somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অলিম্পিক, চীন ও ফ্রান্স সম্পর্ক এবং Carrefour বয়কট

২৬ শে এপ্রিল, ২০০৮ সকাল ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই আগস্টেরই ৮ তারিখ অলিম্পিকের পর্দা উঠবে চীনে। এই মহাযজ্ঞের আয়োজনে বেইজিং সহ আরো কয়েকটি আধুনিক শহর পুরোপুরি প্রস্তুত। অলিম্পিক নিয়ে চীনাদের উতসাহ-উদ্দিপনা, কর্মকান্ডও দেখার মতো। রাতে দেখি একরকম, সকালে অন্যরকম। এক রাস্তায় গাছ নেই, দিনে দিনেই অন্য জায়গা থেকে বিশাল বিশাল গাছ এনে বসিয়ে দেয়া হচ্ছে। ঘাস নেইতো কি হয়েছে, পুরো মাটিসহ ঘাস উঠিয়ে নিয়ে আসছে। সমাজ তান্ত্রিক চীন তার অভুতপূর্ব উন্নতি আর কর্মদক্ষতা প্রদর্শনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে যেন।




চীনে আইন শৃংখলা ব্যবস্থা তুলনামূলক শক্ত; নূন্যতম অপরাধের শাস্তিও কখনো কখনো খুবই মারাত্মক। আর কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে গেলেতো কথাই নেই, জীবন নিয়ে টানাটানি। আইন সেখানে আর খাটেনা। চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতি তাই পশ্চিমা বিশ্বের কাছে সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ। আর অলিম্পিকের কারনে চীনের আইন শৃংখলা ব্যবস্থা এখন আরো কঠোর। সারাদিনই পুলিশের গাড়ির অযথা প্যাঁ প্যুঁ। ট্রেডিশনের বাইরে গিয়ে অনেক বড় বড় সাংবাদিক সন্মেলনও হয়ে গেল কয়েকটা। ঘুরে ঘুরে বিদেশিদের দেখালো তাদের সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কিন্তু চীনা সরকার যতটা ভেবে ছিল ততটা বোধহয় আর হচ্ছেনা। অলিম্পিককেই পুঁজি করেই কিছুদিন আগে আবার স্বাধিকার আন্দোলনে নেমে পড়ে তিব্বতিরা। তিব্বতি ভিক্ষু, জনসাধারন নির্বিশেষে রাস্তায় নেমে এসেছিল। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয় অতিব্বতি চীনাদের (সাধারন চীনারা হান গোষ্ঠিভুক্ত) ঘর-দোর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। চীন সরকারও নির্মমভাবে দমন করে তা। তিব্বত কয়েকদিনের জন্য হয়ে পড়ে সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় সব বিদেশিদের উপর তিব্বত ভ্রমনে। বহিবিশ্ব তাই জানতে পারল খুব সামান্যই। কিন্ত তিব্বতিরা থেমে যায়নি, তারা তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি এখনো চালিয়ে যাচ্ছে ভিন্ন ভাবে।

অলিম্পিকের মশাল গ্রিসের সেই অলিম্পিয়া পাহাড়ের পাদদেশে সৌর রশ্নি থেকে প্রজ্জলিত হওয়ার পর এখন সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়াচ্ছে; আগস্টে আসবে চীনে। তিব্বতিরা তাই এখন অলিম্পিক মশাল র‌্যালির জায়গা গুলোতে জড়ো হয়ে চীন সরকারের দমন নীতির প্রতিবাদ জানাচ্ছে আর বিশ্ববাসীকে তাদের স্বাধীকার আন্দোলনে সমর্থন দেয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছে। অনেকেই মতামত ব্যক্ত করছে যে চীন সরকারের কর্মকান্ড অলিমপিকের মূল স্লোগান 'বিশ্ব ভাতৃত্ব' এর বিপরীত। কিছুদিন আগে অলিমপিক মশাল ফ্রান্সেও বড় ধরনের প্রতিবাদের সন্মুখিন হয়। প্রবাসী তিব্বতিদের পাশাপাশি সাধারন ফরাসীরাও মশাল র‌্যালির সময় চীন সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। কিছু বিক্ষুদ্ধ তিব্বতী মশাল কেড়ে নেয়ার ও চেষ্টা করে। ফরাসি জনগন তাদের সরকারকে আহবান জানায় সারাকোজি যেন অলিম্পিকের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন না করে। স্বাভাবিকভাবেই চীন সরকার ও জনগন এটিকে ভাল চোখে নেয়নি। তাই তারা যখন শুনল Carrefour গোপনে তিব্বতিদের কাউকে ফান্ড দিয়েছে কিংবা/এবং তিব্বতি স্বাধীনতা আন্দোলনে গোপন সমর্থন (যদিওবা Carrefour অস্বীকার করেছে পুরো ব্যাপারটাই) দিয়েছে তখন তাদের আর ঠেকায় কে? চীনা কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুন তরুনীরা দলে দলে রাস্তায় নেমে এসেছে Carrefour ও ফরাসি সরকারের বিরুদ্ধে। Carrefour কে বয়কটেরও ডাক দিয়েছে ইতিমধ্যে। একের পর এক শহরে Carrefour স্টোরগুলো বিক্ষোভের সন্মুখিন হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা Carrefour এর চারপাশ ঘিরে রেখে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে। বয়কটের কারনে ইতিমধ্যে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম এই চেইন সুপার মার্কেটের ব্যাবসায়ও নেমেছে ধস। তাই ক্রেতা আকর্ষনের জন্য Carrefour সস্তায় জিনিস ছেড়ে দিতেও দ্বিধা করছেনা এখন।

Carrefour প্রধান নাকে কানে খত দিয়ে বলছে তারা চীনাদের পাশেই আছে। চীন ও ফরাসী দূতরাও ব্যস্ত একে অপরকে বুঝাতে, সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে। আর আমি ধান্দায় আছি কখন একটু সময় পাই Carrefour যামু আর বগল বাজামুB-)

(Wal mart এর পরেই Carrefour বিশ্বের ২য় বৃহত্তম চেইন রিটেইলার। শুধু চীনেই এর ১১২ টি স্টোর আছে যেখানে ৪০ হাজার লোক কাজ করে। শুধু চীনেই এর বাৎসরিক বিক্রি ৩০ বিলিয়ন ইউয়ান বা ৪.৩ বিলিয়ন ডলার)

[এখানে তিব্বত নিয়ে চীনা ই-ম্যাগাজিনের] একটি লিংক দিলাম। ভাল লাগলে আরো দিব।


লেখাটি একইসাথে 'আমার ব্লগ ' এ ও প্রকাশিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৮ রাত ৮:০৭
৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অণু থ্রিলারঃ পরিচয়

লিখেছেন আমি তুমি আমরা, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


ছবিঃ Bing AI এর সাহায্যে প্রস্তুতকৃত

১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭ সাল।
দাবানলের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
যে যেভাবে পারছে, নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। একটাই লক্ষ্য সবার-যদি কোনভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×