somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুবের মন, পশ্চিমের ক্ষণ: বরফ গলা দুই কাহন

০৫ ই মার্চ, ২০০৮ ভোর ৬:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মির্চা-মৈত্রেয়ী: গল্প নয় সত্যি!

ক্লাশের প্রথমদিন সবার একটা চেষ্টা থাকে বরফ গলানোর। অনেকগুলো অচেনা মুখ প্রায় ষোলো সপ্তাহের জন্য একটা রুটিনে বাঁধা পড়ে যায়। টিচার-রা চেষ্টা করেন প্রত্যেককে দু-তিন জনের গ্রুপে ভাগ করে তাদেরকে চেনা-জানার সুযোগ করে দিতে। আমার ভাগে পড়লো রুমেনিয়ার এক ছেলে। আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি জেনে বলে উঠলো, 'তুমি মৈত্রেয়ী'র দেশের'? আমি বল্লাম পাশের দেশের তবে অভিন্ন ভাষার কথা। আমি বল্লাম 'তুমি 'ন হন্যতে' পড়েছো'? বল্লো, 'না, তবে আমি মির্চার অনেক লেখায় মৈত্রেয়ী'র কথা পড়েছি। বুঝলাম, ঘটনা তাহলে সত্যিই ছিলো...। আমাদের বন্ধু হয়ে যেতে সময় লাগলো না।

ড্রাকুলার মৃত্যু নেই!

সেই বরফ ভাংগা পার্টিতে আমি এবং কাতালিন (মির্চা জুনিয়র) ছাড়াও আরেকজন ছিলো। এর বাড়ি কলম্বিয়ায়, নাম কাঁচি (সিজার)। লাতিন রসবোধও যে খুব একটা কম যায় না সেটা প্রমান করতে সিজার সময় নিলো না। যেই মাত্র কাতা বল্লো যে ওর বাড়ী রুমেনিয়ায়, সাথে সাথে সিজার ছদ্মভয়ে দুহাতে নিজের গলা ঢাকলো। ভৌতিহাসিক-দের মতে, ড্রাকুলার আদি নিবাস নাকি রুমেনিয়ার ট্রানসিলভেনিয়া অন্চলের কোন এক দুর্গে । পরবর্তীতে যখনই সিজার কাতালিন-এর দ্যাখা হতো, সবাই জানতো সিজারের প্রথম কাজ হচ্ছে দুহাতে নিজের গলা আড়াল করা। কে না জানে, ড্রাকুলাদের ত্বষ্ণা সর্বদা মনুষ্য গ্রীবার নাগাল পেতে উদগ্রীব...। সবাই হেসে খুন হয়ে যেতো সিজারের শয়তানিতে।


নেট প্যাহা

তখনো কোর্সওয়ার্কের পালা শেষ হয়নি। ব্যাকপ্যাক কাঁধে টিপিক্যাল ছাত্র। ভার্সিটি-টা একদম ডাউণ টাউনে, মানে, শহরের মধ্যিখানে। ক্যাম্পাস বলতে যে সবুজ ছবিটা মনের মধ্যে উঁকি দ্যায়, এটা মোটেও সেরকম না। অনেক গুলো বিল্ডিং-এর একটা মহানাগরিক হুলুস্থুল বড়জোর।
এ দেশেও ফকির-মিসকিন চোখে পড়ে, বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে। বিলাতি ইংরেজী অভিধানের beggar শব্দটার এদেশে চল নেই। এদেশে হাতপাতা মানুষদেরকে বলে pan handler (প্যাহা)।
মুখচেনা এক প্যাহা একদিন আমার এক পরিচিত লোকের কাছে কুড়ি ডলার চেয়ে বসলো। ভদ্রলোক জানতে চাইলেন ঠিক কুড়ি ডলারের কি প্রয়োজন। প্যাহার অকপট উত্তর , শীতের মধ্যে বাটি(pan) হাতে দাঁড়িয়ে থাকা আর ভালো লাগে না। একমাসের জন্য ইণ্টারনেট কানেকশন-নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে বাড়িতে বসেই.....। গল্পে অপরিচয়ের বরফ গললো। আমরা বন্ধু হলাম।

[সংবিধিবদ্ধ স্বীকারোক্তি: এগুলো নিছক মজার গল্প হিসেবে বলা। কাউকে কিম্বা কোন পেশাকে বড়-ছোট কিছুই করার কোন উদ্দেশ্য নেই, কখনো ছিলো না।
অনেক দিন কাতালিনের সাথে অনেক সময় কাটিয়েছি, কোনদিন গলার উপরে দাঁত বসাবার চেষ্টা করেনি। প্যাহা কেউ শখ করে হয়না। অনেক কষ্টে হয়। দরকার পড়লে আমিও হবো। ডাউন টাউনের কয়েকজন প্যাহা-বিশেষ করে সেই অন্তর্জালিক ছেলেটা আমার বন্ধু, ওদেরকে কেউ বংগবাজার থেকে আদি ও আসল হিমু কোম্পাণীর হলুদ পান্জাবী কিনে দিলে খুব ভালো লাগবে। সেই সাথে আমাকেও একটা! কলারের মাপ ষোলো, হাত ৩৬-৩৭]
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০০৮ ভোর ৫:২৩
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×