মাথা নিচু করে বাস স্টোপের বেঞ্চে বসে আছে জেনি। চোখে-মুখে ব্যর্থতার ছাঁপ লেগে আছে। যেন মনের চাপা কষ্ট মুখ-দর্পনে অনিচ্ছা স্বত্বেও প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। হাজারটা চেষ্টা করেও লুকোতে পারছে না। সারাদিন হন্যে হয়ে জীবিকার অন্বেষনে ছুটলেও কোন উপায় বের করতে পারেনি। প্রতিদিন একটার পর একটা ইন্টারভিউ এ অংশ নিয়েও কোন জব জুটাতে পারেনি। সামান্য বেতনের একটি চাকুরীও পায়নি।
ক্লান্ত শরীরটা বেঞ্চের হেলানীতে এলিয়ে দিয়ে আধো আধো ঘুম চলে আসে চোখের কোণে। হুইসেলের শব্দে হকচকিয়ে উঠে তড়িঘড়ি করে বাসে উঠে পড়ে। পিছনের একটি সিটে বসে জানালায় গাঁ এলিয়ে ভাবতে থাকে। ‘‘কী হচ্ছে এসব? কী ঘটছে এই ছোট্ট জীবনে? আগ-পিছ কিছুই তো মিলছে না। জীবনটা যুদ্ধ ক্ষেত্র না হয়ে স্বর্গোদ্যানও তো হতে পারতো। কিন্তু সুখ হারিয়ে দুঃখ নদীর বাধ ভেঙ্গে গেলো কেন?’’ এরকম নানানটা প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগলো। মস্তিষ্কের কোণে চিনচিন করে সুঁচের ফোঁড়া ফুটতে লাগলো।
বাস থেকে নেমে মলিন মুখে বাসায় ফিরলো জেনি। সবকিছু হারিয়ে এই বাসাটাই তার একমাত্র সম্বল। সেটাও আবার সিসি লোনের ঋণের টাকায় জপ্ত প্রায়। যেকোন সময় বাবার দেয়া উপহারের বাসাটি ব্যাংকের লোকেরা জপ্ত করে নিতে পারে। বিয়ের পর স্বামীর বিজনেস বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নেয়া হয়েছিলো সিসি লোন। স্বামীও নেই লোনের টাকা শোধ করার সামর্থ্যও নেই। আছে শুধু চিন্তায় চিন্তায় শুকে যাওয়া এক মলিন মুখো যোদ্ধা।
পর্ব নং ০১
.......................................
মহীয়সী নারী / সাইফ
২৫-১১-১৯
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২৪