বাঙ্গলার (বি.দ্র.: এখানে বাঙ্গলা বলতে পূর্ববঙ্গ+পশ্চিমবঙ্গ+ত্রিপুরা+আসামের কিয়দংশকে বুঝানো হয়েছে) রাজধানীর পতন, বাঙ্গলা ভাগ ও হিন্দী ও উর্দু ভাষার ভাষিক আধিপত্যবাদের কবলে অনুবর্তন-এই সবের কারণে বিংশ শতাব্দি থেকে বাংলা ভাষার অবনমনের সূচনা হয়। বাংলা ভাষার অবনমনের সূত্রপাত হয় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময়। সে সময় আন্দোলনটির চরিত্র ছিলো একাধারে সাম্প্রদায়িক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন যদিও ভাষা আন্দোলন ছিলো না, এই আন্দোলনটিই পরবর্তীকালে নানান রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রনোদণা যোগায়। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের বিরক্তি থেকে ইংরেজগণ ১৯১১ সালে ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ার রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লীতে স্থানান্তর করে। ফলে হিন্দুস্থানী বুলির উন্নয়নে হাওয়া লাগে। এতোদিন সমৃদ্ধ ভাষা হিন্দুস্থানী বাংলা ভাষার সমান তালে ছিলো। কিন্তু রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা ছাড়া এতোদিন যে হিন্দুস্থানী ভাষা ছিলো অপাংক্তেয়, তা নতুন রাজধানীর কল্যাণে সমৃদ্ধ হতে থাকে। দৃষ্টপটে আবির্ভূত হয় উর্দুর ভগ্নী ভাষা হিন্দী ভাষা। সেই হিন্দী ভাষার পালে যে হাওয়া লেগেছে, সে হাওয়ায় গতিপ্রাপ্ত হয়ে হিন্দী বর্তমানে সর্বভারতীয় ভাষায় রূপ নিচ্ছে। বর্তমানে হিন্দী একটি আধিপত্যবাদী ভাষায় পরিণত হয়ে, অপরাপর ভাষার উপর মর্যাদা ও কার্যকারিতায় প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। আর বাংলা ভাষা এখন বিভাজিত বাঙ্গলায় আরবি, ইংরেজি ও হিন্দী ভাষার প্রভাব বলয়ে অনুবর্তিত হয়ে গঠন, মর্যাদা ও প্রায়োগিকতায় অধ:পতিত হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:৫৯