somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সরকারি কর্মচারিদের কাগজের দাবি ছাড়া কর্মবিরতি ফৌজদারি শাস্তিযোগ্য হওয়া উচিত

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বহুদিন আগে রেলওয়ের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিলো। রেলওয়েতে কর্মরত পিতা ও পূত্রের ছবি। দুজন দুটো ট্রেনে উল্টাদিকে যাচ্ছিলেন। পিতা ও পূত্রের ছবিটা মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিলো। একই পোষাকে দুজন। প্রশংসায় ভেসেছিলেন তারা। তবে এ ছবিটার পেছনে একটা গল্প আছে। সেটা জানতে পারলে মানুষের কাছে ছবিটা কর্মস্থলে পিতা পূত্রের মিলন নয় একটা প্রতিষ্ঠানে বংশ পরম্পরায় কীভাবে চাকরি করছে তার একটা দলীল হিসেবে সাব্যস্থ হতো। সেটা কীভাবে!

রেলওয়েতে ১৪ গ্রেড থেকে ২০ গ্রেড পর্যন্ত একটা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখেছিলাম। সেখানে প্রথমেই এতিম বা প্রতিবন্ধীদের ১০ ভাগ কোটা দিতে হয়। বাকী ৯০ ভাগের ৪০ ভাগ পোষ্য কোটা। তারপর ছিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটা ৩০ ভাগ। আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্য কোটা ১০ ভাগ, মহিলাদের জন্য কোটা ১৫ ভাগ, উপজাতি ৫ ভাগ।

নিয়োগটা ছিল ৩য় বুকিং সহকারীর। পদসংখ্যা ছিল ১১৭ টি। চলুন জেনে আসি তারা কীভাবে এই ১১৭ জনকে নিয়োগ দিয়েছে। প্রথমে এতিম/ প্রতিবন্ধী কোটায় ১১.৭০ জন। পোষ্য কোটায় ৪২.১৫ জন। মুক্তিযোদ্ধা/ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ১৮.৯৮ জন। আনসার ভিডিপির সদস্য ৬.৩১ জন। মহিলা ৯.৩৭ জন। উপজাতি ৩.১৩ জন। জেলা ভিত্তিক সাধারণ কোটায় ৪০ জন। এই সাধারণ কোটাটাও জেলার জনসংখ্যা অনুযায়ী বিভক্ত। বরিশাল জেলায় প্রাপ্য হয়েছিল পয়েন্ট ৪৮ জন। অর্ধেক জনেরও কম। বরিশালের দশজন পরীক্ষায় ১০০ নম্বর পেলেও নিয়োগ পেয়েছে আধা জন। অন্য জেলায় পঞ্চাশ পেলেও নিয়োগ পাবে। এজন্য এই জেলার সাধারণ কোটাটাকেও মেধার কোটা বলা যায়না।

এই তালিকায় সবার শীর্ষে পোষ্য কোটায় নিয়োগ পেয়েছে ৪২ জনেরও বেশি। মাথা নষ্ট। এখন এই রেলওয়েতে বাপ চাকরি করছে। সন্তান চাকরি করছে। নাতি চাকরি করছে। লে হালুয়া।

স্বাধীনতার পর থেকে এই রকম নিয়োগে রেলওয়েতে একটা গোষ্ঠি তৈরি হয়েছে। এরা খুব শক্তিশালি। মেধার জোর নেই। সেবার মান নেই। তবে গোষ্ঠিগত ঐক্য রয়েছে। তারা রেলওয়ে অচল করে দিতে পারে। সেটাই তারা করেছে। ২০ কোটি মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছে। কত বড় সাহস হলে একটা রাষ্ট্রীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে তারা শাটডাউন করে দিতে পারে। কারণ একটাই। এটাকে তারা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান মনে করছেনা। নিজেদের পৈত্রিক সম্পদ মনে করছে। কারণ চাকরিটা তারা পৈত্রিকভাবেই পেয়েছে।

যতদূর জানি, বাংলাদেশ রেলওয়েতে ক্যাডার বহির্ভূত ৬৪৮টি পদ রয়েছে। ৮ম থেকে ২০ তম গ্রেড পর্যন্ত। এতে বংশানুক্রমিকেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই পোষ্য কোটা বণ্টনের ফলে সমাজের সুবিধা বঞ্চিত শ্রেণির তথা দিনমজুর, শ্রমিক, রিকশাচালক, কৃষকের সরকারি চাকরিপ্রত্যাশী সন্তানরা রেলওয়েতে চাকরি পায়নি। তাদের প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

রেলওয়ের এখন যারা আন্দোলন করছে তারা ম্যনেজমেন্টের কেউ নন। ম্যানেজমেন্ট কাজ বন্ধ করলে কিছুই আসতো যেতোনা। আন্দোলনকারীদের বাদ দিয়ে অন্য ডিপার্টমেন্ট থেকেও লোক নিয়েও চালানো সম্ভব। তবে চালক ছাড়া ট্রেন চলবেনা। এই সুযোগটাই তারা গ্রহণ করেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ট্রেন চলাচল।

সরকারি কর্মচারিদের কাগজের দাবি ছাড়া কর্মবিরতিকে ফৌজদারি শাস্তির আওতায় আনা যেতে পারে। সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট হওয়া উচিত। যাদের টাকায় রক্ত মাংস তাদেরকে যারা ভোগান্তিতে ফেলে এরা কী সেবা দেয় তা সহজেই বুঝা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৩১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সরু চিকেন নেক করিডর সমস্যা এবং সমাধান

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭



সরু চিকেন নেক করিডরের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্তের ব্যাপারে ভাবছে ভারত

ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত বাংলাদেশের রেল সংযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাকীত্ব: আত্মার ঘুণপোকা ও আধুনিক সমাজের অদৃশ্য মহামারী

লিখেছেন মি. বিকেল, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৫



‘একাকীত্ব’ সাধারণ বিষয় নয়। একা থাকা মানে অজস্র চিন্তার স্রোত মাথায় প্রবাহিত হওয়া। একা থাকা মানে নিজের সাথে থাকা। নিজের চিন্তা ও স্মৃতির সাথে একাকীত্ব আমাদের বেশি করে পরিচয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠকানোটাই ভাল শিখেছি আমরা

লিখেছেন ফেনা, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৭



এই বিশাল মহাকর্ষীয় বস্তু সবকিছু নিজের দিকে টেনে নেয়—এমনকি আলোও পালাতে পারে না। কিন্তু কৃষ্ণ গহ্বরের ভিতরে কী ঘটে? সেখানে সময় ও স্থান কেমন আচরণ করে? এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরব বিশ্বে নারীরা অপমানিত? আমার অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬



বহুদিন ধরে একটি কথা শুনে আসছি—“নারীরা আরব দেশে অসম্মানিত অবস্থায় থাকে।”
কিন্তু আমি আরব দেশে গিয়েছি, থেকেছি, এবং প্রায় দুই মাস ধরে একাধিক জেলায় ঘুরেছি।
সত্যি বলছি—আমি সেখানে কোথাও নারীদের অসম্মানিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় দাবিদাওয়া নিষ্পত্তি সংস্থা : অরাজকতার পালে নতুন হাওয়া!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:০৩


বাংলাদেশে আজকাল দাবি না জানালে কেউ আর মানুষ থাকে না—ছাত্র, শিক্ষক, গৃহিণী, পুলিশ, পিয়ন, কবি, কুস্তিগির, সবাই 'অধিকার' চায়। তবে অধিকার মানে এখানে মোটেই দায় বা কর্তব্য নয়, বরং ছিনিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×