somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিচ্ছবি

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


লেখক : সৌরভ সাফওয়ান
সময়ে অসময়ে নির্দ্বিধায় অগণিত চরিত্র ধারন করেছি এই রঙ্গমঞ্চে। যখন যে চরিত্র ধারন করি তখন সেই চরিত্রে ডুবিয়ে রাখি তাদের, তারা রঙ্গমঞ্চে মেতে থাকে অবচেতন হয়ে। দর্শকের বেঞ্চে বসে মানুষদের থেকেই মানুষ দেখে আমার এই চরিত্র গুলো। কারো কাছে ভালো লাগে, বেশ উপভোগ করে, আবার কারো কাছে মন্দ। কেউ কেউ চরিত্র গুলোকে নিজের মাঝে ধারন করার চেষ্টা করে, আবার কেউ ঘৃণা করে যাওয়ার চেষ্টা করে আজীবন। বহুরূপী মানুষের বহুরূপী চরিত্র এই মঞ্চে।

চরিত্র, মানে সময় সাপেক্ষে কথা ও কর্ম অর্থাৎ বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা ও কর্মকাণ্ড।

দর্শক ও দর্শকের বেঞ্চ, মানে যারা কর্মকাণ্ড গুলোর সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িত অথবা যারা দেখে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন কর্মকাণ্ড।

আর আমি, মানে কে! সেটা না হয় পরেই বলি।

নিজের কাছে নিজেই সেরা, পরিপূর্ণ এক মানুষ,
আমি মানেই আমি, নিজে একাই একশ, অন্য কারো ধার ধারি না। আমি যেটা বলবো সেটাই সত্যি, আমার কথার সাথে কারো কথার পাত্তাই পায় না। আমার থেকে বেশি বুদ্ধিমান কেউ নেই।

সব সময় অন্যের কাছে নিজের প্রাধান্য দেয়ার প্রবণতা থাকে। নিজে কোন অন্যায় করলেও সেটা অন্যায় বলে স্বীকার করতে নারাজ, সেটাকে ন্যায় করার জন্য অসংখ্য যুক্তি দাড় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি। যুক্তিতে ব্যর্থ হলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে থাকি। আর অন্য কেউ তিল পরিমাণ অন্যায় করলে তাল বানানোর চেষ্টায় থাকি। অন্যকে ক্ষমা করতে একেবারেই নারাজ।

মাঝে মধ্যে কয়েকজনের সাথে খোসগল্পের আসর বসাই। খোসগল্পে বসলে উঠতেই মন চায় না। কারন এই আসরের আলোচ্য বিষয় থাকে অন্যের মন্দ সমালোচনা। সমালোচনা করতে বেশ ভালোই লাগে। ইচ্ছে করে দিবা রাত্রি সমালোচনার আসরেই কাটিয়ে দেই। অন্যের সাথে দ্বন্দ্ব লাগাতে কান কথা বেশ ভালোই পারি।
কারো ভালো দেখলে জ্বলে পুড়ে যাই, ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগে থাকি। অন্যের সম্পদের দিকে লালসার দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি, আর তা আত্মসাৎ তৃপ্তি পাই। আরো হাজারো খারাপ কর্মকাণ্ড রয়েছে যার ন্যায় বৈধতা নিজেই দেই।

আপনার সাথে আমার কর্মকাণ্ড গুলো একটু মিলিয়ে দেখুন, আমাদের অনেক খানি মিল। আমি, আসলে আমি মানুষ নয়। সত্যি বলছি আমি মানুষ নয়। আমি, মানেই আপনি। আপনার ভেতর আমার পরিচয় লুকিয়ে আছে। আপনার মাঝে ফুটে উঠে আমার প্রতিচ্ছবি।

আপনাকে সর্বদা ডুবিয়ে রাখি মন্দ কর্মের সাগরে। হাজারো মন্দ চরিত্র জন্ম দেই আপনার ভিতরে। ধ্বংস করে দিয়েছি আপনার বিবেককে, ধ্বংস করেছি আপনার মনুষ্যত্বকে। মাটি চাপা দিয়েছি আপনার সততাকে। ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছি আপনার আত্মসম্মান, অথচ আপনি টেরই পেলেন না।

আমারই কারনে আজ অভিশপ্ত জীবনের মাঝে সময় কাটাচ্ছেন, কিন্তু মনে হচ্ছে এটাই আসল জীবন, এখানেই সর্বজনীন সুখ। আপনার এই নরকময় জীবন আমি সৃষ্টি করেছি, আবার নরকের জীবনকে সর্বজনীন সুখ অনুভূতি টাও আমি তৈরি করেছি আপনার মাঝে। কিন্তু আপনি টের পান না।

এবার বলুন তো আমি কে?

আমি, মানে আপনার হাজারো মন্দ চরিত্র, রাগ,ক্ষোভ, হিংসে,লোভ, খারাপ কামনা বাসনা। আমার হাজারো পরিচয় রয়েছে, বেশ ভালো ভাবেই জানেন আমার সম্পর্কে।

এখনও আমাকে চিনতে পারছেন না? আচ্ছা আরেকটু খোলাসা করেই বলি, আপনার অন্তরে কুমন্ত্রণাদাতা, আপনার রগে রগে চলি আমি। আমি আপনার সব থেকে বড় শত্রু, আপনার প্রকাশ্য শত্রু, কিন্তু আপনি আমাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নেন!

আপনাকে নিজের সম্পর্কে এত কিছু জানিয়ে দিলাম অথচ আমার মনে বিন্দু পরিমাণ ভয় নেই। বিশ্বাস করুন একটুও ভয় পাচ্ছি না। কারন হাজার বার বললেও ঠিকই আমার কুমন্ত্রণার ফাঁদে পা দিবেন।

আমি আবারো সময়ে অসময়ে নির্দ্বিধায় অগণিত চরিত্র ধারন করবো এই রঙ্গমঞ্চে আপনার মাঝে। বিষাক্ত কীটপতঙ্গের বিষের থেকেও বিষাক্ত করে দেব আপনার কর্মকাণ্ড, নর্দমার ময়লার থেকে দূর্গন্ধ করে দেব আপনার চরিত্র। নরকে ঠেলে দেব আপনার জীবন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৩০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×