অনেকেই কাসেম সোলেইমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছেন । আমিও শোকাহত । যেহেতু আমি বাতাসের উল্টো দিকে চলতে পছন্দ করি তাই ভাবলাম এই হত্যাকান্ড নিয়ে দু'এক কথা বলি । শোকাশত সোলেমান ভক্তগন আপনারা কি জানেন, ইরাকের ধ্বংসের পেছনে এই সোলেইমানের কলকাঠির খেলা ছিলো । ইরাক ধ্বংসের মূল কারিগর বুশ,মালিকি আর এই সোলেইমানির মধ্যে অতীতে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদান হয়েছে । ইরাক যে আজ ধ্বংস স্তুপ ছাড়া আর কিছুই না সেটা ছিলো ইরানের এক কঠিন প্রতিশোধের গল্প।
একবার হিসাব করুণ তো কত হাজার,লাখ,কোটি নারী পুরুষ, শিশু নিহত হয়েছিলো সেই অসম যুদ্ধে ? অথচ ইরান যদি সেই সময় একটিবার ইরাকের পক্ষ নিয়ে শুধুমাত্র একটিবার ইরাক আক্রমনের বিরোধিতা করে কথা বলতো,তথাকথিত ন্যাটো আক্রমণের পাল্টা হুমকি দিতো তাহলে আর আমেরিকা ও তার মিত্ররা কিছুতেই ইরাক আক্রমনের সাহস করতে না। বাধ্য হয়ে পিছিয়ে যেতো । বেচে যেতো ইরাক,বেচে যেতো লাখ প্রাণ । কিন্তু আমেরিকার মদদ পুষ্ট মি: কাসেম সোলেইমান গং"রা মুখ বুঝে ছিলেন । ভেতরে ভেতরে তারা খেলছিলেন এক নিরব খেলা। কারণ ইরানের নেতারা মনে প্রাণে চাচ্ছিলেন সাদ্দাম হোসেনকে সরিয়ে ইরাককে ধ্বংস করে ইরানে ইরাকের চালানো জীবাণু হামলার প্রতিশোধ নিতে । আমেরিকা তাদের সেই কাজটিই সহজ করে দিয়েছিল।
ইরাক-ইরান সেই সৃষ্টির শুরু থেকেই দুই ভাইয়ের মতো একটিকে ছাড়া অন্যটি অচল। ইরান এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে শক্রু কিংবা বন্ধু হিসাবে তাদের পাশে ইরাকের শক্ত অবস্থান কতোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো । ভবিষ্যতে এ অভাব আরো গভীর ভাবে অনুভূত হবে ।
লেবানন,সিরিয়াও আজ ধ্বংস প্রায়, হাজার হাজার নারী, পুরুষ, মারা গেছে উদ্বাস্তু হয়েছে লাখ লাখ মানুষ তার জন্য এই সোলাইমান ও কম বেশি দায়ী । কারণ তাকে তৈরিই করা হয়েছিল মধ্য পাচ্যের শক্তিশালী রাস্ট্রলোকে ধ্বংস করে ফেলার জন্য । হ্যাঁ, তিনিও ইরানকে নিরাপদ রাখার জন্য প্রতিবেশিদের ধ্বংস করার জন্য যা যা করার তার সব কিছু করে গেছেন অতি নিক্ষুত ভাবে। কিন্তু হায় ! শেষ পর্যণ্ত নিজেকেই রক্ষা করতে পারেন নাই। এটাই হচ্ছে নিয়তি। যেমন কর্ম তেমন ফল । এ কথাটা বললে কি খুব ভুল হবে ?
ইরান যদি এই হত্যা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করে তাহলে হয়তো ইরাকের মতোই হবে বর্তমান ইরানের অবস্থা ।তাই উত্তেজিত না হয়ে ধীরে আগানো হবে বুদ্ধি মানের কাজ। কিন্তু মাথা মোটা রাষ্ট্রটি ইরান বুঝছে না যে তাকে উত্তেজিত করে দমন করার সকল প্রস্তুতি নিয়েই সোলেমানকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ মূল শয়তান তো বহু আগ থেকেই ইসরাইলে বসে গুটি নাড়ছে। ইরান কে ধ্বংস করে ফেলতে পারলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকা আর ইসরাইল হাতে চলে আসবে এবং তখন তারাই রাজত্ব করবে । বুঝলেন হিসাবটা ? তাই কেউই বেশি উত্তেজিত হবে না । নিজেকে কন্ট্রোল করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:২৭