somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভূড়িখালী না ঘূড়িখাল।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল সকালে ঘুম থেকে উঠেই খবর পেলাম আমাকে যেতে হবে ঘুড়িখাল। আমি শুনলাম ভূড়িখালি। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আর একজন সতীর্থকে নিয়ে রওনা হলাম। পথের ঠিকানা ভাল করে শুনে নিয়ে ড্রাইভারকে বললাম-- চলো।


দর্শনার মোড় থেকে বামের রাস্তা ধরে সোজা চলে যেতে হবে ঝাড়ুমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত। সেখান থেকে ডান দিকে কিছু দূর গেলেই কাঁচা রাস্তা । সেই রাস্তা ধরে যেতে হবে । স্থানীয় লোকদের বললেই রাস্তা বলে দেবে।

আমরা যাচ্ছি। কাঁচা রাস্তা পর্যন্ত খুব সহজেই গেলাম। এরপর প্রথম মোড় এ এসে বিপত্তি। কোন দিকে যাব? যে লোক ঠিকানা বলবে তাকে মোবাইল এ পাচ্ছি না। একটু অপেক্ষা করে সোজা সামনের দিকে রওনা দিলাম। কিছুদূর যাবার পর লোকজনের দেখা পেলাম। তাদের জিজ্ঞাসা করলাম -ভূড়িখালী কোন দিকে? তারা কী, কি বলে কয়েকবার নামটা জেনে নিল। আমরা মনে মনে বললাম -গাধার পাল্লায় পরলাম নাকি। তারপর জিজ্ঞাসা করল --কার বাড়ি যাবেন? নাম বলার পর বললো ----সোজা যেয়ে প্রথম যে রাস্তা ডানদিকে গেছে সেইটা দিয়ে গেলে সামনেই পাবেন।

গাড়িতে চড়ে আবার রওনা দিলাম। তখন বাজে সকাল সাড়ে দশটা। যাই আর যাই ডানে কোন পথ নাই। পথপ্রদর্শককে মোবাইল ফোনে বার বার জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। সেও বলে সামনে আসেন। যেতে যেতে বেলা দেড়টায় ডানদিকে পথ পেলাম। ডানের পথ ধরে কিছু দূর গেলাম। পথপ্রদর্শক এবারে চিন্তিত স্বরে বললো --আপনারা কোথায়? উত্তরে বললাম-- কি জানি।!
--লোকজনদের জিজ্ঞাসা করেন। লোক ধরে নাম জেনে তাকে জানালাম। সে বলে --এই জায়গা কোথায়? তার গ্রামের লোকজনদের জিজ্ঞাসা করে কয়েকজন মিলে ফোনে রাস্তার লোকেশন বলতে শুরু করলো। আমরা একবার সামনে একবার পিছনে একবার ডাইনে একবার বাঁয়ে ঘোরাঘুরি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে এক বাজারে গাড়ি থামালাম।। ড্রাইভার বললো --আপা এই বাজারে কিছু খাই, না খায়ে তো আর শক্তি পাই না।
এবার আমাদের তাড়া ড্রাইভারকে খাওয়াতে হবে । ওকে সুস্থ্য রাখতে হবে। কারন ঐ আমাদের ভরসা। ও আমাদের দুজনের জন্য দুটা কেক ও দুইকাপ চা এনে দিল। ওখানকার লোকজনদের জিজ্ঞাসা করলাম --ভাই ভূড়িখালিটা কোথায়? তারা কেউ ভূড়িখালি চেনে না।

বেলা তিনটা বাজে। বেটা ড্রাইভার যে কই গেল? কিছুক্ষন পরে এলো। রাগত স্বরে বললাম --কোথায় গিয়েছিলেন? বলে যাবেন না? আশ্চর্য! বেটা মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো --একটু বাইরে গিয়েছিলাম আপা। আমার সতীর্থ বললেন ---শুধু আপনার বাইরে যাবার কথা ভাবলেন আমাদের যেতে হবে তা ভাবলেন না। ড্রাইভার নিজেই ব্যাবস্থা করে দিল। একটা বাসায় নিয়ে গেল। সেখানে যেয়ে পেলাম প্রকৃতির দাকে সাড়া দেবার ব্যাবস্থা। প্রস্রাব করবার যায়গা আলাদা, পায়খানার যায়গা আলাদা। টিন দিয়ে ঘেরা। মাথার উপর ছাদ নেই। সেখানে কলপাড়ে বাঁশের বেড়ার গায়ে একটি আয়নাও ঝোলানো।



পেটের ভার কমিয়ে সতীর্থকে বললাম-- কেমন লাগলো এখানে খোলা আকাশের নিচে;)। সে খুব রাগত স্বরে বললো --আপনার এই বিপদেও সাহিত্য আসে। কিভাবে বাড়ি ফিরব? হা হা করে হাসতে হাসতে বললাম --তুমি কাদঁলে কিন্তু তোমার টলেটের ছবি ব্লগে দেব। সে ভ্যা করে কেঁদে বললো--:((গাড়িতে নাকি তেল নাই। আমি আরও জোরে হাসলাম --এটা কোন সমস্যা হল। তেল কেনা যাবে, না পাওয়া গেলে রিক্সাভ্যান তো আছেই। আমরা হাইওয়েতে আগে যাব সেখান থেকে যেদিকে বাড়ি সেদিকে যাব।



বাড়ি ফিরলাম রাত আটটা। বেটা পথপ্রদর্শককে দিলাম ঝাড়ি। ----বেটা তুমি ঠিকানা বলতে পারনা তো আমাদের জন্য অপেক্ষা করলা কেন? ভূড়ীখালী কেউ চেনে না পর্যন্ত। পথপ্রদর্শক মিন মিন করে বললো আপা ভূড়িখালী না ঘূড়িখাল। /:)

(এখানে চুপি চুপি বলি আমার সতীর্থের ছবিটা দিতে আমাদের কোন আপত্তি নাই আপনাদের না থাকলে আওয়াজ দিয়েন।)

ভূড়িখালি খুঁজতে খুঁজতে আসলেই আমরা ভূড়িখালি করবার ভাল জায়গা পেয়েছিলাম যেখান থেকে আকাশ দেখা যায়।
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×