somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সুজায়েত
এক সময় পেশাদার সাংবাদিক ছিলাম। নিজেকে পত্রিকা জগতের মানুষ ভাবতে পছন্দ করি। সামহোয়্যারইনব্লগ এ ২০১২ থেকে "শামীম সুজায়েত" নামে লিখতাম। আমার সেই পুরানো একাউন্ট ফিরে পাইনি। লিখতে ভালবাসি তাই বারবার ফিরে আসি।

একটি সম্ভাব্য বিপদ এবং একজন অপরিচিতা

১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(বাস্তব গল্পটা বলার আগে দুটো কথা বলতে চাইছি। সামুতে আমি শামীম সুজায়েত নামে ২০১২ থেকে লিখছি। মাস কয়েক আগে এখানে ঢুকতে গিয়ে দেখলাম পাসওয়ার্ড রিসেট করতে বলছে। কিন্তু আমি যে ইমেইল দিয়ে একাউন্ট খুলে ছিলাম, সেটা অফিসিয়াল আইডি। নিরাপত্তা জনিত কারণে বাইরের মেইল প্রবেশ কিছু দিন হলো ব্লক করে দেয়া হয়েছে। ইমেইল আইডি চেঞ্জ করার অনুরোধ জানিয়ে গেলো পাঁচ মাস ধরে এডমিনকে অনুরোধ করে আসছি। তারা রেসপন্স করেছেন; কিন্তু কাজ হয়নি। সেখানে আমার প্রচুর লেখা ড্রাফট অবস্থায় রয়েছে। আমি এখনও আশা করি এডমিন আমার বিষয়টি বিবেচনা করবে। যাইহোক; প্রিয় প্লাটফর্মের বাইরে থাকার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে নতুন একটি একাউন্ট খুলে নিচের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। অন্তত আমার নিজের ক্ষেত্রে যে ভুলটা হয়েছে, তা যেন আর কেউ না করেন - সেটি চিন্তা করে লিখলাম।)

একটি সম্ভাব্য বিপদ এবং একজন অপরিচিতা

এমনটি হয়নি কখনও। কিংবা দু একবার হয়ে থাকলেও নিজেকে সামলে নিতে পেরেছি পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায়।

স্বভাবগত ভাবে আমি সাবধানী মানুষ। কিছুটা সচেতন। বিশেষ করে পথেঘাটে। কিন্তু আমার সেই সচেতনতা, সাবধাণতা, সতর্কতা যেন ফানুসের মত উড়ে গেলো আশ্বিনের হিমেল হাওয়ায়। শরতের শুভ্রতায়।

অফিস শেষে নিত্যদিনের নিয়মে রিক্সায় চেপে বসেছি। বিকেলের এক পশলা বৃষ্টিতে কিছুটা হলেও যেন বাতাসে ফিরে পেয়েছি নির্মলতা।

রিক্সায় যেতে যেতে চোখে মুখে লেপ্টে যাওয়া বাতাসের স্নিগ্ধতায় যেন জুড়িয়ে যাচ্ছিল প্রাণ। কাকরাইল থেকে ফকিরারপুল মোড় পর্যন্ত পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই চোখের পাপড়ি গুচ্ছ একে অপরের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছিল। তবে গাড়ির হর্ন, রিক্সার টুং টাং শব্দ, মানুষের কোলাহল হালকা হালকা কানে বাজছিল বিরতি দিয়ে দিয়ে।

ফের যখন রিক্সাটা চলতে শুরু করলো, টের পাচ্ছিলাম; দ্রুত গতিতে প্যাডেল মারতে শুরু করেছে রিক্সাওয়ালা। আমার ভেতরে বেসামাল একটা ভাব থাকলেও পড়ে যাওয়ার ভয়ে রিক্সার হুড চেপে রেখে ছিলাম। টের পাচ্ছিলাম রাজারবাগ পর্যন্ত দীর্ঘ জ্যাম এড়াতে রিক্সা চালক ছেলেটি উল্টো পথে টানতে শুরু করেছে। চোখের পাতা সামান্য ফাসা করে দেখলাম আরো কিছু রিক্সা একই ভাবে আগেই যেতে শুরু করে দিয়েছে।

ঘুমঘুম চোখে খেয়াল করলাম আমার থেকে অল্প কিছু দূরে থাকা একটি রিক্সা থেকে এক তরুণী বারবার পেছন ফিরে তাকাচ্ছে। সেদিকে দৃষ্টি স্থির হয়ে থাকলো আমার কিছু সময়। মেয়েটির মাথায় ওড়না প্যাচানো, কালো রঙের জামা, মুখে মাস্ক।
কি যেন বলতে চাইছে!

আমাকে? কি জানি!

সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অজান্তেই ফের বুজে গেলো চোখ।

ব্যস্ত সড়কে চলন্ত রিক্সায় এভাবে ঘুমিয়ে পড়া কেবল নির্বুদ্ধিতার পরিচয় নয়, নিজের জীবনকে শতভাগ মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার সামিল। কিন্তু কেনো এমনটি হলো? ঘুমের কাছে কেনো ঝুঁকিপূর্ণ পরাজয় ঘটলো আমার!

বাসায় একটি ফার্নিচার আনার চিন্তা করে আগের রাতে বউ পোলা মিলে আমরা ঘরের মাপজোক, আলাপ আলোচনা, জল্পনা কল্পনা করতে করতে রাত দেড়টা বাজিয়ে ফেলেছিলাম। ঘুমাতে ঘুমাতে ৩ টা। বিছানায় শুয়ে আমি এপাশ ওপাশ করতে করতে শেষ পর্যন্ত ভোর চারটায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাতে হলো। সকাল ৯ টায় ডেকে দিলো কল্পনা।

যাইহোক; রাজারবাগ মোড় পার হবার পরই হঠাৎ একটা ঝাঁকুনিতে আমি উল্টে পড়ে যেতে যেতে কোন রকম নিজেকে সামলে নিলাম। তিন-চার মিনিট ধরে চলতে থাকা গভীর ঘুমটা আমার ভেঙে গেলো‌। কিছু সময়ের জন্য চোখের পাতা খোলা থাকলেও
শাহাজাহানপুর পেরিয়ে ফ্লাইওভারের কাছাকাছি আসতেই রিক্সাটা ফের যখন জ্যামে দাঁড়িয়ে পড়লো, আমি আবার চোখ বন্ধ করলাম। এবং খিলগাঁও রেলগেট পর্যন্ত পুরোটা পথ এক প্রকার ঘুমিয়ে ছিলাম। কিছুই টের পাই নি। কেবল থেকে থেকে ডানে বায়ে আমার মাথা কাত হয়ে রিক্সার হুডের বাইরে চলে যাচ্ছিল। আবার নড়েচড়ে বসতে না বসতেই ঘুমিয়ে যাচ্ছিলাম।

খিলগাঁও রেল ক্রসিং এর জন্য বেশ কিছু সময় সবকিছু সেখানে থমকে ছিল। এই সুযোগে ঘুমটা আমার মাঘ মাসের শীতের মত জেঁকে বসেছিল‌। কিন্তু ঘুমের মধ্যে টের পেলাম রিক্সার হুড ধরে কে যেন নাড়া দিয়ে যাচ্ছে অনাবরত। চোখ মেলে তাকালাম। সেই মেয়েটি। একজন অপরিচিতা। এক দশক

আমার দিকে তাকিয়ে থেকে সে বললো, "এভাবে রিক্সায় ঘুমাচ্ছেন কেনো ! সেই ফকিরাপুল থেকে আমি আপনাকে খেয়াল করতে করতে আসছি। হাত নেড়ে রিক্সাওয়ালাকে কতবার বোঝাতে চেয়েছি। আপনাকেও ইশারা দিয়েছি। কেউ খেয়াল করেননি। পরে আমার রিক্সাওয়ালাকে বললাম ভাই আস্তে চালান। আপনি কতবার যে কাত হয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন জানেন!"
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:০২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×