somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের এক ডালিম কুমার সজীব ওয়াজেদ জয়

২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার দেশ পত্রিকার মন্তব্যে পাইছি বাংলাদেশের এক ডালিম কুমার আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বেশ কয়েক বছর বিদেশ থাকার পর যখন দেশে ফিরে এসেছিলেন, বিমানবন্দরসহ সর্বত্র তাকে দেয়া হয়েছিল সংবর্ধনা। শেখ হাসিনার ইচ্ছা ছিল তার উত্তরসূরি হিসেবে তারপরে জয়ই হবেন দলের প্রধান। কিন্তু রাজনীতিবিদের কঠিন দায়িত্ব জয় কী পালন করতে পারবেন? আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তিনি যুক্তরাষ্টের জীবন যাপনে অভ্যস্ত এবং খুশি। যদিও বেশ কয়েকবারই তিনি সেখানে আইনের কঠিন আবদ্ধে ধরা পরেছেন। সাপ্তাহিক প্রোবে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন (২০০৭ সালের ১৭ই জুন আমাদের সময় ) মাতাল হয়ে গাড়ি চালানো, অবৈধ অস্ত্র এবং জয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাপন জয়কে খুব একটা পরিবর্তন করতে পারেনি। তার চরিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বেপরোয়া ভাব বার বার ফিরে এসেছে তার জীবনে। বিভিন্ন রেকর্ড খুঁজে দেখা গেছে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে মাতাল হয়ে গাড়ি চলানো, অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো, রাডার ডিটেকশন ডিভাইসের অবৈধ ব্যবহার এমনকি অবৈধ অস্ত্র রাখা। এসব কৃতকর্মের জন্য তাকে কারাবাসও করতে হয়েছে, মোটা অংকের জরিমানাতো আছেই। শেখ হাসিনা যদি দলের ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে চিন্তা করে থাকেন, তবে জয়ের চেয়ে অনুপযুক্ত প্রার্থী তিনি পাবেন না। জয় মূলত অরাজনৈতিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে চলেছেন। তিনি বাড়িতে জনসাধারণের ভিড় একেবারেই পছন্দ করেন না। তাছাড়া রাজনীতির প্রতি তার অপছন্দও তিনি প্রকাশ করেছেন। আগ্রহ বা কৌতূহল নিয়ে শেখ মুজিবের নাতির সঙ্গে দেখা করতে আসা অনেকের সঙ্গেই জয় অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে গিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আপাত কোনও সম্পর্ক জয় রাখেননি। তার মার রাজনৈতিক দলটির প্রতিও তার কোনও আসক্তি ল করা যায়নি, এমনকি দেশে তার পরিবারের সঙ্গে বসবাস করার ইচ্ছাও তার ছিল না। জয়ের জীবনে প্রেম ও বিয়ে শেখ হাসিনার শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) স্কুল জীবনের এক বান্ধবীর সঙ্গে জয়ের বাগদান হয়। কনে ভারতের এক শিখ পরিবারের মেয়ে। শেখ হাসিনা সরকারি সফরের নামে লন্ডনে গিয়েছিলেন বিয়ের কথা পাকা করতে। সঙ্গে গিয়েছিল আত্মীয়-স্বজন ও পারিবারিক বন্ধু-বান্ধব। আরও সঙ্গে নিয়েছিলেন ঢাকার বিখ্যাত ফখরুদ্দিন বাবুর্চির সহকারীদের। তবে তার একমাত্র শর্ত ছিল মেয়েকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে। কিš' সেই মেয়ে এতে অস্বীকৃতি জানায়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শেখ হাসিনা সেদিনই সকল অনুষ্ঠান বাতিল করে দেন। তিনি সারাদিনই হোটেলের কে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখেন এমনকি কারও সঙ্গে কথাও বলেননি। বিয়ের সেই অনুষ্ঠান আর হয়নি। কোনও অনুষ্ঠান না হওয়ায় অতিথিরা বিরিয়ানি না খেয়েই ঢাকায় ফিরে আসেন। জয় বর্তমানে মার্কিন নাগরিক ক্রিস্টিন অ্যান ওভারমাইন ওরফে ক্রিস্টিনা ওয়াজেদের সঙ্গে বিয়ের বদ্ধনে আবদ্ধ। ২৬ অক্টোবর ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিয়ে হয়। জনৈক রিচার্ড ডি লুমিসের সঙ্গে আগে ক্রিস্টিনের বিয়ে হয়েছিল বলে জানা গেছে। গুজব শোনা গিয়েছিল জয়-ক্রিস্টিনার তালাক আসন্ন। তবে সন্তান জন্মের কারণে সম্পর্কের টানাপোড়েন বা আলাদা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সম্ভবত এখন আর নেই। গ্রেফতার এবং অভিযোসমুহ ১৪ জুন ১৯৯৮, টেক্সাসের টারান্ট কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখা ও মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ১২০ দিনের কারাবাস, ২৪ মাসের প্রোবেশন এবং ৫০০ ডলার জরিমানার আদেশ দেয়। ৬ ফেব্র“য়ারি ২০০৬, ভার্জিনিয়ার হ্যানোভার কাউন্টিতে গ্রেফতার হন জয়। তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়িচালানো এবং বেআইনিভাবে রাডার ডিটেকটর সঙ্গে রাখার অভিযোগ আনা হয়। সাজা একদিনের হাজতবাস এবং জরিমানা। ১৯ মার্চ ২০০০, ভার্জিনিয়ার ফেয়ারপ্যাক্স কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। বিচারে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত তাকে ৩০ দিনের সাসপেন্ডেড কারাবাস সঙ্গে ১২ মাসের প্রোবেশন ও ৪০০ ডলার জরিমানা করা হয়। এছাড়া ২৯ এপ্রিল ২০০১, ভার্জিনিয়ার রাপাহ্যানোক কাউন্টিতে এবং ২০ মে ২০০৪, আরলিংটন কাউন্টিতে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চলানোর দায়ে অভিযুক্ত হন জয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আদালতের খরচও জয়কেই বহন করতে হয়েছে। মা ক্ষমতায় আসার পরই জয়ের পোয়াবারো আওয়ামী লীগ মতায় আসার পর মা যখন প্রধানমন্ত্রী হলেন, তখুনি জয় ব্যবসা শুরু করলেন। তার ব্যবসা ছিল টেক্সাস ভিত্তিক ইনফোলিংক ইন্টারন্যাশনাল (নভেম্বর ’৯৮ থেকে মার্চ ’০১) এবং নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনাল এলএলসি (মে ’৯৮ থেকে আগস্ট ২০০১) এর সঙ্গে। সমুদ্রতল দিয়ে ক্যাবল প্রজেক্টে নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনালের এর মাধ্যমে তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল SEAMEWE-৪ -এর সঙ্গেও। কোনো এক মাহবুব রহমানকে সঙ্গী করে জয় টাইকো কম্যুনিকেশনের (ইউএসএ) সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ২০০৫-এর মার্চে জয় ওয়াজেদ কনসাল্টিং ও সিম গোবাল সার্ভিস নামের আরও দুটো কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে তা হয়েছিল আওয়ামী লীগের মতা চলে যাওয়ার পর। মজার বিষয় হল, এ দুটো কোম্পানির বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৬১ হাজার ও ৩৫ হাজার ডলার। তারপরও জয় ২০০৬-এর ১২ মে তার নিজের নামে ৩৮১৭ বেল ম্যানর কোর্ট, ফলস চার্চ, ভার্জিনিয়া- এ ঠিকানায় ১০ লাখ ডলার দামের একটি বাড়ি কেনেন। এমনকি সেই বাড়ির মালিকানায় তার স্ত্রীর নাম ছিল না। তিনি ২ লাখ ডলার নগদ ও বাকি টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করেন। বাড়ির আসল মূল্য লুকাতে এখানে চতুরতার পরিচয় দিয়েছেন জয়। তার আগে অবশ্য জয় তার স্ত্রীসহ যৌথ মালিকানায় ৭ লাখ ৪৯ হাজার ডলার দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আরেকটি বাড়ি কিনেছিলেন। ব্যবসা যেন এক কাপ চা শেখ হাসিনা মতায় আসার পর জয়ের বোন সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের (পুতুল) স্বামী খন্দকার এম হোসেনও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা শুরু করেন। তবে কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি তার ব্যবসা গুটিয়ে নেন। তার ব্যবসাগুলোর মধ্যে উলেখযোগ্য ছিল, বাংলাদেশ মেটাল এন্ড পাইপস ট্রেডিং কর্পোরেশন, সোনালী ইনকর্পোরেশন, ডগস হোলসেল ইনক, আফসানা ইনক, এবং জাম্পি কর্পোরেশন। মনে হতে পারে, তাদের দুজনের (জয় ও খন্দকার এম হোসেন) কাছে ব্যবসাটা এক কাপ চায়ের মতোই। তবে দুজনের কেউই ব্যবসায় খুব একটা অর্থের মুখ দেখেননি। অথচ ব্যবসায় দুজন আর্থিক সঙ্কটে ভূগেছেন, এমনটাও শোনা যায়নি। হয়তো বা মায়ের আশীর্বাদেই। যুক্তরাষ্ট্রে পুতুল ও তার স্বামীর তিনটি বাড়িঠ সায়মা ওয়াজেদ হোসাইন, ডাক নাম পুতুল। শেখ হাসিনার কন্যা ও জয়ের ছোট বোন। স্বামী খন্দকার মাহাবুব হোসেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে তার উলেখযোগ্য পরিমাণে সম্পদ রয়েছে। হুট করে নয়, বিভিন্ন সময়ে ধীরেসুস্থেই তারা একটি একটি করে সম্পদের মালিক বনেছেন। আর এ কারণেই সব সময় আলোচনা-সমালোচনার আড়ালে থেকেছেন তারা। ব্যবসায়ে লাভের পরিমাণ নামমাত্র দেখালেও পুতুল ও তার স্বামী খন্দকার মাহাবুব বাড়ি কিনেছেন লাখ ডলার দিয়ে। তাও একটি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফোরিডাতে তাদের দুজনের নামে রয়েছে তিনটি বিলাসবহুল বাড়ি। ৪৫৬ নর্থ বে পয়েন্ট ওয়ে, জ্যাকসনভিল, ফোরিডা। এটি একটি ছোট বাসভবন। মালিকানা পুতুল ও তার স্বামী দুজনেরই। ২০০৫-এর ১ নভেম্বর ২ লাখ ৪৫ হাজার ডলার ব্যয়ে তারা এটি মেরিল এন্ড প্রিসসিলা কিংয়ের কাছ থেকে কিনেছিলেন। ৮৪৫ ইয়র্ক ওয়ে, মেইটল্যান্ড, ফোরিডা। এটিও একটি ছোট পরিবার ঘরানার বাড়ি। মালিক দুজনেই। মূল্য ৩ লাখ ১১ হাজার ডলার। ২০৬৫ ডবলিউ ১১৯ এভিনিউ, মিরামার, ফোরিডা। এ ভবনটিরও মালিক স্বামী-স্ত্রী। কেনা হয়েছিল ’৯৮’র ২৮ অক্টোবর। বাড়িটির দাম তখন ছিল ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩শ ডলার।

ডিসক্লেইমার: এইটা আমি লেখি নাই। আমার দেশ পত্রিকার মন্তব্যে পাইছি। আমার নামে আবার ১০ হাজার কোটি ডলারের মামলা কইরেন না। কয়টা শুন্য দিলে দশহাজার কোটি হয় তাও জানিও না। :((
১৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×