somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার ভাষা তাঁর সৃষ্টির কাছে

১৫ ই মার্চ, ২০১২ রাত ৯:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন স্রষ্টা বা সৃষ্টিকর্তা ও তাঁর সৃষ্টির মধ্যে যদি যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে একটি ভাষাকে ব্যবহার করা হয় তবে তা সৃষ্টিকর্তার তৈরি এবং সৃষ্টিজীবের সকল স্তরে বোধগম্য এমন একটি ভাষাই ব্যবহৃত হবে। সুতরাং কম বুঝয়া মানুষ যা বুঝবে তা হতে হবে সঠিক, আবার বেশি বুঝয়া মানুষ যা বুঝবে তাও হবে সঠিক। আবার যুগের সাথে সাথে একই শব্দের ভিন্ন ব্যবহার হবে, কিন্তু যুক্তিযুক্ত ব্যবহারটি বিবেচনা করলেও যে অর্থ দাড়াবে তাও ঠিক হতে হবে। সুতরাং সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ভাষার ব্যবহারটা হবে অত্যন্ত জটিল; যাতে সময়ের, পরিবেশের এবং মানুষের বোধগম্যতার তারতম্যের সাথে এর অর্থ কোনভাবেই অসঙ্গতিপূর্ণ না হয়। তবে সবক্ষেত্রেই তা হবে সুস্পষ্ট।

(১) সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়। (২৬: ১৯৫)
(২) আমি একে করেছি কোরআন, আরবী ভাষায়, যাতে তোমরা বুঝ। (৪৩:৩)
(৩) আমি আপনার ভাষায় কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা স্মরণ রাখে। (৪৪:৫৮)
(৪) আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার। (১২:২)


আবার বোঝার ক্ষেত্রে কি বিষয়ে এবং কি পথে অগ্রসর হবে তার জন্যও সুস্পষ্ট পথনির্দেশক সূত্র বা গাইডলাইন দেয়া থাকারও কথা, যাতে বুঝতে গিয়ে বক্রতাপূর্ণ পথে এগিয়ে পুরোপুরি বিভ্রান্ত না হয়ে পরে। কারন, জ্ঞান বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের চিন্তাধারার গতিপথের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে থাকে, তখন কোন পথ ধরতে হবে তা সুস্পষ্ট হওয়া দরকার। আবার সহজ বিষয়কে প্যাঁচানোর ব্যাপারেও উল্লেখ থাকার কথা যাতে করে প্যাঁচানো বিষয়ে মানুষ সঠিক পথ আঁচ করতে পারে।

(১) আরবী ভাষায় এ কোরআন বক্রতামুক্ত, যাতে তারা সাবধান হয়ে চলে। (৩৯:২৮)
(২) বলুনঃ হে লোক সকল! আমি তো তোমাদের জন্যে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ককারী। (২২:৪৯)
(৩) আমি তো ভালভাবেই জানি যে, তারা বলেঃ তাকে জনৈক ব্যক্তি শিক্ষা দেয়। যার দিকে তারা ইঙ্গিত করে, তার ভাষা তো আরবী নয় এবং এ কোরআন পরিষ্কার আরবী ভাষায়। (১৬:১০৩)
(৪) আমি যদি একে অনারব ভাষায় কোরআন করতাম, তবে অবশ্যই তারা বলত, এর আয়াতসমূহ পরিস্কার ভাষায় বিবৃত হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, কিতাব অনারব ভাষায় আর রসূল আরবী ভাষী! বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার। যারা মুমিন নয়, তাদের কানে আছে ছিপি, আর কোরআন তাদের জন্যে অন্ধত্ব। তাদেরকে যেন দূরবর্তী স্থান থেকে আহবান করা হয়। (৪১:৪৪)


আল্লাহ্ এ পৃথিবীতে তার সৃষ্টিজীবের প্রকারভেদ রেখেছেন, প্রকারভেদ রেখেছেন একটি নির্দিষ্ট সৃস্টির মধ্যেও। এদের মধ্যে কাকে তিনি পথ প্রদর্শন করবেন তা নিতান্তই তাঁর ইচ্ছা; তাঁর ইচ্ছার বাস্তবায়নের মাঝখানে আর কোন কিছু নেই। এটাই হল সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য। সুতরাং, তাঁর প্রেরীত সংবাদ/তথ্য/আদেশ/সতর্কবাণী কারজন্য কি আঙ্গিকে রয়েছে তারও একটা গাইডলাইন থাকারও কথা।

(১) আমি কোরআনকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে আপনি এর দ্বারা পরহেযগারদেরকে সুসংবাদ দেন এবং কলহকারী সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন। (১৯:৯৭)
(২) তাঁর আরও এক নিদর্শন হচ্ছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃজন এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র। নিশ্চয় এতে জ্ঞানীদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (৩০:২২)
(৩) এর আগে মূসার কিতাব ছিল পথপ্রদর্শক ও রহমতস্বরূপ। আর এই কিতাব তার সমর্থক আরবী ভাষায়, যাতে যালেমদেরকে সতর্ক করে এবং সৎকর্মপরায়ণদেরকে সুসংবাদ দেয়। (৪৬:১২)
(৪) এমনিভাবে আমি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি এবং এতে নানাভাবে সতর্কবাণী ব্যক্ত করেছি, যাতে তারা আল্লাহভীরু হয় অথবা তাদের অন্তরে চিন্তার খোরাক যোগায়। (২০:১১৩)
(৫) সুলায়মান দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘হে লোক সকল, আমাকে উড়ন্ত পক্ষীকূলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে। নিশ্চয় এটা সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব। (২৭:১৬)
(৬) আমি সব পয়গম্বরকেই তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে। অতঃপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, পথঃভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথ প্রদর্শন করেন। তিনি পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। (১৪:৪)
(৭) এমনিভাবেই আমি এ কোরআনকে আরবী ভাষায় নির্দেশরূপে অবতীর্ণ করেছি। যদি আপনি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেন আপনার কাছে জ্ঞান পৌঁছার পর, তবে আল্লাহর কবল থেকে আপনার না কোন সাহায্যকারী আছে এবং না কোন রক্ষাকারী। (১৩:৩৭)
(৮) এমনি ভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (৪২:৭)
(৯) আপনি কি ভেবে দেখেননি, যাদেরকে কানাঘুষা করতে নিষেধ করা হয়েছিল অতঃপর তারা নিষিদ্ধ কাজেরই পুনরাবৃত্তি করে এবং পাপাচার, সীমালংঘন এবং রসূলের অবাধ্যতার বিষয়েই কানাঘুষা করে। তারা যখন আপনার কাছে আসে, তখন আপনাকে এমন ভাষায় সালাম করে, যদ্দ্বারা আল্লাহ আপনাকে সালাম করেননি। তারা মনে মনে বলেঃ আমরা যা বলি, তজ্জন্যে আল্লাহ আমাদেরকে শাস্তি দেন না কেন? জাহান্নামই তাদের জন্যে যথেষ্ট। তারা তাতে প্রবেশ করবে। কতই না নিকৃষ্ট সেই জায়গা। (৫৮:৮)


দ্রষ্টব্য: আমি সহজভাবে চিন্তা করে যা বুঝেছি তা ই প্রকাশ করেছি; অত্যন্ত কৌশলপূর্ণ ও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে হয়তো উপরোক্ত মতামতের অনেকরকম ভাবার্থ বের করা সম্ভব। তা আমি পরিহার করেছি। ধন্যবাদ সবাইকে পড়ার জন্য।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×