somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণতন্ত্রে ‘লিউকোপ্লাস্ট’

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরকারে আসার পরেই তিনি বলেছিলেন, ‘বিরোধীদের মুখে দশ বছর ‘লিউকোপ্লাস্ট’ লাগিয়ে রাখতে হবে।’
গত ৩২মাসে তাঁর দল, তাঁর সরকার সেটা করে দেখিয়ে দিয়েছে, কিভাবে গণতন্ত্রকেই ‘লিউকোপ্লাস্ট’ লাগিয়ে রাখতে হয়!
বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের দিন থেকে শুরু হয়েছে, আজও চলছে। বামফ্রন্টের নেতা-কর্মীরা খুন হচ্ছেন, আক্রান্ত হচ্ছেন, ঘরছাড়া হচ্ছেন, মিথ্যার মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, সাজানো অভিযোগে গ্রেপ্তার হচ্ছেন, জরিমানা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। গত ৩২মাসে ১৪৩জন বামপন্থী নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন, ৭৪৪৩ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, ৪৬৯৩৭জন ঘরছাড়া হয়েছেন, ৫৫৪৭জনের বাড়িতে তছনছ, লুঠ বা আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৪২৩৭জন। ৯৫২৯ জনের কাছে প্রায় ২কোটি ৭৮লক্ষ ৭৮হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। শুধু সি পি আই (এম)-এর পার্টি অফিস ভাঙচুর বা দখল করা হয়েছে দেড় হাজারের বেশি। অন্যা ন্য বামপন্থী দল, বিভিন্ন গণসংগঠন, ট্রেড ইউনিয়নের দপ্তর ধরলে সংখ্যা টি দু’হাজারেরও বেশি। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এই সব ঘটনার কোনোটিতেই দুঃখপ্রকাশ করেননি। বরং হামলাকারীদের তৃণমূল দলে প্রশংসা জুটেছে। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, ‘দুষ্টুমি করাটা দামাল ছেলেদের ধর্ম।’
বিরোধীদের ওপর তৃণমূলী দুষ্কৃতীদের এই আক্রমণের অভিযোগ করা সত্ত্বেও প্রশাসন ও পুলিস তার কোনো মোকাবিলা তো করছেই না, উল্‌টে বহুক্ষেত্রে আক্রমণকারীদের সহযোগী ভূমিকা নিচ্ছে পুলিস। প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ইঙ্গিত না থাকলে যে এটা হয় না, তা প্রমাণিত খোদ বিধানসভার অভ্যন্তরেই বামফ্রন্ট বিধায়কদের ওপর হামলা থেকে। ২০১২ সালের ১০ই ডিসেম্বর বামফ্রন্ট বিধায়করা যখন বিধানসভার অধিবেশনে চিটফান্ডগুলির বেআইনী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করে একটি মুলতুবী প্রস্তাব উত্থাপন করতেই রে রে করে তেড়ে এলেন তৃণমূল বিধায়করা। সরকারপক্ষের বিধায়কদের নির্মম আক্রমণে গুরুতরভাবে আহত হলেন দেবলীনা হেমব্রম, গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জিসহ বামফ্রন্টের বেশ কয়েকজন বিধায়ক। দুঃখপ্রকাশ তো দুরে থাকা, সরকারী হাসপাতালে যাতে চিকিৎসা না পান আহত বিধায়করা নির্লজ্জভাবে সেই চেষ্টা করে গেলেন শাসক দলের মন্ত্রীরা।
শুধু তাই নয়, এমনকি বিরোধীদের সভা সমাবেশ ও মিছিল করারও অনুমতি দিচ্ছে না পুলিস ও সাধারণ প্রশাসন। শুধু জেলায় নয়, কলকাতা শহরেও এই ঘটনাই ঘটছে। কোনো সরকারী হলে বামফ্রন্টের কর্মসূচীর জন্য অনুমতি পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে। হুগলী জেলায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর সভা করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। বর্ধমানেও একই ঘটনা ঘটেছে। কলকাতায় যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস সভা করছে, সেই একই জায়গায় বামফ্রন্ট শরিকদের সভা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। সভা হলেও নানাভাবে তাকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এই সরকারের আমলে সভা-সমাবেশ করার অধিকার একমাত্র তৃণমূলেরই!
সংসদীয় গণতন্ত্রের সবকটি স্তম্ভই আক্রান্ত হয়েছে তৃণমূল সরকারের ৩২মাসের শাসনে। বিধানসভার অধিবেশনের দিন কমিয়ে, কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে, এমনকি বিভিন্ন দপ্তরের বাজেট নিয়ে আলোচনাও ছাঁটাই করে রেকর্ড গড়েছে এই সরকার। আবার, সরকারের নেওয়া একটার পর একটা আইনবহির্ভূত পদক্ষেপ নিয়ে আদালত যখন প্রশ্ন তুলছে, তার বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আরো দুটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এবং পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকেও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। কোনোরকম সাংবিধানিক রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে তাঁর একজন ‘ইয়েস ম্যান’-কে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যা্ন পদে বসিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে রাজ্য সরকার সাংবিধানিক সংস্থা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে যেভাবে অস্বীকারের চেষ্টা করেছে, অসহায় ও ঠুঁটো জগন্নাথ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, তা অভূতপূর্ব। পশ্চিমবঙ্গে এর আগে সাতবার পঞ্চায়েত নির্বাচন ও পৌরনির্বাচন সঠিক সময়েই অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা নিয়ে সরকার-কমিশন এমন বিবাদ কখনো দেখা যায়নি। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করে শাসকদল এখন একচ্ছত্র ক্ষমতা কায়েম করেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাস, মনোনয়নে বাধা, ভোটদানে বাধা এবং গণনায় কারচুপিসহ সর্বাত্মক আক্রমণের মাধ্যমে কার্যত পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়েছিল।
এই সরকারের আমলে সরকারী কর্মচারীদের গণতান্ত্রিক অধিকারও আক্রান্ত। দেশব্যপী ধর্মঘটে রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা যাতে অংশগ্রহণ না করেন তার জন্য রীতিমতো ফতোয়া জারি করা হয়েছিলো। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মহাকরণে বলেছেন, ধর্মঘট মানে সর্বনাশা, ধর্মনাশা, কর্মনাশা, অর্থনাশা। ধর্মঘট ভাঙতে সরকারী কর্মীদের চাকরি জীবনে ছেদ ঘটানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল, ধর্মঘটী কর্মীদের বেতন কেটে নেওয়া হয়েছে। শুধু ধর্মঘট নিষিদ্ধ করাই নয়, পুলিস কর্মচারীদের সংগঠন করার অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সরকারী কর্মচারীদের নিয়ম মেনে সভা বা মিছিল করা, গণতান্ত্রিকভাবে বিক্ষোভ সভা করা, ইত্যাদির ওপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে রাজ্য সরকার। নতুন সচিবালয় নবান্নে রাজ্য সরকার নির্দেশিকা জারি করে এমনকি টিফিনের বিরতির সময়েও সভা বা মিছিল করতে নিষেধ করে দিয়েছে কর্মীদের। রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের মধ্যে যারাই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন, তারাই সরকারের কোপে পড়েছেন। শুধু সাধারণ সরকারী কর্মচারীই নয়, এমনকি উচ্চপদস্থ সরকারী আমলা, আই এ এস, আই পি এস অফিসাররাও এই কোপে পড়ছেন। তাঁদের প্রকাশ্যে অবমাননা করা হচ্ছে। দময়ন্তী সেন, কে জয়রামন, আর কে পচানন্দাকে পত্রপাঠ বদলি করে দেওয়া হয়েছে।
সংসদীয় গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমও তৃণমূল সরকারের কোপের বাইরে নয়। সরকার ও সরকার পোষিত পাঠাগারে সরকারের ঠিক করে দেওয়া তালিকার বাইরে রাখা যাবে না অন্য কোন সংবাদপত্র। ফতোয়া জারি করেছিলো রাজ্য সরকার। আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিকরাও। দুদিক থেকেই তাঁরা আক্রান্ত। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে শারীরিকভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন। বারাকপুরে টেলিভিশন চ্যানেলের দুই চিত্র সাংবাদিককে খুনের চেষ্টাও করেছে শাসকদলের কর্মীরা। অন্যদিকে সংবাদসংগ্রহে সরাসরি বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিধানসভায় অধিবেশন না চললে প্রেস কর্ণার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে এই কারণে দুবছর ধরে বিধানসভার গেটের বাইরে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে হচ্ছে। এবার নবান্নেও সাংবাদিকদের ওপরে নজিরবিহীন বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে পাঁচ দফা নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে নবান্নে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য।
এই সরকারের আমলে আক্রান্ত পঞ্চায়েত, সমবায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক অধিকারও। সর্বস্তরের মানুষকে যুক্ত করে অংশগ্রহণমূলক ও বিকেন্দ্রীকৃত উন্নয়নকাঠামোর ব্যবস্থা করে গোটা দেশকে পথ দেখিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত। আজ সেই পশ্চিমবঙ্গেই পালা বদলের পর মমতা ব্যানার্জির সরকার পঙ্গু করতে চাইছে পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে। সমবায় আন্দোলনের ওপরেও রাজ্য সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক আক্রমণ নেমেছে। তৃণমূল সরকার এক ধাক্কায় ৪হাজারের বেশি সমবায়ের পরিচালন সমিতি ভেঙে প্রশাসক বসায়, কোথাও নির্বাচনের নামে জবরদস্তি করে তৃণমূলের পরিচালনমন্ডলী তৈরি করে। যদিও কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তৃণমূল সরকারের সমবায় আইনটি অবৈধ ও সংবিধানবিরোধী। এরপরেও সরকার দ্বিতীয়বার বিধানসভায় বিল পাস করিয়ে সমবায় সংশোধনী কার্যকর করার চেষ্টা করে। কিন্তু দ্বিতীয়বারও আদালত সেই উদ্যোগকে খারিজ করে দিয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে গণতন্ত্রীকরণের তিন দশকের সাফল্যকে নসাৎ করে দিয়ে ২০১১সালের নভেম্বরে জারি করা হয় উচ্চশিক্ষার কালা অর্ডিন্যান্স।
তৃণমূল সরকারের আমলে আজ সবদিক থেকে আক্রান্ত গণতন্ত্র। প্রতিবাদ উঠছে সর্বত্র। প্রতিবাদের ঝড় উঠবে ব্রিগেডেও। ৯ই ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডে মিলবে প্রতিবাদী মানুষের স্রোত। পশ্চিমবাংলা তার অপেক্ষায়।

অজয় দাশগুপ্ত
গণশক্তি, ৩১শে জানুয়ার ২০১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×