somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২১ ডিসেম্বর ছিলো মরমি কবি হাসন রাজার ১৬৪ তম জন্ম বার্ষিকী

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


‘আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে’, ‘একদিন তোর
হইব রে মরণ রে হাসন রাজা’ ‘মাটির পিঞ্জিরার
মাঝে বন্দি হইয়ারে কান্দে হাসন রাজা মন মনিয়া
রে’, ‘প্রেমের বান্ধন বান্ধরে দিলের
জিঞ্জির দিয়া’, ‘রঙের বাড়ই রঙের বাড়ই রে’,
‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম রে’, ‘লোকে
বলে ঘরবাড়ি ভালানা আমার’, আগুণ লাগাইয়া দিলও
কুনে হাসন রাজার মনে,’ ‘গুড্ডি উড়াইল
মোরে, মৌলার হাতের ডুরি’, ‘আঁখি মুঞ্জিয়া
দেখ রূপ রে, সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের
রচয়িতা দেওয়ান হাসন রাজার ১৬৪তম জন্মদিন ছিলো ২১ ডিসেম্বর। ১৮৫৪ সালের
২১ ডিসেম্বর (৭ পৌষ ১২৬১) সুনামগঞ্জ
শহরের নিকটবর্তী সুরমা নদীর তীরে
লক্ষণশ্রী পরগণার তেঘরিয়া গ্রামে তিনি
জন্মগ্রহণ করেন। হাসন রাজা জমিদার পরিবারের
সন্তান। তাঁর পিতা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী
ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। হাসন রাজা তাঁর
তৃতীয় পুত্র। মাতার নাম ছিল হুরমত বিবি।
হাসনের পূর্বপুরুষের অধিবাস ছিল ভারতের
উত্তর প্রদেশের অয্যোধ্যায়। বংশ
পরম্পরায় তাঁরা হিন্দু ছিলেন। অতঃপর তাঁরা
দক্ষিণবঙ্গের যশোর জেলা হয়ে
সিলেতে এসে থিতু হন। তাঁর দাদা
বীরেন্দ্রচন্দ্র সিংহদেব মতান্তরে বাবু রায়
চৌধুরী সিলেটে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ
করেন। হাসনের দাদার মৃত্যুর পর তাঁর বাবা মাতৃ
এবং পিতৃবংশীয় সকল সম্পদের মালিক হন।
১৮৬৯ সালে তার পিতা আলি রেজার মৃত্যুর
চল্লিশ দিন পর তার বড় ভাই ওবায়দুর রেজা মারা
যান। ভাগ্যের এমন বিড়ম্বনার স্বীকার হয়ে
মাত্র ১৫ বছর বয়সে হাসন জমিদারীতে
অভিষিক্ত হন।
সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রামপাশা, লক্ষণশ্রী
আর সিলেটের একাংশ নিয়ে পাঁচ লাখ বিঘার বিশাল
অঞ্চলের জমিদার ছিলেন মরমী গীতিকবি
হাসন রাজা। পিতা ও মাতা উভয়ের কাছ থেকে
পাওয়া বিশাল জমিদারীর মালিকানা চলে আসে
কিশোর বয়সে। বেহিসাবী সম্পদ আর
ক্ষমতার দাপটে বেপরোয়া জীবন যাপনে
অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। জাগতিক লোভ
লালসা, ক্ষমতায়ন, জবরদখল করেও প্রতিপত্তি
বাড়ানোর কাজে প্রবৃত্ত ছিলেন। কিন্তু এক
সময় তার ভেতরের ভ্রান্তি ঘুচে যায়। মধ্য
পঞ্চাশে এসে তিনি ভিন্ন এক মানুষে পরিণত
হয়ে যান। তাঁর বোধ হয় যে এজগত সংসারের
সব অনাচারের মূলে আছে অতিরিক্ত সম্পদ।
কিছু দিনের জন্য অতিথি হয়ে আসা মানুষেরা
আসলে মহাশক্তির কাছে একেবারে নশ্বর।
আর এর মধ্যে খুঁজতে থাকেন সেই মহা
পরাক্রমশীলকে। সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজতে
খুঁজতে এক সময় আবিষ্কার করেন, তাঁর
নিজের মধ্যেই তাঁর বাস। হাসন রাজার গানের
মাঝেও অন্তর্নিহিত রয়েছে নশ্বর জীবন,
¯্রষ্টা এবং নিজের কৃতকর্মের প্রতি
অপরাধবোধের কথা। কে জানতো সেই
অত্যাচারী, ভোগবিলাসী জমিদারই হবেন
পরবর্তীকালের সবচেয়ে প্রজাদরদি এবং
দরবেশ জমিদার!
১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর রচিত ২০৬ টি গানের
একটি সংকলন প্রকাশিত হয়। এই সংকলনটির নাম
ছিল ‘হাসন উদাস’। এর বাইরে আরও কিছু গান
‘হাসন রাজার তিনপুরুষ’ এবং ‘আল ইসলাহ্ ’ সহ
বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হযে ছে। ধারণা
করা হয়, তাঁর অনেক গান এখনো সিলেট-
সুনামগঞ্জের লোকের মুখে মুখে
আছে এবং বহু গান বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৬ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ
করেন। সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রীতে তাঁর
মায়ের কবরের পাশে কবর দেওয়া হয়। তাঁর
এই কবরখানা তিনি মৃত্যুর পূর্বেই নিজে
প্রস্তত করেছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×