাই রয়েছে। মিঃ লেক প্রচুর গবেষনা করে এই প্রাসাদটি পুরো আকৃতিতেই নির্মান করেছেন তার স্বপ্নের যাদুঘরে। নির্মানের পর এই প্রাসাদটি একবার মাত্র ব্যাবহার করা হয়েছিল যখন বৃটেনের রানী এলিজাবেথ প্রথম বারের মত থাইল্যান্ড ভ্রমনে এসেছিলেন।থাই প্রয়াত রাজা ভুমিবল তাকে এই ঐতিহ্যময় রাজ প্রাসাদে সম্বর্ধনা জানিয়েছিলেন।
রাজপ্রাসাদ সানফেট প্রাসাত থর্ন হলের সামনে অপরূপ এক ফোয়ারা
আয়ুথিয়াতে ভস্মীভুত সানফেট প্রাসাত হলের বর্তমান রূপ। এখান থেকেই মিঃ লেক থাই এবং ফ্রান্সের ঐতিহাসিক দলিল থেকে একে আবার আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন তার স্বপ্নের যাদুঘরে
ইনি হলেন থাইবাসীদের বিখ্যাত একজন স্পিরিত। তার অনুকম্পা লাভের জন্য সামনে কিছু খাবার দাবার দেখলাম
এখানেও গাইডের হাত টানাটানি, কি ব্যাপার ? "ওহ নো মামা হি ইজ আ স্পিরিত" ! বললাম 'সো'! সে জানালো "ইফ ইঊ ডু এ রঙ থিং হি উইল পলো ইউ আপটু ডাকা"! ভাবলাম কি বলে ! জিজ্ঞেশ করলাম কি রঙ থিং ? বল্লো "তুমি যদি তার সামনে থেকে কিছু নাও এমনকি গাছ থেকে ছিড়ে একটা পাতা পর্যন্ত নিলে"। তার কথা শুনে মনে হলো আমাদের দেশেও এমন কিছু স্পিরিত থাকা দরকার ছিল কারন যেই হারে লোকজন গাছ কেটে সাবাড় করছে
থাই বর্নমালার উদ্ভাবক মহান রাজা রামখামহ্যাং এর রাজ্য সুকোথাই (১২৩৮খৃঃ-১৪৩৮খৃঃ ) এর পথে পথে
প্রাচীন সুকোথাই রাজ্যের বিখ্যাত ওয়াট মহাথাট
দাঁড়িয়ে থাকা গৌতম বুদ্ধ। খৃষ্টপুর্ব ৭ থেকে ১১ শতাব্দীতে দভারাভতী সময়ে ( Dvaravati Period) মুর্তিটি নাখন পাথম প্রদেশের পুরনো একটি শহর নাখন চাই সিতে নির্মিত হয়েছিল দাভারাভতী সময়কালে এই শহরটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন ছিল
প্রাচীন লান চাং স্থাপত্য নকশায় তৈরী বৌদ্ধ বিহার
একসময় থাইল্যান্ডের অধিকৃত লাওসের ভুখন্ড লান চাং এর বহু প্রাচীন স্থাপত্য নকশায় তৈরী বৌদ্ধ বিহার যা এখনকার নির্মান রীতিতে দেখা যায় না । ১৯৪৬ সনে এই ভুখন্ডটি থাইল্যান্ডের হাত ছাড়া হয়ে যায়।
সামার প্যালেস থেকে তুলে আনা ফ্রা খিউ প্যাভিলিয়ন
সকাল নটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকে এই মিউজিয়াম। একটি ব্যাটারি চালিত গাড়ি নিয়েও ৩২০ টি শহরের ১০৯টি স্থাপত্যের অনেকগুলো দেখা সম্ভব হয়নি। আর দেখলেও সামুর এই ক্রান্তিকালে এত ছবি দিয়ে সার্ভার ডাউন করতে চাই নি । যতটুকু দেখেছি ততটুকুই আসুন আমাদের সাথে আপনারাও দেখুন যাদের এখনো যাওয়া হয়ে ওঠেনি ।
ছবি সব আমার মোবাইলে
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:১৭