বাংলাদেশ মোট ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ মুসলিমের বসবাস। একটি উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ হয় গত বছরের মে মাসে। গত ৫ বছরে দেশে মুসলমান জনসংখ্যার হার কমেছে 0.4 শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৫ সালে সনাতন ধর্ম্বালম্বী জনসংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার 9.9 শতাংশ যাকিনা 2016 সালে গিয়ে তা দাড়াঁয় 10.7 শতাংশ। বেশ কিছু ইসলামী চিন্তাবিদ এ নিয়ে যথেষ্টে উদ্বিগ্ন ছিলেন সে সময়। এসব চিন্তাবিদদের আসলেই যে বিষয় নিয়ে চিন্তা করার কথা ছিল সেগুলো নিয়েই আমার আজকের লিখা:
স্বাধীনতার পর থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এমন রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ১৫টির বেশি হবে না। ক্ষমতা মসনদে তারা কেউই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বসতে পারেননি।হাজার পীরের কোটি কোটি মুরিদ থাকল্ওে দেশে আজ অবধি মানবরচিত সংবিধানকে পবিত্র মানা হয়। অগণিত কুলিমজুর, রিকশা্ওয়ালা, ধনাঢ্য ব্যক্তি নিজের ঘাম জড়ানো টাকা খরচ করে মাসের পর মাস মানুষের বাড়ি, রাস্তা, মসজিদে গিয়ে দ্বীনে দা্ওয়াত দিচ্ছেন। তবু আজ্ও দেশের কোটি মানুষের বিশ্বাস অনেকটাই এরকম যে নামাজ না পড়্ওে দিনযাপন করা যাবে তবে সুদ ছাড়া পৃথিবীতে বাচাঁ যাবে না। কোটি মানুষ ধর্মীয় জমায়েত করে যেখানে সেই জেলার 5টি সিনেমা হলই ঠিক জমায়েতের পরের শুক্রবারই হাউসফুল হয়ে যায়। বিবিএস এর ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান বলছে দেশে ১৩,৯০২টি ক্ওমী মাদ্রাসায় ১৪ লাখের বেশি ছাত্র পড়ছে। তবু্ও এদেশের মাটিতে আল কোরআনের আয়াতের অপব্যাথ্যা হয় হরহামেশাই। যুগান্তরের ২০১৭ সালের ৩রা অক্টোবরের এক রির্পোট অনুযায়ী দেশে মসজিদের সংখ্যা ৩ লক্ষের উপর। আর এই মসজিদের কর্মকর্তা আছেন নয় লক্ষাধিক।আশ্চর্যজনক হল্ওে সত্য মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি মসজিদ আর কিছু মডেল মসজিদ ছাড়া বাকি সব গুলো সাধারণ মানুষের টাকা ও শ্রমে তৈরি। আর মসজিদের কর্মকর্তাদের বেতন্ও তারাই প্রদান করেন। অসংখ্য ইমাম আছেন যারা বিনা বেতনেই দ্বীনের প্রচার করে যাচ্ছেন।তারপরও দেশের কত শতাংশ মানুষ মসজিদের নিয়মি মুসল্লি তা একটু বাজার, অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোহরের সময় গেলেই টের পেয়ে যাবেন।দেশের ধর্মপরায়ন মুসলিমদের সংখ্যা আরো টের পাবেন কুরবানীর সময়। আমরা আত্মশুদ্ধি ও তাক্ওয়া অর্জনের জন্য লাখ লাখ পশু কোরবানি করি।তারপরও কিছু নরপশু আজও আমার ধ্বংস করতে পারিনি। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত শুধু পত্রপত্রিকাতেই খবর এসেছে ৪৩০৪ জন ধর্ষিত হওয়ার। যার মধ্যে 740 জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। আর আশ্চর্যজন হচ্ছে ধর্ষকের অধিকাংশর নামের আগেই দেখবেন সুন্দর করে মো: লেখা থাকে। হায়রে মোদের ধর্ম এখন শুধু নামের আগে, রমজানের মাঝে আর বয়সের শেষের দিকে হজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। শৈশব থেকেই ছেলে-মেয়েদের একসাথে বসিয়ে যে ইসলাম শিক্ষার বই পড়ানো হয় দশম শ্রেণী পর্যন্ত তার অর্থবাচকতা আমার কাছে কখনোই দৃশ্যমান হয়নি। কেননা ঐ বইতে লিখা আছে সুদ হারাম, ঠিক তার পরের পাঠগুলোতেই গণিত আর হিসাববিজ্ঞানে সুদের হিসাব করতে হয়। স্বাধীনতার পর থেকেই ইসলামিক ফাউন্ডেশন নামক এক বিখ্যাত সংস্থা সরকারি পৃষ্পপোষকতায় কাজ করল্ওে দেশের যুবকদের অনৈসলামিক কার্যকলাপের ফাউন্ডেশন গড়ে উঠছে তাদের চোখের সামনেই।আমাদের এই জগাখিচুড়ি মার্কা ধর্ম পালন আর ইসলামকে সর্বকালের সেরা জীবন ব্যবস্থা হিসেবে শুধু মৌখিক স্বীকৃতির কারণেই আজ জঙ্গিবাদের পথকেই কিছু বিপথগামী যুবক সঠিক জিহাদ মনে করছে। পুলিশ বাহিনীর অধিকাংশ যুবক ইসলাম ধর্মের অনুসারী হ্ওয়া স্বত্ত্ওে তাদের দূনীর্তির কথা জানেন না এমন কোন কীট পতঙ্গও হয়তোবা খুঁজে পা্ওয়ায় দায়। সবচেয়ে হাস্যকর হলো দেশে যখন পশ্চিমা আদলে সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যখন নামাজের বিরতি দেয়া হয়।অর্থাৎ হারাম কাজের মধ্যে ফরজ হালাল কাজের জন্য বিরতি আরকি। এ যেন মুসলিম অধ্যুষিত জনপদে ইসলামের সাথে এক চরম উপহাস।
যখন এদেশের মাটিতে আল কুরআন কিংবা মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম) এর জন্য মুগ্ধ হয়ে কেউ নও মুসলিম হয় তবে খুব ভাল লাগে। এতো কিছুর পরও যদি মনে করেন শুধু মোট মুসলিম জনসংখ্যার হার কমছে সেটা আপনার কাছে উদ্বেগজনক তবে আপনার জন্য সুখবর আছে। ভারত ও শ্রীলংকার লক্ষ লক্ষ তরুণ নিয়মিতই এদেশের এসে তাদের কাজ খুজে নিচ্ছেন। অন্যদিকে আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ পশ্চিমা দেশে পড়ালেখা বাহানায় সেসব দেশেই বংশবিস্তারের কথা ভাবছেন।সময় এখন্ও ফুরিয়ে যাইনি। আগে চিন্তা করুন কি নিয়ে আগে চিন্তা করা উচিত। তারপর না হয় চিন্তাটাকে বাস্তাবায়ন করে ফলপ্রূস করবেন।