somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অব্যক্ত ভালোবাসা-পর্ব-১০

০৭ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশ সম্প্রতি মেস ছেড়ে হলে উঠেছে । হলে উঠার আগে ক্যাম্পাসে পদচারনা বেশি ছিল। প্রতিটি হলে গিয়ে তার পরিচিত জনের খোঁজ খবর নেয়া ছিল তার নৈমিত্তিক ঘটনা। হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে একটা হলের কার্যক্রমের সাথে অভ্যস্ত হয়ে অন্যান্য হলে বেশি যাওয়া না হলেও ক্যাম্পাসে নিয়মিত আড্ডা চলে রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের সাথে। মাঝে মাঝে কেন্দ্রীয় প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে মধুর ক্যান্টিনে সিনিয়র নেতাদের সাথে মতবিনিময় ও দেশ সেবার প্রথম পাঠ গ্রহণ চলতে থাকে । এর সাথে টিএসসি, চারুকলা ও পাবলিক লাইব্রেরী চত্বরে সাহিত্য সাংস্কৃতিক আড্ডা চলতে থাকে। শিল্পকলায় নাটক দেখার পাশাপাশি বলাকা সিনেমা হলের আর্ট ফ্লিম দেখতে বাদ দেয় না আকাশ। সামাজিক কাজের অংশ হিসেবে এলাকার বিভিন্ন সংগঠনের সাথে ছাত্র কল্যান পরিষদে যোগ দেন।

এরই মধ্যে এলাকার এমপি’র সাথে আকাশে ভালো একটা রাজনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়। এমপি মহোদয় আকাশকে ফোন দিয়ে ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন আবার সময় সুযোগ হলে আকাশ তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক সফরে এলাকায় যান। এই ভাবে দেশ প্রেমের মর্যাদা রাখতে দেশের সেবা করার বিভিন্ন উাপায় খুঁজতে থাকে। প্রচলিত রাজনীতিতে দেখা যাচ্ছে বাম হাত দিয়ে আয় করে ডান হাত দিয়ে খরচ করে। আকাশের বাম হাত বন্ধ তাই ডান হাত দিয়ে পর্যাপ্ত খরচ করার সুযোগ না থাকায় প্রচলিত রাজনৈতিক দৌড়ে নামবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু দেশের জন্য কাজ করার জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে সুস্থধারার রাজনীতি ফিরিয়ে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যায়। তাইতো পড়ালেখা কম করলেও লাইনচ্যূত হয়নি আকাশ। নিয়মিত ক্লাশে হাজিরা দেয়া, শিক্ষকের প্রশ্নের জবাব দেয়া, বিজ্ঞানের ব্যবহারিক বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা তাকে অনন্য ছাত্র হিসেবে ডিপার্টমেন্টের সবাই মূল্যায়ন করে। মুখস্ত করে ভালো ফলাফলের চেষ্টা না করলেও প্রতিটি বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকায় সহপাঠী এবং শিক্ষকগণ আকাশকে মেধাবী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে কুন্ঠা বোধ করেনি। সৃজনশীল কথা ও কাজের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গনেও আকাশের গ্রহণ যোগ্যতা ভালো।

ইশরাতকে ভুলে থাকার জন্য এতা কর্মতৎপড়তা। তারপরও তাকে ভুলে থাকা যায় না কারণ তাকে আকাশের হ্রদয়ে স্থান দেয়া হয়েছে। জীবন চালানোর জন্য আকাশ দুই একটা টিউশনী করে। নানামুখী সৃজনশীল কাজের সাথে জড়িত থাকার কারনে টিউশনীতে বেশি সময় দেয়া হয়নি বা টিউশনী করে বেশি অর্থশালী হওয়ার চেষ্ট করে নি। আকাশের অর্থের প্রতি কোন লোভ নেই। চাইলেতো রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অনেক অর্থ আয় করার সুযোগ আছে। অর্থ সকল অনর্থের মূল এই নীতিতে বিশ্বাস করে আকাশ অর্থকে গুরুত্ব কম দিয়ে সৃজনশীল শিক্ষাকে গুরুত্ব বেশি দেয়। এ নিয়ে বন্ধুদের সাথে নিয়মিত বাকযুদ্ধ হয়। এর একটা ফলাফল আকাশের জীবনে পেয়েছে। ইশরাতকে মনের কথা খুলে না বলার এটা অন্যতম একটা কারণ। এখনকার মেয়েরা প্রেম করে ছেলেদের মানি ব্যাগের স্বাস্থ্য দেখে ছেলের মেধা বা বংশগৌরব দেখে নয়।

আকাশ বন্ধুবৎসল । বন্ধুদের সান্যিধ্যে তার প্রাণ সঞ্চার হয়। বিভিন্ন ভাবে আকাশ তার বন্ধদের সহযোগিতা করে। কাউকে বুদ্ধি/পরামর্শ দিয়ে, কাউকে টাকা ধার দিয়ে, কাউকে হোস্টেলে উঠতে সহযোগিতা করে, ডিপার্টমেন্টের হেডকে বলে অনয়িমিত শিক্ষার্থীর পরীক্ষার সুযোগ করে দেয়া। ইতিমধ্যে আকাশের নিকট খবর আসে ইশরাত উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় ভর্তি হয়েছে। এলাকার ছেলে হিসেবে পরামর্শের জন্য আকাশের সাথে ইশরাত যোগাযোগ করতে পারতো কিন্তু তা করে নি। আকাশ তাতে কিঞ্চিত ব্যথিত হলেও তাকে হ্রদয় থেকে দূরে ঠেলে দেয় নি। তার খোজখবর নিতে থাকে এবং সম্ভাব্য কয়েকটা যায়গায় গিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু নিশ্চিত তথ্য না থাকায় এবং আকাশের মধ্যে জড়তা থাকার কারনে চূড়ান্ত যোগাযোগ হয়ে ওঠেনি। তবে একদিন টিউশনি থেকে ফেরার পথে আজিমপুর কোলনির মাঠের পাশে রাস্তায় ইশরাতের সাথে আকাশের দেখা হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১:১৪
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×