১. দিল্লিকে অঘোষিত ভাবে 'ধর্ষণের রাজধানী' বলা হয়। 'নির্ভয়া' ধর্ষণ ও হত্যা ছিল অভিনব। চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় পুরো ভারতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। আমরা আবার তখন তৃপ্তির ঢেকুর তুলছিলাম যে, আর যাই হোক 'আমাদের ধর্ষকরা' এত খারাপ না। তবে আমাদের সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে তারা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই চলন্ত বাসে ধর্ষণ ও হত্যার সূচনা করে। সম্ভবত তার প্রথম শিকার রুপা। বরাবরের মত রুপার ধর্ষকরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গ্রেফতার হয়। চারজনের ফাঁসির রায় হয়...
২. সম্প্রতি রুপার মতই আরেকটা মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের নাড়া দিয়েছে। কিশোরগঞ্জের নার্স শাহীনুরকে একই ভাবে ধর্ষণ ও পরে হত্যা করা হয়। যদিও ঢাবি, শাবি বুয়েটের না হওয়াতে নারীবাদি, চেতনাজীবিদের এখনও রাস্তায় পাওয়া যাচ্ছে না। ধর্ষকরা ধরা পড়েছে। স্বীকারও করেছে। এখন তারা ঢুকে যাবে আইনের মধ্যে। এমন এক আইন আমাদের সব স্বীকার করার পরও চলতে থাকবে প্রক্রিয়া। তারপর দীর্ঘদিন পর কারো ফাঁসি নয়তো যাবজ্জীবন হবে...
৩. ধর্ষণ বন্ধ করার ব্যপারে অনেকের অনেক মতামত আছে। সবচেয়ে বেশী মত এসেছে শাস্তির ব্যপারে। শাস্তি আবার চলমান আইনের মত নয়। মধ্যযুগীয়, 'আরব', 'বর্বর'দের মত প্রকাশ্যে ফাঁসি। 'গলা কাটা' শাস্তি আধুনিক চেতনায় আঘাত লাগতে পারে বিধায় দেশী আইনের ফাঁসিকেই আমরা রাখতে চাই। তবে তা যেন হয় সবার সামনে। যাতে, আসন্ন ধর্ষকদের মনে একটু হলেও ভয় ঢুকে। শিশু ও বয়স্কদের না হয় দেখা থেকে বিরত রাখলাম আমরা। কিন্তু পটেনশিয়াল ধর্ষকদের সামনেই যেন ফাঁসিটা হয়। ড্রামের উপর দড়ি গলায় দিয়ে রাখা হবে। তারপর মেজিস্ট্রেট রুমাল ফেলে অথবা ইশারা করলে পুলিশ বা দীর্ঘদিন সাজাভোগকারী কেউ এসে ড্রাম সরিয়ে দিবে। ধর্ষক ফাঁসিতে ঝুলে মৃত্যুবরণ করবে সবার সামনে...
৪. জানি, আমাদের এই চাওয়া সভ্য দেশের সাথে যায় না। কিন্তু আপনার বোনের বা কন্যার ধর্ষকের বেলাতেও কি আপনি চাইবেন না দৃষ্টান্তমূলক কঠিন শাস্তি হোক? তখনও কি আপনি ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে থাকবেন? তখনও কি আপনি হারকিউলিসের মত কাউকে চাইবেন না? আপনি কি আপনার 'চেতনা' নিয়ে পড়ে থাকবেন?
৫. রুপা, শাহীনুর শিক্ষিত কর্মজীবি নারী ছিল। তারাই যদি এ ঘটনার শিকার হয় তাহলে আমাদের বোন, মেয়ে কেউই নিরাপদ নয়। যে জাতি জার্সির রং বিষয়ক তুচ্ছ 'চেতনা' নিয়ে তোলপাড় করতে পারে সে জাতি ধর্ষণের মহামারী বন্ধ করতে পারবে না তা আমি বিশ্বাস করি না...
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৯ দুপুর ১২:১২