somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আবূসামীহা
পৃথিবীর দিকে দিকে

ওরা এমন হয় কীভাবে?

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ লজ্জাহীন হয়ে গেলে যা ইচ্ছে করতে পারে। যারা ঘুষ খায় বা অন্যায় ভাবে অন্য মানুষদের অধিকার মেরে দেয় তারা চরমতম লজ্জাহীন মানুষ বলেই আমি মনে করি।

যে বস্তুটা নিজের নয় তার দখল নেয়া নিতান্তই গর্হিত কাজ। কেউ কোথাও পেয়ে তা নিয়ে নিলে না হয় একটা কথা। কিন্তু ভদ্রতার ভান করেই একজনের কাছ তার মালিকানার কিছু জিনিষ নিয়ে নেয়া - আমি কল্পনাও করতে পারিনা। যে জিনিষ আমার নয় তা কারো কাছ থেকে চাইতেই লজ্জা হওয়া উচিত। ঘুষ খাওয়া আর আমাদের দেশের পুলিশ ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের অন্যদের জিনিষ জোর করে নিয়ে নেয়াটা এধরণের কাজ।

বাংলাদেশী হিসেবে একাজগুলো আমাদের গা সওয়া অনেকটা। কিন্তু শিক্ষিত কিছু মানুষ, যাদেরকে আপাতঃদৃষ্টিতে ভাল মানুষ বলেই মনে হয় তাদের কিছু অন্যায় আবদার মনটাকে পুরোপুরি বিষিয়ে তোলে।

ব্যাপারটা হচ্ছে স্কুলে আমার সুপার ভাইজারকে নিয়ে। ভদ্রলোক আমাকে বেশ খাতির করেন। বয়স্ক মানুষ বলে আমিও তাঁকে বেশ সম্মান করি। উনি একদিন আমাকে একটা অনুরোধ করলেন। একান্তে ডেকে বললেন একটা মেয়েকে যেন পাশ করিয়ে দেই। ১২শ গ্রেডের ছাত্রীটা তাঁর আত্মীয়া। মেয়েটা গ্লোবাল এবং আমেরিকান হিস্ট্রির নিউ ইয়র্ক স্টেট রিজেন্টস পরীক্ষাগুলো পাশ করেনি। তার এবার পাশ করা না হলে হাইস্কুল গ্রাজুয়েশন হবেনা। আমি তাঁকে বললাম এটাতো স্কুলের পরীক্ষা না, স্টেট টেস্ট। আমি তাকে কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারবোনা যদি সে নিজে কিছু না লিখে। তিনি এদিকে ব্যাপারটা বার বার আমাকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকলেন। মনে মনে প্রচণ্ড বিরক্তি বোধ করতে থাকলাম।
এদিকে আবার পরীক্ষাগুলো হল এবং মেয়েটা যথারীতি ফেল করল। ভদ্রলোক আমাকে আবার অনুরোধ করলেন তার পেপারগুলো যেন রিচেক (Recheck) করি। আমি রিচেক করেও কোনভাবেই তাকে পাস করার মত স্কোর দিতে পারলামনা। এখন জানিনা ভদ্রলোক আমাকে আগের মত খাতির করবেন কিনা!

কিছু মানুষের মাঝে অসততা একটা রোগ। ৪ বছর আগে স্কুলে পাবলিক স্কুলের এক শিক্ষককে এনে প্রিন্সিপ্যাল নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। সে বছর আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রথমবারের মত স্টেট রিজেন্টস পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে। আসল পরীক্ষার সপ্তাহ দুয়েক আগে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আমরা মক রিজেন্টস পরীক্ষার ব্যবস্থা করলাম। আমি জানি আমার ছাত্র-ছাত্রীদের বেশীরভাগই খারাপ করবে। আমেরিকান হাইস্কুল স্টুডেন্টদের গতানুগতিক যা অবস্থা, এদের অবস্থাও তাই। পরীক্ষা শেষে আমার ধারণা মতই ফলাফল। ঐ প্রিন্সিপ্যাল ভদ্রলোক আমাকে ডেকে বললেন, "দেখুন মিঃ সিরাজ! ছাত্র-ছাত্রীরা খারাপ করলে আপনার উপরে অপবাদটা পড়বে।" আর যা বললেন তার মানে হল ওদের রেজাল্ট ইঞ্জিনিয়ারিং করতে হবে নিজের মান বাচাঁতে। আমি কি বলব? পুরো থ! আমি কখনো এমন করে ব্যাপারটা ভাবিনি। আমি তাঁকে কিছুই বললামনা। তবে মনে মনে বললাম সামান্য চাকুরীর রেপুটেশন খারাপ হবে বলে আমি আমার সাথে প্রতারণা করতে পারিনা। আর রিজিকের মালিকতো আমি নই। যিনি মালিক তিনি সন্তুষ্ট থাকলেই আমার সব পাওয়া। তাই ঐ প্রিন্সিপ্যালের কথা গ্রহণ করা হয়ে উঠেনি আমার।

বছরখানেক আগে খবর বেরিয়েছিল এক সরকারী হাইস্কুলের প্রিন্সিপ্যালের চাকরী হারানোর ব্যাপারে। ভদ্রলোক স্টেট পরীক্ষাগুলোতে তাঁর স্কুলের খারাপ রেজাল্টের কারণে বদনাম হবে বিধায় রেজাল্ট ইঞ্জিনিয়ারিং করতে যেয়ে ধরা খেয়েছিলেন।

এরা কেন এমন? এদের এসব দেখে মনটা ভাল মতই বিষিয়ে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:৩১
১৯টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×