দেলোতন নেছা, গ্রামঃ ডগ্রী বাজার, পূর্ব কান্দি, উপজেলাঃ নড়িয়া, জেলাঃ শরীয়তপুর। ছেলে জামাল দুই সন্তান রেখে পরলোকগমন করছে, ছেলের বউ দুই সন্তানকে তার কাছে রেখে চলে গেছে। কিন্তু তারই বা কি সাধ্য আছে ছেলের দুই সন্তানকে মানুষ করে তোলার। মাত্র ৪ শতাংশ জমির উপর একটা বাড়ী ছাড়া আর কিছুই নেই তার।
কোন উপায় না পেয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাওয়া শুরু করেছে, সারাদিন যা পায় তাই দিয়ে দুই নাতী-নাতনী কে নিয়ে বেঁচে আছে। দেখলাম ঠিকমত হাঁটতেও পারছে না, আর কথাও স্পষ্ট না।
কাছে এনে বসালাম, জানতে চাইলাম বিস্তারিত। একপর্যায় জানতে চাইলাম আপনি বয়স্ক ভাতা বা অন্যান্য সরকারী সুযোগ সুবিধা পান না? উত্তরে জানালেন- তার নাম নিয়েছিল কিন্তু পরে সে জানতে পেরেছে তার নামে নাকি অন্য কেউ বয়স্ক ভাতা নিয়ে যায়! চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিল সে নাকি আশ্বাস দিয়েছে সামনে একটা ব্যবস্থা করে দেবে। কিন্তু কবে??
আমার প্রশ্ন হলো আমাদের দেশে জনপ্রতিনিধিরা কি শুধু নিজের ও নিজের পরিবার, সন্তান-সন্ততির জন্য আরাম-আয়েশের ব্যবস্থা করার জন্যই জনপ্রতিনিধি হতে আসে? এরা কি জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব সম্পর্কে একটুও অবগত আছে? আমার সন্দেহ আছে।।
একটা এলাকায় বসবাসরত অসচ্ছল, অসহায় মানুষগুলোর সরকার হতে পাওয়ানাটুকু সঠিকভাবে তাদের কাছে পৌছে দেয়া কি মেম্বার-চেয়ারম্যানদের দায়িত্বের মধ্যে পরে না??
এমন দেলোতন নেছা সারাদেশে অনেক আছে যারা অসচ্ছল, অসহায় হিসেবে নিজের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে দিনের পর দিন। আর এদের নাম ব্যবহার করে বাড়িতে বড় বড় দালান-কোঠা করছে নামধারী জনপ্রতিনিধিরা।
যাইহোক, এদের নিয়ে আবার বেশী কিছু বলাটাও বিপদজনক, কেননা এরা এখন জনগণের ক্ষমতার চেয়ে বড় বড় নেতাদের সান্যিধ্যকে বেশী শক্তিশালী মনে করে।
অপেক্ষায় থাকি, হয়তো একসময় জনবান্ধব জনপ্রতিনিধিদের দেখা মিলবে।।
আসুন আপাতত এদের জন্য আমরা নিজের জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব করার চেষ্টা করি।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:০৪