বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সরকারি খরচে মুসলামনদেরকে হজে পাঠানো আর ভারতের সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক হিন্দুদের উপসনালয় তৈরির জন্য কমিটি গঠনের সময় বেঁধে দেওয়ার আদেশের মধ্যে কোন পার্থক্য দেখি না। আমাদের স্বদেশীয় মুসলমানদের অনেকেই বাবরি মসজিদ নিয়ে প্রকাশিত ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের রায় মেনে নিতে পারছেন না। হ্যা, বিশ্বের বাজারে এটা একটা হট আলোচনার বিষয় বটে, যদিও বর্তমানে তা অনেকটা শীতল প্রায়। আমি এখানে পূর্ণ রায় নিয়ে কথা বলছি না, বিশেষত আমি রায়ের শেষাংশ তথা সরকারি খরচে মসজিদ ও মন্দির তৈরির বিষয়ে কথা বলছি।
কিছুদিন পূর্বে আমাদের মাননীয় ধর্মমন্ত্রীর কথাকে সামনে রেখে অনেক ইমানদারদের দেখেছি নিজেদের ইমান টিকিয়ে রাখতে খুবই তিক্ত বচন প্রসব করেছেন। অথচ এরাই কিন্তু আবার ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের রায়ের সাথে পুরোপুরি বিপরীত মুখি। বাবরি মসজিদের রায় ঘোষিত হয়েছে ঐতিহাসিক পুরাকীর্তির উপর নির্ভর করে। যেখানে দেখা যাচ্ছে রায়টি মুসলমানদের বিরুদ্ধে গেছে। যদিও রায়টির উপর উগ্রবাদীত্বের ছাপ দৃশ্যমান। তারপরও ইহা আমাদের দেশের মুসলমানদের আশানুরূপই ঘটেছে। কারণ আমাদের স্বদেশীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা যদি ভারতের হিন্দুদের জায়গায় থাকতেন, তবে তারা একই দাবী করতেন যেরকমটা ইতিপূর্বে ভারতীয় হিন্দু ধর্মান্ধরা করে এসেছেন। এর প্রমাণ পাওয়া যায় এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যাককে সরকারি খরচে হজে গমনের প্রথায়।
বাংলাদেশ সরকার যদি তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠদের দাবি অনুযায়ী কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠদের অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যাক মুসলমানদের হজে পাঠাতে পারে, তবে ভারত সরকার কেন তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠের দাবী রাখবে না; তা যতই অযৌক্তিক হোক। সর্বদিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সংখ্যাগরিষ্ঠদের দাবী অনুযায়ী কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠদের অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যাক মুসলমানের হজে পাঠানো আর ভারতের সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের দাবি অনুযায়ী উপসনালয় তৈরির জন্য বাবরি মসজিদের ভূমি দখল করত উপসনালয় তৈরির জন্য কমিটি গঠনের সময় বেঁধে দেওয়ার আদেশের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সো, আপনি যদি দাবী করেন ভারতের হাইকোর্টের রায় সঠিক নয়, তবে একই সাথে আপনাকে প্রতিবাদ করতে হবে সরকারি খরচে হজে পাঠানোর প্রথার বিরুদ্ধে। সরকারি খরচে মসজিদ মন্দির তৈরির বিরুদ্ধে ।
ছবিঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৯