somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্বাচনের দিনে হাজার মাইল দূরে বসে লেখা একখানা দিনপঞ্জি …

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে এখন ভোটগ্রহন চলছে দেশে। প্রথমবারের মতো ভোটার হওয়া স্বত্তেও ভোট দিতে পারছি না দেশের বাইরে থাকার কারনে।দেশে ফোন দিলাম এক মামাতো ভাইকে। আমার থেকে কয়েক মাসের বড়। ছেলেবেলায় বিভিন্ন উৎসবে আমরা একই রঙের জামা-কাপড় কিনতাম। এখন অবশ্য দুরত্ব তৈরি হয়েছে, দেখা সাক্ষাত কম হয় বলে। বেচারা আমার চেয়ে অনেক অনেক সহজ সরল। ফোন ধরেই বলে, আজকে তো আমাদের দেশে ইলেকশন, জানস নাকি? ঝাঁড়ি দিয়ে বললাম, ব্যাটা, এইটা কি শুধু তোর দেশ নাকি? দেশে ইলেকশন আর আমি জানবো না মানে? বেচারা চুপসে গেল! (একা একা প্রথম ভোট দাও, এইবার বুঝ মজা)

বড়দিনের ছুটি হলেও, একটা জরুরী রিপোর্ট লেখার কাজ বাকী। কিন্তু একফোঁটাও মনযোগ বসছে না। আগের দুটি সংসদ নির্বাচনে রাত জেগে ফলাফল দেখেছিলাম। এবার সেই আমেজটুকু অনুপস্থিত, তবু প্রচন্ড আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছি। নির্বাচনের খবর জানতে ইন্টারনেট ছাড়া কোন উপায় নেই। আমার ব্লগ আর আরেকটা সাইটের কল্যানে দুটি বাংলা চ্যানেল লাইভ দেখতে পারছি।

এইবার আমাদের সমবয়সী অনেক বুঝদার (আমাদের অঞ্চলে কাবিল প্রকৃতির মানুষদের ‘বুঝদার’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়) পোলাপান ঢালাওভাবে ‘না’ ভোটের পক্ষে প্রচারনা করেছে। বিষয়টির মাঝে কেমন যেন ডিজুস ডিজুস গন্ধ পেয়েছি। ‘না’ ভোট দেয়ার মানুষেরা বলছেন, কোন যোগ্য প্রার্থী নেই, সব চোর। খুবই ভালো কথা। বন্ধুবান্ধব (যারা ‘না’ ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে) কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলাম, কে কে দাঁড়িয়েছে? বেশির ভাগই বড় দুটি দলের বাইরে কারো নাম ঠিকঠাক বলতে পারলো না! অথচ তারা ঢালাওভাবে ‘না’ ভোট দেয়ার আহবান জানিয়েছেন। সুতরাং, তাদের এই সচেতনতার (?) ফাঁকফোকরে এবারও প্রচলিত নেতারাই নির্বাচনের বৈতরনী পার হবেন মনে হয়। কারন, ধোলাইকৃত মস্তিস্কের মানুষেরা ‘না’ ভোট নিয়ে মাথা ঘামাবে না। তারা ঠিকই নিজেদের মার্কাতে সিল মারবে। তাই এ নিয়ে এক জায়গায় একটি ব্লগও লিখেছিলাম। অনেকে অবশ্য বলেছে, এখন ‘না’ ভোট নিয়ে লাফালাফি করলেও ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সিল মারার আগে বেশীর ভাগই মতামত পরিবর্তন করবে, ‘না’ ভোট দেবে না। অপেক্ষাকৃত যোগ্য ও সৎ প্রার্থীকে ভোট দেয়ার চেষ্টা করবে। গেলে মন্দের ভালো যাওয়াই ভালো।

আজ প্রথম আলো-তে ড. জাফর ইকবালের একটি কলাম পড়লাম, বেশ ভালো লাগলো। এই মানুষটাকে বেশ শ্রদ্ধা করি। কারন- অন্যদের মতো কথার মারপ্যাঁচে যান না, দাঁতভাঙ্গা শব্দ ছাড়াই সোজাসাপ্টা কথা বলেন। ‘না’ ভোটের ব্যাপারটাতেও তার অবস্থান বেশ ভালো লেগেছে। আসনভেদে ‘না’ ভোট সঠিক সিদ্ধান্ত সঠিক হতে পারে, তবে ঢালাওভাবে না। সবশেষে তিনি বলেছেন, এবার নির্বাচন নিয়ে তার প্রত্যাশার কথা। তিনি আশা করেন, এবার যুদ্ধাপরাধীদের ‘না’ বলবে বাংলাদেশের তরুন সমাজ। কথাগুলো কিছুদিন আগে বললেও আমাদের বয়সী অনেকেই সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারতো এবারের নির্বাচন নিয়ে। আজ অনেকেই ভোট দিয়ে আসার পর পত্রিকা খুলবে, অনেকে খুলবে না। আজ চোখ বেশি থাকবে টিভিপর্দায়।

যারা স্বপ্ন দেখে, তারা কিছু একটা করে। আমি জেগে জেগে ঘুমাই। অবসর সময়ে ব্লগে হাতি ঘোড়া মারি। ব্লগীয় রাজাকারদের মাইনাস দিয়ে আত্মতৃপ্তি খুঁজি, ভাবি যাক আজ কিছু একটা করলাম। বুকে মানচিত্র আঁকা টি-শার্ট পড়ে ভাবি, আমি মস্ত দেশপ্রেমিক। ভাবি, আমার মতো কে ভালোবাসতে পারে এই দেশটাকে। শুধু নিজের স্বার্থে আজ হাজার মাইল দূরে বসে আছি। পাল্টে দেয়ার স্বপ্ন দেখার অধিকার আমার নেই, কারন আমি কিছু করিনি। তবু আজ আশা করছি, যারা একাত্তরে দেশমাতৃকার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তাদেরকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার গ্লানি থেকে মুক্তি পাবে বাংলাদেশ। যে হাতগুলো এখনও খামছে ধরে আছে লাল-সবুজের পতাকা, সূর্যের বদলে এঁকে দিতে চাইছে অপপাকিস্থানী চাঁদ-তারা সেই হাতগুলো আজ ভেঙ্গে যাবে একে একে…

_______________________________
ড. জাফর ইকবালের কলামটি পড়তে পারেন এখানে


৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×