somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুয়াজ্জিন

০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


লেখক : সৌরভ সাফওয়ান
আযানের মধুর ধ্বনি শুনে মুসলিম জাতি নিদ্রা ত্যাগ করে পবিত্র হয়ে নামাজ আদায় শেষে কার্জদিবস শুরু করে। যার কন্ঠে নামাজ ও কল্যানের আহ্ববান শুনি তিনিই হচ্ছেন মুযাজ্জিন। একি সুমধুর সুর! যত শুনি ততোই ভালো লাগে। পৃথিবীতে মানুষ যত সুর তৈরি করেছে এবং তৈরি করবে সব সুর আযানের সুরের চেয়ে কখনোই ঊর্ধে হবে না, আযানের সুরের সাথে অন্য কোন সুরের তুলনা করা বোকামি। এই উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন সুর দৈনিক পাঁচবার শুনতে পাই ।

মুসলিম সমাজের প্রত্যেকটা মসজিদে মুয়াজ্জিন রয়েছে, যার কাজ হচ্ছে দৈনিক পাঁচ বার আযান দেওয়া,ইকামাত দেওয়া এবং মসজিদ পরিষ্কার করা। এর জন্য তাকে বেতন বাবদ দেওয়া হয় তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা। পৃথিবীতে চলার জন্য প্রত্যেকের অর্থ সম্পদের প্রয়োজন। তেমনিভাবে মুয়াজ্জিনদেরও দুনিয়াই চলার জন্য কিছু অর্থের প্রয়োজন।

ধরুন, একজন মুয়াজ্জিন কে চার হাজার টাকা বেতন বাবদ দেওয়া হয়, হতে পারে তিনি পরিবারের বড় সন্তান, ঘরে তার অসুস্থ বাবা, মা এবং ছোট ভাই বোন। পরিবার তার উপর নির্ভরশীল। বাবার ঔষুধের খরচ, ভাই বোনের পড়ার খরচ এবং পরিবারের যাবতীয় সব খরচ তাকেই বহন করতে হয়। কিন্তু তিনি প্রতিমাসে বেতন হিসেবে পায় চার হাজার টাকা,এই যুগে একটা পরিবারের এক মাসের খরচ চার হাজার টাকা দিয়ে চালানো সম্ভব নয়।

হয়তো ভাবছেন, মুয়াজ্জিনের বেতন ছাড়াও প্রতিমাসে মিলাদ পড়িয়ে এবং যাকাত ও ফিতরা সহ আরও কিছু টাকা হাদিয়া স্বরূপ পায়। তার মাসিক বেতন সহ ওই টাকা গুলো একসাথে হিসেব করে দেখলে তেমন বেশি টাকা হয় না। কিন্তু এ নিয়ে তারা কোন আপত্তি করে না, তারা সব সময় হাসি খুশি থাকে,কারন টাকার জন্য নয়, তারা আল্লাহ ও তাঁর দ্বীনকে ভালোবেসে খুশি মনে এই কাজটি করে।

সকলের সাথে তারা সুন্দর ব্যাবহার করে, সহজ সরল ভাবে জীবন যাপন করে এবং যে যাই বলুক তারা কোন কথা বলে না,সেটা মাথা পেতে নেয়। তাদের এই সহজ সরল জীবন যাপন কে অনেকেই মনে করে তারা খুব বেশি বোকা, ক্ষমতাহীন, মাথা উঁচু করে কথা বলার মত সাহস তাদের নেই। যে ব্যাক্তি এসব মনে করে,তারাই আসল বোকা। তারা মানুষদের সম্মান ও আত্মমর্যাদা দিতে শিখেছে। আপনার পাড়ার একটি ছেলে এবং আপনার মসজিদের মুয়াজ্জিন, এদুজনের পার্থক্য বের করলে বুঝতে পারবেন কে মানুষকে সম্মান করে। পাড়ার ছেলে টি আপনাকে কখনও সালাম দেয় না, কিছু ছেলে ছাড়া অধিকাংশ আধুনিক ছেলেরা সালাম দিতে শিখেনি, তারা মনে করে সালাম দিলে আপনার কাছে তার ক্ষমতা ও আত্মমর্যাদা কমে যাবে। কিন্তু মসজিদের মুয়াজ্জিনের সাথে আপনার যতবার দেখা হয় ততোবারই আপনাকে সালাম দেয়। সালাম দেওয়ার মানে এই নয় যে, ক্ষমতাসীন ও সম্মানি ব্যাক্তি ভেবেই আপনাকে সালাম দিয়েছে। সালাম দেওয়া সুন্নত, যে সালাম দিবে তার পুণ্য বেশি।

সাধারন মানুষের চেয়ে তাদের মর্যাদা অনেক বেশি, ফজরের নামযের পর মোক্তবে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কুরআন পাঠ দান করায় এবং নামায শিক্ষা সহ ইসলামী মাসালা শিক্ষা দেয় যেগুলো মানুষের পার্থিব ও পরকালের জন্য গুরুত্বপুর্ন। এবং প্রত্যেহ মসজিদ পরিষ্কার করেন। সেই তো ভাগ্যবান ব্যাক্তি, দ্বীনি ইলেম শিক্ষা দেয়া, নামাজের জন্য দৈনিক পাঁচবান মানুষদের আহবান করা এবং আল্লাহর ঘর পরিষ্কার করার সুযোগ সবার হয়ে উঠে না। এসকল কাজ কোন ছোট কাজ নয় এবং কোন লজ্জার কাজ নয়, এটা একটা সম্মানিত কাজ, এই কাজের প্রতিদান অবশ্যই তারা পাবে, এই সম্মানিত কাজ গুলো মুয়াজ্জিনরাই করে থাকে।

তাদের আযানের সুর আল্লাহ তায়ালার আরশ পর্যন্ত পৌছায়। তারা উচ্চ মর্যাদাবান। অসম্মান করে করে কথা বলবেন না। সম্মান দিতে শিখুন, ভালোবাসতে শিখুন, নিঃসন্দেহে এর প্রতিদান আপনি পাবেন
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ২:৫১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×