somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিয়ে আর ভাগ্য...

২১ শে জুন, ২০১১ দুপুর ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজনের লেখায় দেখছিলাম যে সাম্প্রতিক একটি দাম্পত্যকলহের বিষময় ফল দেখে তার বান্ধবী বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছেন। আরো কয়েকজন একই কথা বলেছেন তার মন্তব্যে। এই প্রেক্ষিতে ক টি কথা বলার জন্য লেখা।

প্রথমেই বলে নেই যে, বিয়ে জিনিসটা স্বর্গ থেকে আসেনি, এর কোন অলৌকিক উৎস নেই। দুজন মানুষকে এক করে দেয়ার জন্য কিছু সামাজিক প্রথা আর আচারের সমন্বয়ে সম্পন্ন হয় একটি বিয়ে। ইসলামে বিয়ে একটি চুক্তি ভিন্ন আর কিছু নয়। কাজেই বিয়ে মানে "সকলের মুখে হাসি, গান আর গান," বা "সারাদিন পথ চাওয়া, শুধু তব মুখ চাওয়া" ভাবলে তা একটি অবাস্তব চিত্র তৈরি করবে দুপক্ষরই মনে। বিয়ে অসম্ভব সাংসারিক একটি বিষয়। এর সাথে কোন রোমান্টিক কিছু কল্পনা করলে তা আখেরে আশাভঙ্গের কারণ হয়।

দুজন মানুষ তাদের ভিন্নরকমের মানসিকতা নিয়ে সংসারে আসেন। কাজেই সবকিছুতেই দুজন একমত হবেন এমন কখনই আশা করা বোকামী। বিয়ে মানে দুজন দুজনকে তাদের নিজের মত করে বিকশিত হতে দেয়ার জন্য সব রকমের সাহায্য করা। বিয়ে মানে অতি দীর্ঘকাল ধরে দুজনকে দুজনের বোঝার চেষ্টা আর সমঝোতা করে যাওয়া। যদি আপনি অন্যরকম ভেবে থাকেন তাহলে এখনই শুধরে নিন। আমার বিয়ের সময় আমার একজন জ্ঞানীবন্ধু অন্যান্য অনেক উপদেশের মধ্যে এমন কিছু কথা বলেছিলেন, "দোস্ত, প্রথম ১৫টা বছর যদি টাইনা-টুইনা কোনরকমে পার কইরা দিতে পারো তাইলে বুঝবা টিক্যা গেলা। এরপর সব পানির মত সোজা।" তার কথা শুনে কিছুক্ষণ আমার মুখে কোন কথা সরে নি। আজ এতবছর পর এসে বুঝি তার কথা কত সত্য ছিল।

দাম্পত্যজীবনে নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে মতবিরোধ হবেই। কিন্তু সেজন্য কেউই কাউকে বাক্য দিয়ে বা শারীরিকভাবে আঘাত করতে পারে না, ইসলামে যাই বলা থাকুক না কেন। যদি এমনটি ঘটে তাহলে এমন মনে করার কারণ নেই যে, সে হয়তো উত্তেজিত হয়ে রাগের মাথায় কাজটা করে ফেলেছে, যাক এরপর মিলমিশ হয়ে যাবে। বা আমি আমার ভালোবাসা দিয়ে তাকে তার ভুল বোঝাবো। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ না করলে পরে তা কালরূপ ধারণ করতে পারে এবং শেষপর্যন্ত তা একটি ট্র্যাজিডিতে রূপ নিতে পারে।

কাজেই যখনই আপনি, পুরুষ হোন বা নারী হোন, কোনভাবে আক্রান্ত হবেন তখনই বিষয়টিকে সিরিয়াসলি নিয়ে সবাইকে জানান যাতে এই আচরণের অংকুরেই বিনাশ হয়। এরপরও যদি একই আচরণের শিকার হন আপনি তাহলে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করবেন না। কারণ, একবার যে হাত তুলবে, সে আবারো হাত তুলবে।

মেয়েদের বেলায় বিষয়টি বেশ জটিল হয়ে যায় নানা কারণে। সেজন্যে মেয়েদের উচিৎ এমনভাবে নিজেদের তৈরি করা যাতে প্রয়োজন হলে নিজেই নিজেকে চালিয়ে নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যায়, কারো গলগ্রহ হয়ে থাকতে হয়না যেন।

বিয়ে হাজার বছর ধরে টিকে আছে। কোটি কোটি মানুষ বিয়ে করছে। সবার বিয়েই সফল হবে না। কেউ টিকে যাবে কেউ পারবে না। প্রচুর টাকা আর সামাজিক প্রতিষ্ঠা থাকলেই বিয়ে ভালো হবে এটি একদমই সত্য নয়। এটিই সামাজিক বাস্তবতা। সেজন্যই বিয়ে যেমন আছে তেমনি তার পাশাপাশি বিচ্ছেদের ব্যবস্থাও আছে। সমাজ, মানুষ নানা কথা বলে ও বলবে। কিন্তু মনে রাখবেন, আপনার একটিই জীবন। সে জীবনে সুখী হবার অধিকার আপনার আছে। কাজেই ভয় পাবার কিছু নেই। ইচ্ছে হলে বিয়ে করুন। প্রেম করে করতে চান, অভিভাবকের ইচ্ছায় করতে চান, শেষ কথা হলো আপনি এবং আপনার স্পাউজ এই বিয়েকে সফল করার জন্য কি করছেন। দীর্ঘদিন প্রেম করলেই আপনি আপনার সঙ্গীকে সবটুকু বুঝতে পারবেন না। আর আপনার অভিভাবকরা ঘর-বংশ দেখে, পাজিঁ-পঞ্জিকা মিলিয়ে নিয়ে পাত্র-পাত্রী পছন্দ করলেও বিয়ে সুখের হবে এমন ভাবার কোন কারণ নেই। মাঠে খেলতে না নামা পর্যন্ত কটা গোল দিতে পারবেন তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা না করে কী করে সফল হওয়া যায় তা নিয়ে ভাবুন আর চেষ্টা করুন আনন্দ আহরণের মাধ্যমে দুজনকে সফলতার শিখরে পৌছে দেবার।
৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×