somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

বিয়ে কি ধর্ষণ কমানোর প্রধান সমাধান!

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





ধর্ষণ বর্তমান সময়ে যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তাতে মনে হচ্ছে এক সময় ধর্ষণ রোধ করা মহা-মুশকিল হয়ে যাবে। সময় আজ-ই এর শিকল টেনে ধরবার। আঁতকে উঠা প্রতিদিনের দৈনিক পত্রিকার খবরে বিষাদে ভরে উঠছে হাজারো বাঙালীর মন।

অনেকে বিকল্প খুঁজছেন। মানে, সোজা করে লিখতে গেলে বলতে হয় "বাঙালী আজ বড় অসহায়, তাই জাপানীজ পুতুল খুঁজছেন"।

তা এই পুতুলের কাজ কী হবে?

• পুরুষতান্ত্রিক সমাজে (নারী প্রধানমন্ত্রী, নারী স্পিকার, নারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী, নারী বিরোধীদলীয় নেত্রী, নারী জেলা প্রশাসক, নারী হাইকোর্টে বিচারপতি, নারী সুপ্রীমকোর্টে বিচারপতি, নারী মাজিস্ট্রেট, নারী মেজর, নারী এসপি, নারী ওসি, নারীরা কয়েকটা মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, পুলিশ বাহিনীতে নুন্যতম ২০% নারী ইত্যাদি) নারীদের স্বাধীনতা দিলে তবেই ধর্ষণ কমবে, নতুবা পুরুষদের অতিদ্রুত বিয়ে দিয়ে দিতে হবে।

কীভাবে কমবে?

কমবে এভাবে যে, পুরুষদের চর্বির যথাযথ একটি পাত্র(ভিন্ন অর্থে বউ) খুঁজে পাওয়া যাবে এবং যাদের আচরণ হবে জাপানীজ পুতুলদের মত। ওরা ঘরদোর পরিষ্কার করবে, স্বামীর যত্ন নেবে এমনকি সম্পূর্ণ হাউজওয়াইফের ভূমিকা পালন করবে। মহৎ এই উদ্দেশ্যে সাড়া দিয়ে যারা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় পা ফেলতে যাচ্ছেন তারাও বেশ কনভিন্সড্। মুশকিল হলো, জাপানীজ পুতুল স্রেফ সেক্সুয়াল স্যাটিফফিকশন(তাও বিকল্প হতে পারবে বলে মনে হয় না) এনে দিতে পারে। এর বেশি বা কম কিছুই নয়। পুতুলগুলো কিন্তু আবার রোবট নয় যে, সে একজন আদর্শ হাউজওয়াইফ হবে। কিন্তু আমাদের তো ধর্ষণ রুখতে হবে!

• দ্বিতীয় প্রস্তাবনা হলো, যদি জাপানীজ পুতুল দিয়েই সব হত তাহলে জাপান থেকে কিছু পুতুল বাংলাদেশ সরকার অর্ডারও করতে পারতেন। যদিও আখেরে তা ভাল ফল বয়ে আনবে বলে আমার তো মনে হয় না। ধরুন, আপনি খুব বকবক করছেন বিয়ে নিয়ে। কিন্তু বাস্তবতা মানে পাড়া-পড়শীর একটাই কথা আপনার বাবাকে বারবার শুনতে হচ্ছে,

"আপনার ছেলে কি করে?"

না, সে কিচ্ছু করে না। তার আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি। যুবক ভাবছে চায়ের বিল তবে আটকে যাবে না তো! অথবা "চাকুরীর বাজার" পত্রিকা নিয়মিত কিনতে পারবো তো? মানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় সামাল দিতে সে হিমশিম খাচ্ছে। এখন তাকে যদি এই বিয়ের আইডিয়াটা খুব সুন্দর করে গেঁথে দিয়ে আমরা আমাদের দায় সেরে ফেলি তাহলে অন্তত ঐ যুবকের দ্বারা ধর্ষণ হবে না। কিন্তু মহাশয়, ভাল ফ্যামিলি ব্যাক-আপ না থাকলে বিয়ের পর সে বউকে খাওয়াবে কি? তিনবেলা জল? এখন আবার কাউন্টার প্রশ্ন,

"তবে কি ঐ যুবক না খেয়ে থাকেন?"

ধ্যাত! খাওয়ানো বলতে সেটার সংজ্ঞা এখানেই শেষ হয়ে গেলো না। একজন মেয়ের কী কী প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লাগতে পারে তার যোগান তিনি কি দিতে পারবেন? খুব সম্ভবত নয়। তাই যে ইতোমধ্যেই অসুবিধার মধ্যে আছে তাকে বিয়ে দিয়ে যে প্রিভিলেজপ্রাপ্ত করছেন তা কিন্তু প্রাকটিকালি হলো না। কারণ, অসুবিধার উপর অতিরিক্ত যে কোনো দায়িত্ব আরো বেশি অসুবিধার কারণ হতে পারে। তবে যাদের সাধ্য আছে, বিয়ে করে ফেলুন। কিন্তু এই যুবককে বিয়ে দেবার কথা ভাবা বড্ড অন্যায় হয়ে যাবে। কারণ, যে সমাজ তাকে দুই পয়সার সাহায্য করতে রাজী নয় সে সমাজ তাকে বিয়ের পীড়িতে বসার জন্য জবরদস্তি খাটাতে পারে না।

• এবার আসা যাক ড্রিম গার্ল প্রজেক্টে। দেখুন, একজন ব্যক্তির হৃদয় বলেও তো একটা বস্তু থাকে। শ্বশুরবাড়ি থেকে ব্যাক-আপ নিলেও পরিবর্তিত যে মানুষটি মিলবে তার সাথে তিনি চলতে পারবেন? কয়জন পারবেন? বা এই চলতে পারাটা টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরির জন্য সহি তো?

কারণ বর্তমানে ডিভোর্সের রেট বেড়ে যাচ্ছে, পরকীয়া বেড়ে যাচ্ছে। আর এতসব কেনো হচ্ছে? কারণ, বোঝাবুঝি নেই ওদের একে অপরের সাথে। যদি থাকতো, তাহলে এর কোনটাই ঘটতো না। কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে পাবেন। আসলে "মনের মিল" হওয়াটা জরুরী বুঝলেন। অবশ্য যেটা বলিউড আজ অবধি আমাদের বুঝাতে প্রায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। অথবা আপনারা "আশিকী ২" মুভিটি দ্যাখেননি। আজ-ই দেখে ফেলুন।

ধূর মশাই, বিয়েটা এবার করেই ফেলুন।

• ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেখলাম। তিনি লম্বা করে কি সব ছাইপাঁশ লিখেছেন। একটা লাইন চোখে পড়ে গেলো,

"...মেয়েদের ভোগ করুন।"

এই লাইনটির মধ্যে যে রাজনীতি জড়িয়ে আছে তা মনে হয় ঐ খুকুমণি জানে না। সায়েন্স অনুযায়ী মেয়েদের তবে Estrogen অথবা Progesterone হরমোন সমূহ নেই। মানে ভাবখানা এমন।

একজন পুরুষ একজন মহিলার সম্মতি নিয়ে চুমু খেলেন। এখন মেয়েদের যেহেতু হরমোন নেই(উপরোক্ত বাক্য অনুযায়ী) তাই এই মহিলাটি ঐ পুরুষকে দয়া দেখালেন। ব্যাপারটা এমন করেও লিখা যায়,

"(এমন মহিলার ভাষায়)...হে পুরুষ, আমি তোমার অসহায়ত্ব বুঝি। তোমার হরমোনগুলো এখন মাথায় চড়েছে। আর আমি ব্যস সেটা শান্ত করার দায়িত্ব নিলাম।"

ভাবতে অবাক লাগে, "ভোগ" শব্দটির ব্যবহার করে একজন মেয়ে কীভাবে নিজেই নিজেকে ছোট করছে। একবার চিন্তাও করছে না এর পিছনের ইতিহাস কী?

হ্যাঁ, রাজা-বাদশারা "ভোগ" করেছেন, জমিদারেরা "ভোগ" করেছেন। আর অতি চটে গেলে আমি হয়তো বলবো, ব্রিটিশরাও "ভোগ" করেছেন। মানছি তো...

তাই বৎস, ব্লেইম গেইম আর কত! বিয়েটা এবার করেই ফেলো। পকেট ভর্তি হতে চল্লিশ হয়ে যাবে নতুবা ড্রিম গার্ল প্রজেক্ট হাতছাড়া হয়ে যাবে। আর না হয় আপনি কেশশূন্যতায় ভূগবেন।

এক সেকেন্ড, স্মার্টফোনে ডেটা আছে? তাহলে ইউটিউবে সার্চ দিন "টাকলা"।

তাছাড়া আপনি না বিয়ে করলে তো বিয়ের দর্শনের দরজা-ই আর খুলবে না। ঠিক যেমনটা, "তোমার ছেলে উঠলে গো মা রাত পোহাবে তবে"।

(Please! Don't take it any other way. I got a mother too. And she is a woman. And I know how to respect a woman. But the idea you are trying to implement in this society can be horrific. Thanks.)

ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৫৪
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×