somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

পথিকরাজপুত্র
আমি মনোযোগী পাঠক। পড়তে ভালবাসি। পড়ে কোথাও কিছু একটা অসঙ্গতি আছে মনে হলে সেটা আলোচনা করি। ভাল লাগলেও আলোচনা করি, খারাপ লাগলেও আলোচনা করি। কেননা আমি বিশ্বাস করি, পাঠকই লেখক তৈরী করে।

মোবাইল কোম্পানীগুলোকে চরিত্রহীন প্রেমিক বলা যেতে পারে...... (এ থিওরি)

১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মোবাইল কোম্পানির প্রেম দেখে দুনিয়ার তাবৎ প্রেমিকদের লজ্জা হওয়া উচিত বোধহয়! দিন নাই রাত নাই, তাদের ক্ষুদেবার্তার জ্বালাতন আর প্রাণে সয় না। এত প্রেম চাই না তো! তাদের গা জ্বালা ধরানো অফার দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করা ছাড়া বোধহয় আর কোনো উপায় নেই। মাননীয় মোবাইল কোম্পানিসমূহ, আপনারা এত বেহায়া কেন? আপনারা, উদ্ভট সব অফার কেন দেবেন? আমরা চেয়েছি? আপনারা অফার দেয়ার জন্যে অনুমতি নিয়েছেন সিম বিক্রির সময়? সিম বিক্রির সময় কী এমন অপশন থাকা উচিত নয় যে ক্রেতা অনুমোদন দিলে তবেই আপনারা ক্ষুদেবার্তা পাঠাতে পারবেন? কেন আপনারা অফার দিয়ে জ্বালাতন করবেন? সীম বিক্রির সময় অবশ্যই কাস্টোমারকে এই বলে অনুরোধ করবেন যে, ভাই, আপনাকে আমরা রাতদিন এসএমএস দেব। আপনি রাগ করলেও দেব, না করলেও দেব।
যদি আপনাদের এই অনুরোধে লাইক দিয়ে কেউ উদার হয়ে অনুমতি দেয়, তখন যত খুশি এসএমএস পাঠান মানা করছে কে?
এসএমএস বাঙালির মানবিকতার অনেকটা জায়গা জুড়ে আছে, ছিল। যেটা মোবাইল কোম্পানীর মহাজাগতিক সব অফারের ঠেলায় ভেগে গেছে বলা চলে। এক একটা এসএমএস এ এক কালে যে মধুর রেশ ছিল, ভাল লাগা ছিল, সহানুভূতি ছিল তার বেশিরভাগই আজ উধাও। অন্তত আমি টের পাই না। এখন নিয়ম রক্ষার এসএমএস ছাড়া আত্মিক এসএমএস খুব একটা আদান প্রদান হয় না। তো যা বলছিলাম, ভীষণ এক আবেগের জায়গা ছিল এই এসএমএস। কিন্তু বিরক্ত করে ছাড়ে মোবাইল কোম্পানীর এসএমএস গুলো। একবারতো এসএমএস রিংটোন শুনে খুব কাছের একজনের এসএমএস ভেবে দৌঁড়ে গিয়ে চেক করতে গিয়ে উল্টে-পাল্টে পড়ে গিয়ে হাত-পা ভেঙে যাবার উপক্রম হয়েছিল আমার, ভাগ্যিস বেঁচে গেছিলাম। পরে চেক করে দেখি ওটা মোবাইল কোম্পানীর অফার এসএমএস। মেজাজটা খিঁচড়ে গিয়েছিল। আমার ব্যক্তিগত নাম্বারে আপনাদের এসএমএস চাই না। চাই না। চাই না।

আপনাদের আরেকটি অসহ্য কাজ হচ্ছে, চরিত্রহীন প্রেমিকের মত- যে আপনাকে ছেড়ে দিয়েছে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্যে ব্যাপক কান্নাকাটি। যে আপনার বর্তমান আছে তাকে আপনি পাত্তাই দেন না! দীর্ঘদিন ধরে যারা আপনাদের কোম্পানীর সিম ব্যবহার করছি, তাদের কোন সুযোগ দিচ্ছেন না। বাড়তি সুবিধা দিচ্ছেন না। যারা আপনাদের বন্ধ করে অন্য কোম্পানীর সিম ব্যবহার করছে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্যে, বন্ধু সিম চালু করার জন্যে ভুরি ভুুরি অফার দিচ্ছেন। তাহলে আপনাদের চরিত্রহীন প্রেমিক ছাড়া আর কি বলব!

আর আছে আপনাদের রঙচঙে ইন্টারনেট প্যাকেজ অফার। বিদঘুটে অফারগুলো আপনাদের চরিত্র বিকৃত কিছু নীতি নির্ধারকদের মাথা থেকেই নিশ্চয় বেরোয়। মস্তিষ্ক বিকৃত ও বলা যায় তাদের। আচ্ছা আপনারা কি জানেন, আমার থিওরি বলে আপনাদের ইন্টারনেট প্যাকেজের একটি ভয়ানক আউটপুট হচ্ছে ধর্ষণ বৃদ্ধি। এটা নিশ্চয় আপনাদের অজানা নয়? ধর্ষণের পেছনে আরো কারণ থাকলেও এটা, মেজর একটি কারণ। ধর্ষণের উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে এটাকে বাদ দেয়া চলে না।

৯ টাকায় ৫০০ এমবি- মেয়াদ ৭ দিন, ২১ টাকায় ২ জিবি- মেয়াদ ১৪ দিন, ৫ টাকায় জিবি- মেয়াদ ২ দিন, এমবি/জিবি ব্যবহারের সময়- রাত ২টা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত....... এগুলো কাদের জন্যে? কারা এসব অফার নেয়? বেশির ভাগ স্কুল কলেজের ছাত্ররা। বিশেষক করে যাদের বয়স ১২-২৫ বছর পর্যন্ত। কি করে এসব অস্বাভাবিক অফার নিয়ে? পর্ণ দেখে। এছাড়া আর কি? কোন ভাল কাজে অল্প টাকায় বেশি এমবি/জিবি ব্যবহার করা যায়? তাও সীমিত সময়সীমার মধ্যে? কেউ যদি সারামাস ব্লগ পড়ি ও লিখি তাহলেও তো এক জিবিতে হয়ে যায়! যাই হোক এসব বিদঘুটে অফার নেয়া আশি ভাগ কিশোর-তরুণরা পর্ণ দেখে আরামসে। তারপর কি করে? দেখা বিষয় বাস্তবায়নের চেষ্টায় তৎপর হয়। এর ফার্স্ট স্টেপ হয়, গার্লফ্রেন্ড জোটানো। এক বা ততোধিক। গার্লফ্রেন্ড যাদের জুটে যায় তারা অপরাধীর পর্যায়ে পড়ে না। কারণ, গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড ফিজিক্যাল অ্যাটাচমেন্ট সমাজের অনেকের কাছেই বৈধ। কিন্তু এই স্টেপে যারা ব্যর্থ তারাই বেশিরভাগ সময় নেক্সট এন্ড এক্সট্রিম স্টেপে যায়। কেননা মোবাইল কোম্পানীর বরাতে যে বস্তু-জ্ঞান লাভ করে থাকে তার ব্যবহারিক প্রয়োগটা তারা জরুরি ও আবশ্যক ভেবে নেয়।

সবাইকে ঢালাওভাবে দোষী করে লাভ নেই। কিশোর-তরুণদের সবাইযে এই নোংরা মানসিকতায় ইন্টারনেট সুবিধা গ্রহণ করে তা নয়। তবে বিশালসংখ্যক অল্পবয়স্করা এই নোংরা মানসিকতাতেই ইন্টারনেট সুবিধা গ্রহণ করে। আর তার ঢালাও সুযোগ করে দেয় মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলো।

সচেতন পিতা-মাতারা, অভিভাবকদের বিষয়টি খেয়ালে রাখা উচিত। ডিজিটাল সুযোগ সুবিধা কেবল উন্নতি ডেকে আনে তা নয়, এটি সন্তানদের বখাটেও করে তোলার ক্ষমতা রাখে। আমি মনে করি সরকারের দায়িত্বশীল মহল থেকে, মোবাইল কোম্পানিগুলোর এসব অপ্রয়োজনীয় অফারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া উচিত। কেননা ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ কোন উদ্যোগ নিয়ে সুবিধা করতে পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৩২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×