somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিরাপদ আইনের অনিরাপদ প্রয়োগ

২১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনা ১:
দু:সম্পর্কের বড় ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছি। ভাই বলল কোন চিন্তা করিসনে শুধু বিকাশ পরিবহনে উঠে ঘুমিয়ে পড়বি। ওদের শেষ স্টপেজ আমার বাসার সামনেই। যাক তার কথা মতো খিলক্ষেত হতে উঠলাম। কিন্তু তার কথা মতো ঘুমোতে আর পারলাম নাহ। কেননা বাস ড্রাইভারের উপর পল ওয়াকারের প্রেতাত্মা ভর করেছিল। আহ সে কি স্পীড মনে হচ্ছিল যেন হানি সিং-এর চার বোতল ভোদকা খেয়েই মাঠে নেমেছেন মি: স্পিডস্টার। বেশ কিছু যাত্রী রীতিমত উত্তেজিত হয়ে বকা দিয়েছিল ঐ ঢাকার রাস্তার ফর্মূলা-১ রেসারকে।

ঘটনা ২: "নিসচা" আন্দোলনের রেশ প্রায় শেষ তখন। অনেক শিক্ষার্থী গ্রেফতারের মাধ্যমে বাবাকে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছি। ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করার কথা বললাম। বাবা রাজি হলেন না। বুঝানোর চেষ্টা করলাম শুধু নিরাপত্তার কথাই না অন্তত যে শিক্ষার্থীরা মারা গেল, আন্দোলন করল ওদের কথা বিবেচনা করে হলেও যেন ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করেন। না কিছুতেই রাজি করানো গেল না। মাত্র এক মিনিটির পথ আর রাস্তাতেও গাড়ির চাপ কম তার এসব যুক্তির কাছে আমি হার মানলাম।

আসলে আমরা ঠিক ততোক্ষণ উপলদ্ধি করি না যতোক্ষণ পর্যন্ত আমাদের নিজেদের কোন ক্ষতি হচ্ছে। আসলে যেখানে আমার মতো অসংখ্য যান্ত্রিক মানুষ নিজের সমস্যা সমাধান না করেও পালিয়ে বেড়ায় সেখানে উন্নয়নের ঢামাঢোলে চোখে ছানি পড়া মানুষদের কাছ থেকে আর-কিইবা আশা করা যেতে পারে। তবে পৃথিবীতে আইনের জন্মই হতো না যদি সবাই শৃঙ্খলা মেনে চলতেন। সুতরাং আইনকে করতে হবে কঠোর আর প্রয়োগ করতে হবে কঠোরতর। নতুবা সড়কে পরিণত হবে মৃত্যুর উপত্যকায়। এই ধরুন সিগনাল না মানলে ১০০০০০ টাকা জরিমানা অথবা ১ বছর সপ্তাহ জেল। অনেকের কাছেই মনে হতে পারে সামান্য একটা সিগনাল ভাঙ্গার জন্য এতো জরিমানা। তবে যারা এধারণা পোষণ করেন তাদেরকে সেই রাজার দুধের পুকুরের গল্প আবার বলতে চাই না। যেখানে প্রত্যেকেই মনে করত আমি একজন দুধ না দিলে কি হবে আর বাকি সবাইতো দুধ দিবে এবং তাতেই দুধের পুকুর ভরে যাবে। আপনি যখন একটি সিগনাল ভঙ্গ করছেন তখন আপনার সাথে একটি সম্পূর্ণ লেন সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইবে, আপনার পিছনেই বসে থাকা সন্তান আইন ভঙ্গ করা শিখবে, আপনার সিগনাল ভাঙ্গার কারণে সৃষ্ট ফাঁকা জায়গায় অন্য কেউ লেন পরিবর্তন করে আপনার জায়গায় আসতে চাইবে। আর এগুলোর মধ্যে যে কোন একটি ঘটনায় একটু অসাবধান হলেই ঘটে যেতে পারে দূর্ঘটনা। তখন আরো বড় জটলা আর ক্ষয় ক্ষতি হতে পারে। সুতরাং একটি সিগনাল ব্রেকই হয়তোবা পুরো ট্রাফিক সিস্টেমের জন্য কাল হয়ে যেতে পারে। মানুষ আইন মানে দুটো কারণে । মানুষ আইন মানে দুটো কারণে হয় সে সুসভ্য কোন জাতিতে বাস করে অথবা আইনের কঠোরতা ও প্রয়োগের মাত্রার কাছে হার মানে।
থাইল্যান্ডে যারা বারবার ট্রাফিক আইন ভাঙ্গবে তাদেরকে মর্গে কাজ করতে পাঠানো হয়। চিন্তা করুণ কি পরিমাণ দূরদৃষ্টিপূর্ণ শাস্তি। সাইপ্রাসে গাড়ি চালনার সময় কিছু পান বা খাওয়াতো দূরে থাক হাটুর উপর খাবার থাকলেই জরিমানা। আমাদের বাংলাদেশী গাড়ি চালক ও তাদের সহযোগীদেরকে তাদের প্রতিযোগীর সাথে কি সুন্দর ভাষা বিনিময় হয় তা আমরা প্রায়ই শুন। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে গাড়ি চালক সিটে বসে জনসমক্ষে অভিশাপ দিলেই ১০০ ডলার জরিমানা বা ৯০ দিন কারাবাস। আপনি গাড়ি চালাতে পারেন নাহ তাই বলে মাতাল কেউ আপনার গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে আছে। আপনি ভাবছেন ডোপ টেস্ট হলেতো চালক দোষী হবে ও জরিমানা গুণবে। নাহ, জাপানে চালক মদ্যপ থাকলে যাত্রীকেও জরিমানা গুণতে হবে। সুতরাং চালক সম্পর্কে যাত্রীকেও সচেতন হতে হয় জাপানে।

আমাদের দেশে ট্রাফিক আইনকে “সমঝোতা কাম ইচ্ছে আইন” হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। ইহা কখনো ট্রাফিক পুলিশের ইচ্ছে অনুযায়ী চলে তো কখনো চালক ও পুলিশের সমঝোতায়।

ট্রাফিক আইন নিয়ে;
আর নয় কাম্যতা,
করতে হবে বাধ্যতা,
গড়তে হবে সুসভ্যতা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×