চারিদিকে ঘন সবুজের সমারহ ,আর নানা রংবেরঙের ফুলের সৌন্দর্য ছেয়ে আছে সাথে সূর্যের সোনালী আলোকিত হয়ে আছে সারা সুইডেন।আকাশে নানা প্রজাতির পাখির কলকাকলি লেকগুলিতে হাসা- হাসিদের জলকেলি। শীতের দেশ হিসাবে সুইডেনের এই সময়টা খুবই সুন্দর সময়, ভালোলাগার সময় ।কিন্ত কয়েকদিন ধরেই কিছুই ভালো লাগছে না, কোন কিছুতেই আনন্দ পাচ্ছি না, শুধু মনে হয় কি যেন নেই।
প্রতিবছর এই সময়ে সামার জব নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ও এক, দুই সপ্তাহ সুইডেনের ভিতরে , আশে, পাশের দেশে ঘুরে সময়টা ব্যাস্তই কেটে যায়। এছাড়া প্রতি উইকএন্ডে হয় দাওয়াত খাওয়াতে হয় না খেতে হয় , ষ্টুডেন্টফেষ্ট, গ্রিলফেষ্ট , বিয়ের ফেষ্ট তো থাকেই সাথে প্রতি সামারে আমাদের একটা সামারক্যাম্প করা হয় তিন,চার বা সাত দিনের জন্য এটা সুইডেনের ভিতরেই হয়।যদিও খুবই বিরক্ত লাগত যেতে ইচ্ছা না থাকলেও বাধ্য হয়েই যেতে হত। এবার এ সবের কিছুই হচ্ছে না, করোনার জন্য জব নেইনি, না পারছি কোথাও যেতে বাসায় বসে বসে টায়ার্ড হয়ে যাচ্ছি।
এখানে আসার পর যে কাজটাতে আমি সব চেয়ে বেশী আনন্দ পেয়েছি সেটা বরর্শি দিয়ে মাছ ধরা। প্রতিবার সামারে একবার বা দুইবার যাওয়া হয় ।এটা লেকের পারে বসে পিকনিক করাটাই আসল উদ্দেশ্য থাকে সাথে মাছ ধরা হয়।
গত সপ্তাহে বাসার সবাই মিলে গিয়েছিলাম , অনেক গুলো মাছ পেয়েছি , খেতে তেমন টেষ্টি না তবে ধরতে খুব আনন্দ লাগে , পানি এত স্বচ্ছ নীচের সবই দেখা যায়, ছিপে আটা গেঁথে ফেলার সাথে সাথে অনেকগুলো মাছ একসাথে এসে কার আগে কে ধরবে কারাকারি শুরু করে দেখতে খুবই মজা লাগে।
আমরা এটাকে পুটিঁ মাছইবলি এখানে এটার নাম মটফিস্ক ।
কভিড -১৯ করোনার শুরুতেই সুইডেনের গা-ছাড়া ভাব দেখেও কোন ভয় বা টেনশন লাগেনি,মৃত্যু আসলে তো মরতেই হবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবনা এটা বিস্বাস আছে।
দেশকে খুব ভালোবাসি সেটা দাবী করবো না, কখনো না। তবু যখনই দেশের ভালো কোন খবর পাই আমি আমি আনন্দে আত্বহারা হই, খারাপ খবরে ব্যাথিত হই।
কিছু কিছু ব্লগার বিদেশে থেকেও দেশ নিয়ে অনেক ভাবেন, বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে উনারা উনাদের চিন্তা ভাবনাগুলো লিখেন। উনাদের লিখা পড়ে দেশ সম্পর্কে অনেককিছু জানতে পারি আমার কাছে এটা ভালো লাগে।
আমি ছোট মানুষ ছোট মাথা তেমন কিছু জানি না, উনাদের মত চিন্তাও কখনো আসে না কিন্ত করোনার শুরু থেকেই নিজের জন্য একবারও মনে কোন চিন্তা আসেনি, দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য চিন্তা হত এত এত মানুষ, দেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থা ভালো না , হাজার হাজার মানুষের পরিবার চলে দিনের উপার্জন দিয়ে - এদের কি হবে !!
আমি অতি নগন্য একজন আমি চিন্তা করেই বা কি হবে আর কিবা করতে পারবো।তবু কেন যেন দেশের জন্য খুব মন খারাপ হয়।সুইডেনে
আক্রন্তের সংখ্যা যদিও বাড়ছে , তবে মৃত্যুর সংখ্যা ও ইনটেনসিভ রোগীর সংখ্যা কমে এসেছে কিছুটা। কিন্ত বাংলাদেশে দিনে দিনে করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে সামনে হয়ত আরো খারাপ সময় আসছে। আমাদের আত্বীয় স্বজনদের কয়েকজন করোনা পেয়েছে , আলহামদুল্লিলাহ! উনারা অল্পতেই সেরে উঠেছে
করোনার ভ্যাকসিনের জন্য আমাদের আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতেই হবে , নিজেদের সচেতনতাই আমাদের রক্ষা করতে পারে ।ফিজিক্যাল ডিসটেন্স মেনে চলার ও ঘন ঘন হাত হাত ধোয়ার বিকল্প নেই। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৮