আটপৌরে
- হাবীবুর রহমান
যদি থাকতো কাঠা তিনেক জায়গা ইস্কাটনে কিম্বা সিদ্ধেশ্বরীতে ,
বাবূইয়ের বাসার মতো ছোট একটি ঘর বানাতাম মুলি বাঁশের ।
তার উত্তরে সাধারণ কলাবাগান
আর দক্ষিণে সারি সারি তিনটি নিমফলের গাছ
-পূব কোণের লাউতলাটা চড়িয়ে দিতাম চালে ।
আর পশ্চিমে থাকতো তরকারির বাগান একফালি ।
আমার আটপৌরে বউটা নিমের শিকড়ে গরু বেধে
মাটির কলসীতে পানি ঢালতো বেগুনের চারায়-
আর রাগ করতো বারে বারে আমার ওপর
যেমনটি করেনি কোনদিনও,
ওর অভিমানী গন্ডে পশ্চিমের বুড়ো সুয্যিটার আভা
ছড়িয়ে পড়তো হাসির ছটার মতো-
আর কেউ না-হাসুক
অন্তত আমি হাসতাম যতোটা মিষ্টি করে সম্ভব !
এদিকে আমার বাবলু আর রুবি মেতে থাকতো খেলায়,
ঘাসের বিচি আর বালুর কুচি
ঐ পূব দিকের পায়ে-চলা পথের দক্ষিণ মুড়োয়
দরমা-দিয়ে-ঘেরা যে খেলার জায়গা থাকতো ওদের সেইখানে-
হয়তো সেই খেয়ালেই রাগ ভাঙ্গতো গৃহিণীর-
তাড়াতাড়ি নিজের হাতে রান্না করা
শাক- ব্যঞ্জন নিয়ে খাওয়াতে বসতো ওদের ।
লাউয়ের কচি ডগায় হাওয়া জাগতো পূব-আকাশের,
নিমের শাখায় কথা কয়ে উঠতো দুটো গাঙ্ শালিক-
গরুটা হয়তোবা হাম্বা ডাকতো বাছুরের খোঁজে ।
রৌদ্র-ছায়ার নৈমিত্তকতায় দিন কাটতো মুক্তির নৈসর্গিক আনন্দে ।
আজকের এই ভাড়াকরা ফ্রেমে-আঁটা ইটের কারাগারে
আবদ্ধ জীবনে তাই প্রতিদিন সকাল-বিকাল ভাবি
যদি থাকতো কাঠা তিনেক জায়গা ইস্কাটনে কিম্বা সিদ্ধেশ্বরীতে ,
যদি থাকতো ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:১৯