আমি গত তিন মাস আগে চাকরি ছেরে দিয়ে ব্যাবসা শুরু করি। অনলাইন ভিত্তিক ফার্নিচার ব্যাবসা। গত তিন মাসে আমি প্রচন্ড পরিশ্রম করে এই ব্যাবসাটা কে একটা অসাধারন পর্যায়ে পৌছাতে সচেস্ট হয়েছি। অলরেডি আমার একটা সেটআপ স্টাবলিশ হয়ে গিয়েছে। এই সেটআপ এর বিপরিতে আমি প্রচুর কাজ পাচ্ছিলাম। অলরেডি আমার পার্টনার আমাকে প্রস্তাব দিয়েছেন আমরা একটা ফার্নিচার এর ফ্যাক্টরি করে ফেলবো জানুয়ারিতে।
কিন্তু এখন এগুলো সবই কল্পনা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কারন আমাদের পুরো ব্যাবসাটা নির্ভর করছিলো ফেসবুক এর উপরে। ফেসবুকেই মুলত আমাদের কাজের মার্কেটিংটা চলতো। অনেকগুলো কাজকরে শেষ করে সেগুলোর ছবিতুলে রেখেছি ফেসবুকে আমাদের পেইজে শেয়ার করবো বলে। আমার আশা ছিলো আমি আমার ডিফারেন্ট আইডিয়াগুলো ফার্নিচার জগতে নতুনত্ব আনতে চেস্টা করবো। আমি আসলে কারো কাছে অভিযোগ করছি না। নিজের দুঃখগুলো প্রকাশ করছি না। আমি জাস্ট আমার বর্তমান সিচুয়েশনটা বর্ননা করলাম।
সরকার আসলে যেই ভয়ের জন্য ফেসবুক বন্ধ করেছে এটা সরকারের সিমাবদ্ধতার জন্য করেছে। প্রযুক্তি খুবই মারাত্মক একটা পর্যায়ে আছে বর্তমান সময়ে। সরকার ধারনা করছে তারা অনলাইন বন্ধকরে অফলাইনের যোগাযোগ বন্ধকরতে পারবে। এটা ভাবলে আসলেই সরকার মারাত্মক ভুল করবে। কারন আমরা সবাই এখন ফেসবুক চালাচ্ছি। এটা ধরার কোন উপায় নাই সরকারের কোন সংস্থার। আমি এখানে সরকারের সমালোচনা করছি না। আমি সরকারকে কিছু অসাধারন উপায় বাতলে দিচ্ছি।
পুলিশ:- সরকারের প্রধান টার্গেট থাকা উচিত পুলিশ বাহিনিকে আপটুডেট করা প্রযুক্তিগত ভাবে। ধ্বজাভংগ্ এই পুলিশ বাহিনি ঠিক কিভাবে এখনো এই দেশে সন্ত্রাসিদের সামনে টিকে আছে সেটাই আশ্চর্যজনক বিষয়। হয়ত সন্ত্রাসিরা অতটা আপগ্রেড হয়নি। পুরো পুলিশবাহিনিকে একটা সেন্ট্রাল কমান্ডের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। প্রতিটা থানা, প্রতিটা রেব এবং সিআইডি অফিস একটা নেটওয়ার্কের আন্ডারে আসবে। অবশ্যই সেটা একটা সিকিউরড নেটওয়ার্ক হবে।
প্রতিটা থানার প্রতিটা ডিউটি অফিসারের হাতে অত্যাধুনি মোবাইল থাকতে হবে। স্যামস্যাং সামরিক বাহিনির জন্য এধরনের কম্যুইউনিক্যাশন ডিভাইস তৈরি করে দেয়। মুলত এই ডিভাইসগুলো সরাসরি সেন্ট্রাললি কন্ট্রোলড থাকবে্। অফিসারদের লোকেশন এবং তাদের সমস্ত কার্যক্রম কেন্দ্র থেকে পরিচালনা করা হবে। বর্তমানে যে ওয়ারলেস সিস্টেমটা পুলিশ ব্যাবহার করে এটার অবস্থা হচ্ছে বাচ্চাদের খেলনা কাপফোনের মতন। যেকেউ চাইলে এটাতে ঢুকে বসে থাকতে পারবে।
এর পরে আসে ড্রোন। আমি মনে করি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জন্য এই মহুর্তে প্রয়োজন সার্ভেইলেন্স ড্রোন। এই ড্রোন নিয়ে আমি অবশ্য অলরেডি কাজ শুর করেছি। তিনজন মেধাবি ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে কাজ শুরু করেছি। কেউ চাইলে আমার সেই প্রজেক্টএর সাথে যুক্ত হতে পারেন। আমি সরকারকে এই ড্রোনটা দেখাবো আশা করছি আগামি বছর। আমি জানি তারা সেটা মোটেই একসেপ্ট করবে না। তবে আমি আশা করছি সেটা এক্সপোর্ট করার একটা চান্স আছে।
ড্রোনগুলো মুলত যেটা করবে তা হচ্ছে অবজার্ভ করবে। পুরো ঢাকার আকাছে ৩০ টার মতন ড্রোন যদি উরিয়ে দেয়া যায় তবে সরকার নাকে তেল দিয়ে আরামসে ঘুমাতে পারবে। পুলিশ যেকোন সময় যেকোন স্থানের অবস্থা জানতে পারবে এবং এর কাছাকাছি থাকা যেকোন অফিসারকে সাথে সাথে মুভকরাতে পারবে। ড্রোনগুলো সেন্ট্রাল থেকে কমান্ড হতে হবে। এতে যদিও নাগরিকদের প্রাইভেসি নিয়ে সমস্যা হতে পারে তবে সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য অসাধারন একটা বিষয় হবে।
একটা শক্তিশালি সেন্ট্রাল সার্ভার করতে হবে পুলিশ এর জন্য। এই সার্ভারটা শুধুমাত্র ডাটা সংরক্ষন এবং এনালাইসিস এর কাজ করবে। কাগজ নিয়ে দৌরাদৌরি বন্ধ করতে হবে। প্রতিটা থানাতে জিডি গুলোকে সেন্ট্রালি নিয়ে আসতে হবে। এতে যেকোন অর্গনাইজ ক্রাইম বা যেকোন অনাকাংখিত আন্দোলন খুব সহজে ধরতে পারবে পুলিশ।
আর একটা জিনিষ নাই আমাদের পুলিশ এর। আর তা হচ্ছে ট্রান্সপোর্টেশন। আমি জানিনা স্বরাস্ট্র মন্ত্রনালয় এর হিসাবে কি বলে তবে আমার জানা মতে ঢাকা শহরের কোন থানারই পর্যাপ্ত তো দুরের কথা সর্বনিম্ন পরিমান গারিও নাই পেট্রোল দেয়ার জন্য। ডিউটি অফিসার সাধারনত ডিউটিদেয়ার জন্য গাড়ি ভিক্ষা করতে নামেন। আর এক জনের গাড়ি ধার করে নিয়ে তার পরে নামতে হয় ডিউটিতে। আর গাড়ির অবস্থাদেখলে চোখে পানি চলে আসে। এই পাবলিক ট্রান্সপোর্ট দিয়ে তারা নিজেরাই হরহামেশা এক্সিডেন্ট করে বসে।
আমাদের সিআইডি অফিসাররা সম্ভবত তাবৎ দুনিয়ার সবচেয়ে ইন্টেলিজেন্ট লোক। কারন কোন প্রযুক্তির ছোয়া ছারাই তারা যে ঠিক কিভাবে এত বড় বড় আন্দোলন থাামায় সেটাই আশ্চর্য লাগে আমার কাছে। একবার ভেবে দেখে এদের হাতে যদি সঠিক গিয়ারগুলো থাকতো তবে তারা পুরো দেশকে একটা ধাক্কায় ঠান্ডা করে ফেলতে পারতো কঠিন সময়গুলোতে। তাই সিআইডিকে আরো প্রচুরি গিয়ার দিতে হবে। দিতে হবে প্রচুর মাইক্রোক্যামেরা, মাইক্রোফোন সহ সঠিক কমিউনিক্যাশন ডিভাইস।
বিটিআরসি:- নাম শুনলেই আমার মেজাজ প্রচন্ড খারাপ হয়। আমার জীবনে দেখা শ্রেষ্ঠ ঘুষখোর আর চোরগুলোকে বিটিআরসিতে দেখেছি আমি। এর মধ্যে এমন সব লোক চাকরি করে যে ভালো করে মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড চালাতে জানে না। অনেকেই আছে ঠিক কিভাবে উইন্ডোজ সিস্টেমটা কাজ করে তা জানে না এমনকি অনেকে ভালোকরে উইন্ডোজ সেটআপও দিতে পারে না। সবচেয়ে হাস্যকর এবং মজার বিষয় হচ্ছে বিটিআরসির এক উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাকে দেখেছিলাম তিনি তার নতুন ল্যাপটপের অনকারা সুইচ খুজে পাচ্ছিলেন না। ভদ্রলোক ১৫ মিনিট খুজে শেষ পর্যন্ত আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। নাম উল্লেখ করছি না।
এদেরকে দিয়ে আপনি অনলাইন ক্রাইম বন্ধ করার কথা ভাবলে সেটা ছাগলদিয়ে হাতির কাজ করানের মতন হবে। এরা ছাগলের চেয়েও অধম। ফেসবুক তো ভারত নিজেরাই কন্ট্রোল করে থাকে। সেটা কিভাবে করে সেটা কি এদের জানা আছে। একটা বিশাল সার্ভার স্থাপন করে ফেসবুকরে যদি বলা হয় আমার সাথে চুক্তিকরো তাহালে ফেসবুক হাসতে হাসতে সবকিছু তুলে দিতো সরকারের হাতে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এটাই করেছে। কিন্তু আমাদের বিটিআরসির চোরেরা তো জানেইনা আসলে সার্ভার কি জিনিষ। ছোটখাট একটা সার্ভার এদেরকে যদি দেখানো হয় তবে আমার ধারনা এটা হার্টএটাক করবে সেটার হার্ডড্রাইভ আর প্রসেসর এর সংখ্যা শুনে।
সরকারের বিটিআরসি ঢেলে সাজানো উচিত। সবগুলোরে খেদায়ে দিয়ে নতুনদের স্থান দেয়া উচিত। এই সেক্টরে সবচেয়ে মেধাবি লোকগুলোকে এখানে চান্স দেয়া উচিত। আমি আবারো বলছি জঙ্গিরা যেভাবে অনলাইনে শক্তিশালি হচ্ছে তাতে সামনের দিনগুলোতে সরকারকে আরো শক্তসময় পার করতে হবে যদি না তারা তাদের এই ভাঙ্গাচোরা বিটিআরসিকে আধৃনিকায়ন করে। যদি এটা না পারা যায় তবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর জন্য আলাদা একটা ডিভিশন তৈরি করে সেটাকে নতুন করে সাজানো হোক।
আমি জানি এই লেখা আসলে কারো কানেই পৌছাবে না। এগুলো আসলে আমার মাথায় ঘুরতে থাকা বিশাল একটা পরিকল্পনার একটা ক্ষদ্রাংশ মাত্র। আরো আরো আরো অনেক অনেক খুটিনাটি বিষয় ছিলো আমার কাছে। কিন্তু এগুলো যেহেতু কখনোই সঠিক কান পর্যন্ত পৌছাবে না তাই এগুলো অব্যাক্তই থেকে যাবে। তার পরও ভাবলাম আমার ব্লগে বিষয়গুলো লিখে দেই। মাথাটা একটু হালকা হবে।
ব্যাবসার বিষয়টাতে আবার আসছি। জানিনা কবে আবার ফেসবুক খুলবে। সম্ভবত তিন থেকে চারটা নতুন আইডিয়া নিয়ে নামতে যাচ্ছি। আমি চেস্টা করছি বাংলাদেশের প্রথম ফেসবুক ভিত্তিক স্বাস্থসেবা দেয়ার জন্য। সবগুলো হাসাপাতল, ডায়গনিস্টক সেন্টার এবং ডাক্তারগুলো এক দরি দিয়া বেধে ফেলবো। একটা মোবাইল এপস এর মধ্যে নিয়ে এসে ফেসবুকে ছরিয়ে দেবো। এতে ঢাকার অত্যাধিক দামি ডাক্তার দক্ষিনাঞ্চলের অজপারাগায়ের গরিব মানুষ পর্যন্ত পৌছাতে পারবে। ভালো ওষুধগুলো পৌছাবে তাদের পর্যন্ত। এছারা আরো কিছু প্লানিং নিয়ে বসে আছি। যেমন আমি বাংলাদেশে বড় আকারে প্রিফেব্রিকেটেড হাউজিং করা শুরু করবো। ইটা-বালু-সিমেন্ট আমাদের পরিবশে ধংস্ব করছে এবং ভুমিকম্পের জন্য মারাত্মক ঝুকিপুর্ন করে ফেলছে। কিন্তু আমার এই বাড়িগুলো হবে হালকা এবং অত্যান্ত মজবুত এবং টেকশই এবং পরিবেশ বান্ধব। এটার কাজও শুরু করেছি। ইনভেস্টরদের সাথে আলাপ করছি। যদিও এখন সেভাবে কাউকে পাইনি।
জানিনা এগুলো কি প্লানিংই থেকে যাবে নাকি কোনদিন বাস্তবতা মুখ দেখবে। তবে এই সরকারের কাজের স্টাইল দেখে আশা করেছিলাম এরা বুঝতে পারবে আমাকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত হাতশ হচ্ছি। সরকারের উচিত চোর, অলস আর সুযোগসন্ধনিগুলোকে ছুরে ফেলেদেয়া। না হলে এরাই সুযোগপেলে সরকারকে ক্ষমতা থেকে ছুলে ফেলেদেবে। আমি সত্যিকার ভাবে চাইনা বর্তমান সরকার ক্ষমতা ছারুক। শুধু তারা সঠিক ভাবে উল্টোপাল্টা না করে তাদের মতন করে যদি চলতে থাকে তবে আমিও এগিয়ে যেতে পারবো। সেটাই আমাকে আশাবাদি করছে এইমুহুর্তে। তার পরও ফেসবুক বন্ধে আমি হতাশ। হাতাম ঢাকতে পারছিনা কিছুতেই।