somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পশু-পাখি-বৃক্ষ-বাড়িওয়ালা ভালবাসতে ভ্যালেন্টাইনের চিঠির দরকারটা কী? ভালোবাসা দিবসের উদ্দেশ্যটা আসলে কী?

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটা মাত্র দিন, প্রেমিক প্রেমিকার ভালবাসাটাকে সেলিব্রেট করার জন্যে; সেইটাকেও পুলিশ-আসামী, বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়া, বড়ো ছোট, মানুষ পশু, প্রতিবেশীদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার মানেটা কী ভাই?

ইতিহাসটা প্রতি বছর শুনে এখন সবাই জানেন। অতি শর্টে ২ লাইনে শেষ করি। ক্লডিয়াস ২য় চিন্তা করে দেখলো, বিবাহিত যোদ্ধার চেয়ে অবিবাহিত যোদ্ধারা ফাইটে ভালো হবে। তাই সে বিয়ে করতে মানা করে দিলো। ত ভ্যালেন্টাইন এক মেয়েকে বিয়ে করতে যেয়ে ধরা খেয়ে গেলেন। ফাঁসীর আগে লাস্ট চিঠির শেষে উনি লিখেছেন, “তোমারই ভ্যালেন্টাইন”।
আবার শোনা যায়, ওখানে জেলরক্ষকের মেয়েরই প্রেমে পড়েছিলেন উনি। সেই মেয়েকেই চিঠি দিয়েছিলেন।

ত, ঘটনা শেষমেষ যাই হোক, এই যে বেচারা ভ্যালেন্টাইন চিঠিটা দিয়ে গেলেন, উনি কি গরু ছাগল, বৃক্ষ, পুলিশ, প্রতিবেশি, ভাই-ভাবী, বাবা মা, পৃথিবী গ্যালাক্সি এদেরকে চিঠি দিলেন? আরে, এই চিঠির উপর এই ভ্যালেন্টাইন’স ডে সেই চিঠিটাই ত প্রিয়তমার জন্য।

একটা মাত্র দিন প্রেমিক প্রেমিকাদের দেয়া যায় না? সেখানেও আঁতেলীয় বাণী দিতে হবে যে, এই ভালবাসা সবার ! বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহে গাছের খবর নাই, এই দিনে বৃক্ষের জন্য প্রেম উথলে পড়ছে। ঈদে গরীব প্রতিবেশীকে মাংস দিতে মনে থাকেনা, মাংস দেয় দুই বিল্ডিং পড়ের “ভাবী” কে, আজকের দিনে তাদের প্রতিবেশির জন্য ভালোবাসা উথলে পড়ছে।


প্রতিটা কাপল (বিবাহিত ও অবিবাহিত) নিজেরাই ডিসিশান নেক না যে তারা এই দিন কিভাবে উদযাপন করবে বা আদৌ করবে কী না। বহুদিন ধরে বলবো বলবো ভাবছি, বলা হয় না। এই দিন “ভালোবাসি” বলে দিলাম। বা, অফিস নিয়ে ব্যস্ত বেশ। পাশের জেলা থেকে আসা হয় না। দেখা করব করবো ভেবেও করছি না। এই দিন না হয় ছুটি নিয়েই দেখা করলাম। অথবা, কখনও দেখাই হয় নি। বুঝতেছিও না যে তাকে রাজি করাতে পারবো কী না। এই দিন দেখা করতে বললাম। অথবা, বছর পাঁচেক প্রেম করে রিলেশন বোরিং হয়ে গেছে। এই দিনকে টার্গেট করে আবার আগের মত গিফট দিলাম না হয়, লাভ কার্ড দিলাম। স্বামী স্ত্রী বা বিবাহিত কাপলের সংখ্যাই ত সবচেয়ে বেশি। এই দিন টার্গেট করে তাদের রোমান্টিসিজম না হয় আরেকটু বাড়লো। সমস্যাটা কই ? আরে ভাই, প্রেম উদযাপণ মানে ডিস্কো না আবার বৃক্ষের প্রতি ভালোবাসাও না।

আপনি বলতে পারেন যে, সারা বছরই ত প্রেম করতেছ, একদিন ন্যাকামি না করলে না? আরে ভাই, এইটা ত প্রেম করার দিন না। প্রেমকে উদযাপন করার দিন। গাছ কী ফেব্রুয়ারির ১৩ তারিখ বুঝে ফুল ফুটায়? ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক সেদিন ত পহেলা বসন্ত। আপনার সামনে গরু জবাই করল, সেই মাংস খেলেন আর কুরবানীর ঈদে মাংস খেলেন দুইটা কী এক জিনিস নাকি? প্রত্যেকটা দিবসের আলাদা ইমেজ আছে।


শুধু প্রেমিক প্রেমিকার দিন হিসেবে থাকলে ঢালাও প্রচারটা কম হবে। বিজনেস হয়ত কমে যাবে। তাই এসব পুঁজিবাদী টেকনিক। আরে ভাই, ১৪ ফেব্রুয়ারিকে “পবিত্র দিন” হিসেবে ত কেউ ঘোষণা করতে বলে নাই। এটা না হয় বড়ো দের “ছিঃ ছিঃ দিন”, হুজুরদের “গজবের দিন” বা অপবিত্র দিন হয়েই থাকুক; তাও নর নারীর স্বাভাবিক ভালবাসার নামে একটা দিন দেন।
এগুলা বললে যারা সিঙ্গেল (এখন আমি নিজেও) তারা ক্ষেপে যায়, “তবে রে, ভালোবাসা দিবসে আমরা কি ভেসে আসলাম? আমাদের কিছু না?” আহা, বৃক্ষ রোপণ সপ্তাহে কারও চিন্তা নাই যে কয়টা গাছ লাগালাম, কিন্তু ভ্যালেন্টাইনস ডে তে কী করবে সে তা নিয়ে ক্ষেপে অস্থির। কাকে প্রপোজ করা যায়, কার সাথে ঘুরা যায়- উহ, কি দক্ষ যজ্ঞ।

সুস্থ স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্ক বিবাহিত ও অবিবাহিত সকল প্রেমিক প্রেমিকাকে নিজেদের অনুভূতি উদযাপন করবে কীনা য়ার করলে কীভাবে; সেই ডিসিশান নেয়ার জন্য ১৪ই ফেব্রুয়ারিটা আসেন তাদের নামে ছেড়ে দেই। পশু-পাখি-বৃক্ষ, পুলিশ-আসামী, প্রতিবেশি, বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়া, আত্মীয় স্বজনকে আমরা রেগুলার স্বাভাবিক ভাবে ভালবেসে যেতে পারি। যে কোন দিন উদযাপন করতে পারি। সেটার জন্য বেচারা ভ্যালেন্টাইনের চিঠির দরকার নেই আমাদের। সেই ভ্যালেন্টাইনের চিঠির ভালোবাসাকে আসেন তার জায়গাতেই বরং রেখে দেই।

এবারের ভালোবাসা দিবসে কাপলরা ঠিক করলো তারা উদযাপন করবে শাহবাগে যেয়ে, রাজাকারদের বিরুদ্ধে যেয়ে। এই উদযাপনটাই ত এই ভালোবাসা দিবসের লক্ষ্য।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৭
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×