somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুরছাই ধুত্তোরী ছাই ও কাশফুল দোল খায় বইয়ের পাঠানুভূতি

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আফসার নিজাম

মানবমনের সৌন্দর্যচেতনা, প্রাণের স্পন্দন সচল রাখার প্রয়াসে মানুষ ক্রমাগত শিল্পসৃজন করে। মানুষের প্রাণস্পনের মতোই সৃজনক্রিয়া তাকে অনুপ্রাণিত করে নতুন নতুন শিল্পসৃজনে। মেঘের ঘর্ষণজনিত শব্দ, বৃষ্টিপতনের ছন্দ তাকে ছন্দময়তার দিকে ধাবিত করে। তাই মানুষ কথাবলার ইতিহাস থেকে ছন্দের আশ্রয়গ্রহণ করে। মানুষ যখন হাঁটতে শেখে, ছন্দহীনতার জন্য বারবার হোঁটট খায়। সে আবার উঠে দাঁড়ায়। ছন্দময় ক্রিয়াটি আয়ত্ব করার চেষ্টা করে আর এভাবে সে হাঁটা শেখে। মানুষ সেইযে হাঁটা শুরু করেছে আজও হেঁটে চলছে। পৃথিবী যতোদিন থাকবে মানুষ ততোদিন হেঁটে চলবে। এই গতিময়তা এই ছন্দময়তার প্রশ্রয়ে মানুষ বিনির্মাণ করে শিল্প, কবিতা।

মানুষ যখন ঝর্ণার শব্দ শুনেছে, বৃষ্টির শব্দ শুনেছে, ক্রমাগত ব্যাঙের ডাক শুনেছে, সমস্বরে শিয়ালের হুক্কাহুয়া শুনেছে। সেই ছন্দকে অবলম্বন করে নিজের ভাব অন্যের মধ্যে সঞ্চালন করার জন্য সৃষ্টি করেছে ভাষার। ভাষা মানেই তো কবিতা। ভাষা মানেই তো শিল্প। মানুষ প্রকৃতির পাঠে নিজের অভিজ্ঞতাপ্রদর্শন করার আগে নাম শিখতে শুরু করেছে। সে যখন একটি পাখি দেখে বলে ওঠে দোয়েল। আবার অন্য একটি পাখি দেখে বলে কাক। একটি প্রাণী দেখে বলে কুকুর, অন্যটি বিড়াল এভাবেই তার শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ করে নামের মাধ্যমে। নামের মালা দিয়ে সৃজন হলো কবিতা। যে মানুষ এই শব্দগুলোকে মালা বানিয়ে বলতে পারলো, মানবসমাজ তার নাম দেন কবি। একজন মানুষ কবি হয়ে উঠলো, হয়ে উঠলো বিনির্মাণকারী। বিনির্মাণকারী মানেই তো শিল্পী, কবি, তার সৃজন কবিতা বা শিল্প।

প্রথম মানব-মানবির আগমনের পর থেকে মানুষ শিখতে থাকলো নাম। নাম মানেই তো অভিজ্ঞতা। আজ মানুষের কাছে নামের পাহাড়। সে নাম দিয়ে সৃজন করেছে অভিজ্ঞতার জাদুঘর। সেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে রেখেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম। মানুষের আজকের এই উন্নতি সেই সঞ্চিত অভিজ্ঞতারই ফল। অভিজ্ঞতার অপর নাম জ্ঞান। জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে আজকের সভ্যতা। মানব সমাজ যখন এই অভিজ্ঞতা হারিয়ে ফেলবে তখন তাকে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। আমরা যেমন দেখি তুষার যুগের শেষে প্রাণের অভিজ্ঞতা সব শেষ হয়ে যায়। প্রাণ নতুন করে আবার শুরু করে। মহাপ্লাবনের কথা জানি একটি মাত্র ডিঙির মধ্যে কিছু অভিজ্ঞতা সংগ্রহিত ছিলো তা দিয়েই আবার নতুন করে শুরু হয়েছিলো। এইসব অভিজ্ঞতাকে সঞ্চয় করে রাখার জন্য মানুষ সৃজন করে শিল্প বা কবিতা।

যার মাধ্যমে জ্ঞানসঞ্চয় করে রাখা হয় তার নাম ভাষা। ভাষা যার আশ্রয়ে বেঁচে থাকে তাকে বলা হয় শিল্প বা কবিতা। কবিতা তাই মানব উন্নতির প্রধান নিয়ামক হিসেবে বিরাজমান। কবিতা বলতে মানবসমাজের যাবতীয় সৃজনক্রিয়া। যদিও সমসাময়িক সময় এ বিষয়গুলোকে বিভক্ত করেছে প্রয়োজনের তাগিদে। তাকে বিভাজন করেছে ছোট ছোট নামে। তার একটি হলো ছড়া। অদ্যকার আলোচনা আমাদের দুটি বই নিয়ে। একটি শাহ আলম বাদশা’র দুরছাই ধুত্তোরী ছাই, অন্যটি এনামুল হক মানিক’র কাশফুল দোল খায়।


দুরছাই ধুত্তোরী ছাই
শাহ আলম বাদশা মূলত শিশু সাহিত্যিক। তার হাতে সৃজন হয় শিশুমনন, শিশুভাব, শিশুচিন্তা, শিশুকল্পনা। এগুলো সম্মিলিতভাবে শিশুসাহিত্য হিসেবে হাজির হয় পাঠকসমাজে। শাহ আলম বাদশা’র এই বইটিতে আমরা শিশু-কিশোর এবং প্রাপ্তবয়সের ছড়ার ছড়াছড়ি লক্ষ্য করি। তবে শিশু-কিশোরদের নিয়েই লেখার আধিক্য লক্ষ্য করার মতো। দুরছাই ধুত্তোরী ছাই পাঠ করলে যে বিষয়টি উঠে আসে, তা তার সন্তানদের নিয়ে লেখা ছড়া। সন্তানদের মাধ্যমে জগতের সকাল শিশুকে উপস্থাপন করা।

তানিনমণি বেজায় হাসে
তাইযে ডাকি হাসি
কান্না তখন হায়রে সেকি
চোখের জলে ভাসি। -তানিনের হাসি-কান্না

ছোটমেয়ে তাবাসসুম
নেই চোখে নেই ঘুম
করে শুধু হই-চই
মুখে যেনো ফোটে খাই। -আবোল-তাবোল

নাম জানো কি, বলছি শোনো
নেই মানে তার নামের কোনো
শুনতে তবু ভাল্লাগে বেশ
তিন হরফের পম্পা
রাগলে দারুণ কাঁদতে থাকে
নেইতো অনুকম্পা। -ছোট্টমেয়ে

দ্বিতীয়ত তার ছড়ায় চোখে পড়ে আদর্শ। আদর্শ সবসময় বিপ্লবকে তরান্বিত করে। বিপ্লব মূলত প্রতিষ্ঠানের অনাচার, জুলুম থেকে জনসাধারনকে মুক্ত করতে চায় বা একজন শিশু গড়ে ওঠার সময় তাকে পরিবার, সমাজকে টিকিয়ে রাখার কৌশলগুলোকে আয়ত্ব করিয়ে দিতে চেষ্টা করে।

মনমাতানো গন্ধ ঢেলে
আলোর মশাল যাবোই জে¦লে
চাই শুধু চাই হক-অধিকার যতো
দুঃখ-জ¦রা মন্দ-কালো
পা’য় মাড়িয়ে আনবো আলো
স্বর্গসুখে হাসবো ফুলের মতো। -ফুলের মতো

ধুত্তোরী ছাই কোনদিকে যাই
মা’র বকুনি আর কতো খাই
শোনরে পাজি ঘুম
দুইহাতে তোর পা’গুলো ছুঁই
পড়ার সময় আসিসনে তুই
দিসনে চোখে চুম
শোনরে পাজি ঘুম। -ধুত্তোরী ছাই

তাঁর প্রতিটি ছড়া ছন্দব্ধ। অন্ত্যমিলসম্বলিত। আজকাল অনেকেই লেখায় ছন্দকে প্রাধান্য দেন না। তারা পরীক্ষা করে দেখতে চান ছন্দহীন হাঁটা যায় কিনা। নাকি হোঁচট খেতে হয়। কেউ কেউতো আছেন হোঁচট খেলেও সেইভাবে খুড়িয়ে হাঁটতে চেষ্টা করেন। খুড়িয়ে হাঁটার মধ্যেও যে একটি ছন্দ আছে তা তিনি ভুলে যান। আবার অনেকে আছেন পা’র পর পাফেলে ছন্দের তালে তালে সুর তুলে সামনে এগিয়ে যান। শাহ আলম বাদশা ছন্দে ছন্দে পাফেলে এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে।

তুলতুল ফুলফুল ভুরভুর গন্ধ
গন্ধে যে মনটায় দোল খায় ছন্দ!
লাল নীল সাদাফুল
দোল খায় গাঁদাফুল
ফুল কেনো হইনিগো, ভাগ্যটা মন্দ
গন্ধে যে মনটায় দোল খায় ছন্দ। -দোল খায় ছন্দ

ছন্দসুরে বিষ্টি নামে
বিষ্টি নামে বর্ষাতে
ছোট্ট রুমু খেলতে যাবে
বলো না কোন ভরসাতে? -শঙ্কারে

ছড়া দিয়ে হাসানো, মজা করে শিক্ষা দেয়া আদি থেকে চলে আসছে। যাকে বলা হয়ে থাকে আনন্দময় শিক্ষা। শাসনের মাধ্যমে আমাদের দেশে শিক্ষা দেয়ার প্রবণতাই বেশি। কিন্তু আনন্দ দিয়ে যে শিক্ষ্রাদান করা যায় তা অনেক পরে এসে আমরা অনুধাবন করেছি। আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষাদান করা কঠিন বলেই হয়তো শাসনপ্রবন হয়ে ওঠি। তাই দেখি আনন্দদানের মাধ্যমে শিক্ষা দেয়ার লোক সমাজে বিরল। মোল্লা নাসির উদ্দিন, গোপালভার আনন্দের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন। বাংলাছড়ায় কাজী নজরুল ইসলাম, সুকুমার রায়, অন্যদাশঙ্কর রায়, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাইসহ আরো অনেকের নাম করা যায়। যারা আনন্দময় ছড়া দিয়ে শিক্ষা দেয়ায় সচেষ্ট ছিলেন। সেই সিলসিলা আজ অব্দি প্রবহমান। শাহ আলম বাদশার এই বইটি তেমনি। উত্তরাধিকার বহন করে নিয়ে আসছে।

ঢাকায় থাকেন কাক্কা
তারতো অনেক টাক্কা
গরীব কিছু চাইতে এলে
অবহেলায় দেনযে ঠেলে
গলায় দিয়ে ধাক্কা
হায়রে আমার কাক্কা। -টাকার ছড়া

লিকলিকে চেহারা প্যান্টপরা লোকটা
ভিসিআরে দেখি আর বড়বেশি ঝোঁকটা
নিশিদিন ভিসিআর
কতো দেই ছিছি আর
কমছে কি তবু তার ছোঁয়াচে এ রোগটা। -লোকটা

এই কথাগুলো আনন্দময়ভাবে উপস্থাপন করে বুঝিয়ে দেয় সমাজের ক্ষত। এটাই ছড়াকারের মুন্সিয়ানা হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। অন্য একটি বিষয় আমার কাছে বিস্ময়ের লেগেছে। তার গোটা বইয়ে কোথাও নন সেন্স ভার্স ছড়া নেই। সব ছড়াই কোনো না কোনো বিষয়কে আবর্তন করে গড়ে ওঠেছে। এটাই সমাজমনস্ক কবিতার চরিত্র। এর মাধ্যমে সমাজের কাছে তার যে দায়বদ্ধতা, মানুষের কাছে যে দায়বদ্ধতা, প্রজন্মের কাছে উত্তরসুরী হিসেবে যে দায়বদ্ধতা তা পুরোপুরি রক্ষা করেছেন। আমরাতো জানি লেখক আকাশ থেকে নেমে আসা কোনো প্রাণী নন বা পাতালফ–ঁড়ে জেগে ওঠাও কোনো প্রাণী নন। সে সমাজেরই লোক। তাই দেখি মানবসমাজ টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব তিনি কাধে তুলে নেন আর পুননির্মাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।

ট্রাক মানে যমদূত
দৈত্য সে অদ্ভুত
পথ-ঘাটে কাজ তার
লোক মারামারি। -আড়ি

ন’টার গাড়ি ক’টায় ছাড়ে
দেখতে যদি চাও
ইস্টিশনে যাও না ছুটে
জলদি করে যাও। -ন’টার গাড়ি

জীবনের জন্য যে সৃজন। সেই সৃজন জীবনকে সুন্দর করে তোলে। জীবনে জীবন দিয়ে গড়ে ওঠে হৃদয়মিনার। আমরা সেই মিনারের সামনে ফুল নিয়ে হাজির হই আর সমস্বরে গেয়ে ওঠিÑ

দুঃখ-জ¦রা মন্দ-কালো
পা’য় মাড়িয়ে আনবো আলো
স্বর্গসুখে হাসবো ফুলের মতো।

একটি বই সর্বগুণে গুণান্বিত হয়ে ওঠতে পারে না। তেমনি এই বইটিও সর্বগুণে গুণান্বিত হয়ে উঠেছে তা বলা যাবে না। বইটির একটি বিষয় হলো প্রতিপাতায় পাতায় বইয়ের নাম ওপরে দেয়া আছে। অনেক আগের প্রকাশকরা এরকম ব্যবহার করতো। তাদের চিন্তা-চেতনা গবেষণায়র ফল হলো বইয়ের নাম পৃষ্ঠানাম্বার নিচে দেয়া। জানি না প্রকাশক কী চিন্তায় বইয়ের নাম আবার ওপরে নিয়ে গেলেন। তাছাড়া বইয়ের মেকাপ গেটাপ ভালো লাগছে। প্রচ্ছদটিও দারুন সুন্দর হয়েছে। শিশুরা দেখলে তাকে ছুঁয়ে দিতে চাইবে।

এবার আমরা ছড়ার বইটির সম্পর্কে কিছু তথ্য হাজির করবো। ২৮ পৃষ্ঠার বইটিতে মোট ছড়া আছে ৩০টি। বইটির প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেছন শিল্পী মনিরুজ্জামান পলাশ। অলটারনেট বুকসের প্রকাশনায় বইটি প্রকাশ পেয়েছে ১৪ এপ্রিল’১৫। যার মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৭৫ টাকা। একরঙা ইনারের বইটির প্রচ্ছদ ৪ রঙ।

কাশফুল দোল খায়
এনামুল হক মানিক সরল চিন্তার মানুষ। যাকে আমরা বলি মাটির মানুষ। তাঁর কবিতাও সরল মাটিগন্ধি। নগরকেন্দ্রীক জীবনে টিকে থাকার জন্য মানুষ যেভাবে জটিল থেকে জটিলতর রূপে মনন গঠন করে, মানুষ হয়ে ওঠে ভিন্ন চিন্তাচেতনা বহনকারী এনামুল হক মানিক’র কবিতায় সেই বিষয়টি উঠে আসতে দেখি।

ময়ূর সাজতে গিয়ে কাক
হলো বিধিবাম
নিজের ভুলে নিজেই কাঁদে
কেটে গায়ের চাম। -বহুরূপী

এনামুল হক মানিক’র প্রধান বিষয় হলো প্রাকৃতিক নিয়মকে আতস্থ করা এবং এর মধ্যে যে কল্যাণ নিহিত আছে তাকে গ্রহণ করে উন্নত জীবনগড়া। যাকে আমরা বলতে পারি পজেটিভ চিন্তা। পজেটিভ চিন্তার মধ্যে থাকে মানুষের কল্যাণ, মানুষের জীবনব্যবস্থা। মানুষের মননের উৎকর্ষতা। সেই পজেটিভ বিষয়গুলো তার কবিতার পরতে পরতে বিদ্যমান।

পাহাড় দিলো ঝর্ণাধারা
সাগর দিলো ঢেউ
আল্লাহ ছাড়া এসব কিছু
করবে কি আর কেউ। -মন করে আনচান

মিনার থেকে সুর যে ভাসে
ছড়ায় তো আবেশ
মনের মাঝে স্বপ্ন-আঁকি
সবুজ বাংলাদেশ। -আমার বাংলাদেশ

আল্লাহ তোমার অরূপ সৃষ্টি
লাগে যে দারুন বেশ
সেতো আমার জন্মভূমি
প্রিয় বাংলাদেশ। প্রিয় বাংলাদেশ

কাশফুল দোল খায় কবিতার বইটিতে ছন্দবদ্ধ কবিতা দেখতে পাই। বিশেষ করে স্বরবৃত্ত ছন্দে লেখা কবিতাগুলো। প্রতিটি কবিতাই পদ্য হয়ে ওঠেছে। জীবনের গভীরে যে চিন্তা অনুরণন তৈরি করে সেভাবে নয়, তার কবিতায় জীবনের উপরিভাগের কথাগুলোই বলতে শুনি। কবিতার বক্তব্যগুলো কারিসটেমিকভাবে উপস্থাপন না করে সরলভাবে উপস্থাপিত হতে দেখি।

জীর্ণ-শীর্ণ একটি শিশু
বসে পথের ধারে
এদিক-ওদিক তাকায় আহা
কাঁদে অনাহারে। -ঠিকানা নাই

হাওয়ার বেগে চলছে ছুটে
জীবন নামের ট্রেনটা
কোথায় এলাম যাবো কোথায়
খাটাও খানিক ব্রেনটা। -উড়ে যাবে প্রাণটা

এই বইটিকে অনেকে ছড়ার বই আবার অনেকে কবিতার বই বলে চিহ্নিত করতে চাইছে। কবিতার বইটির যে নাম তা কিশোর কবিতার বইয়ের নামের মতোই মনে হয়। লেখাগুলো পাঠ করলে দেখি ছন্দ তাল লয় মাত্রা অন্ত্যমিল মিশিয়ে একটি পদ্যের বই। আমার কাছে এটাই প্রতীয়মান হয়। তাই তার লেখাগুলো সরল। কবি নিজেও সরলজীবনে অবগাহন করেন বলে মনে হয়। সরলজীবনে অবগাহন করা মানে চোখবন্ধ করে বসে থাকা নয়। তার বই যে সমাজের অন্ধকার দিকগুলো দেখে তার প্রমাণ পাই

তিলে তিলে মারার চেয়ে
মারো এককালীন
আর দিও না ভাইরা আমার
খাদ্যে ফরমালিন। -ফরমালিন

পাতিনেতা মঞ্চে এসে
গ্রহণ করলো আসন
একটু পরে শুরু হবে
জ্বালাময়ী ভাষণ। -পাতিনেতা

উপরের কবিতায় যেমন গরল-লোকদের নিয়ে সরল বয়ান দেখি। গরল-সরলের মধ্যে শিশু-কিশোরদের নিয়ে কবিতাও দেখি। তিনি তার শিশুকে আল্লাহর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। পরিচয় করিয়ে দেন তাঁর সৃষ্টি, তাঁর প্রেরিত রসুল সা.কে আর তাঁর প্রদর্শিত পথকে

শিশিরবিন্দুরা জমে সবুজঘাসে
মিষ্টিরোদের ছোঁয়ায় নিসর্গ হাসে
এসবই মহান আল্লাহর দান। -কাশফুল দোল খায়

আকাশ-বাতাস ঝর্ণাধারা
নদীর কলতান
চন্দ্র-সুর্য গাছগাছালি
হাসনাহেনার ঘ্রাণ
সবই তোমার দান। -সবই তোমার দান

সত্যকথা বলতে হবে
দ্বীনের পথে চলতে হবে
আল্লাহকে ভয় করতে হবে
রাসুলের পথ ধরতে হবে
কোরআন হাদিস পড়তে হবে
নামাজ কায়েম করতে হবে। -প্রতিজ্ঞা

শাহ আলম বাদশার বইটির মতোই কিছু ত্রুটি লক্ষণীয়। সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিগোচর হলো ইন্টারনেট থেকে লেখাগুলো সংগ্রহ করে কন্ভার্ট করার সময় ফন্টে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তার অনেকগুলোই এখনও বিদ্যমান। তবে সার্বিক প্রকাশনার মান ভালো।

এবার আমরা ছড়ার বইটির সম্পর্কে কিছু তথ্য হাজির করবো। ৮৮ পৃষ্ঠার বইটিতে মোট কবিতা আছে ৪২টি। বইটির প্রচ্ছদ করেছন আফসার নিজাম। অলটারনেট বুকসের প্রকাশনায় বইটি প্রকাশ পেয়েছে একুশে গ্রন্থমেলা’১৫। যার মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৭৫ টাকা। এক রঙা ইনারের বইটির প্রচ্ছদ ৪ রঙ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:২৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×