somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এম. বোরহান উদ্দিন রতন
আমি এম. বোরহান উদ্দিন রতন, জন্ম : বাংলাদেশের ফেনী জেলায় দাগনভুঁইয়া উপজেলায়, পেশায় একজন প্রফেশনাল আইটি স্পেশালিস্ট গ্রাফিক্স ডিজাইনার ও চিত্রশিল্পী । সেই সাথে সামাজিক, ক্রীড়া ও রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত আছি ।

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার ৪০০ দিনের কারাবাস এবং আইনের সুশাসন

২০ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৪০০ দিনের কারাবাস পূর্ণ হলো ইতোমধ্যে,
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা অনিয়মের দায়ে তার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। এরপরই তাকে গ্রেফতার করে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগার কাশিমপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। বেগম জিয়ার বর্তমান বছর (৮০) কোটায়। তিনি তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী । তিনি বাংলাদেশের প্রথম ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানকে দমিয়ে রাখতে ততকালীন পাকিস্তান সরকার বেগম জিয়াকে বন্দী শিশুপত্র সহ, তারপরও শহীদ জিয়া স্ত্রী পুত্রের দিকে না তাকিয়ে দেশের জন্য লড়াই করে গেছেন এবং নিজের কন্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন । দেশনেত্রী দেশের স্বাধীনতার জন্য কারাগারে ছিলেন ৬ মাস ।

১৯৮১ সালের ৩০ মে এক ব্যর্থ সামরিক অভুত্থ্যানে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শহীদ হন। এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মিদের আহ্ববানে তিনি ১৯৮২ সালে ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাপ্রধান লেফটেনেন্ট জেনারেল এরশাদ বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। বেগম জিয়া এর বিরোধিতা করেন। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় তিনি প্রথম বক্তৃতা করেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে পার্টির চেয়ারপার্সন নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হন।

১৯৮৩ সালের বেগম জিয়ার নেতৃত্বে সাত দলীয় ঐক্যজোট গঠিত হয়। একই সময় এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। বেগম জিয়া প্রথমে বিএনপিকে নিয়ে ১৯৮৩ এর সেপ্টেম্বর থেকে ৭ দলীয় ঐক্যজোটের মাধ্যমে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। একই সময় তার নেতৃত্বে সাত দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন পনের দলের সাথে যৌথভাবে আন্দোলনের কর্মসূচী শুরু করে। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ দফা আন্দোলন চলতে থাকে। কিন্তু ১৯৮৬ সালের ২১ মার্চ রাতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিধান্ত নিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বাঁধার সৃষ্টি হয়। ১৫ দল ভেঙ্গে ৮ দল ও ৫ দল হয়। ৮ দল নির্বাচনে যায়। এরপর বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ৭ দল, পাঁচ দলীয় ঐক্যজোট আন্দোলন চালায় এবং নির্বাচন প্রত্যাখান করে। ১৯৮৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া "এরশাদ হটাও" এক দফার আন্দোলন শুরু করেন। এর ফলে এরশাদ সংসদ ভেঙ্গে দেন। পুনরায় শুরু হয় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। অবশেষে দীর্ঘ আট বছর একটানা নিরলস ও আপোসহীন সংগ্রামের পর ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিএনপি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া মোট পাঁচটি আসনে অংশ নিয়ে পাঁচটিতেই জয়লাভ করেন।
তারপরবর্তীতে তিনি মোট ১৮ টি আসনে নির্বাচন করে কোন পরাজয় বরণ করেনি ১৮ টিতেই জিতেছেন বিপুল ভোটে ।

তিনি ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর ৩ তারিখে ১/১১ সরকার বেগম জিয়াকে গ্রেফতার করেন। ২০০৮ সালের ১১ই সেপ্টেম্বার তিনি হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্তিলাভ করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক গ্রেপ্তার হবার পর দীর্ঘ এক বছর সাত দিন কারাগারে অবস্থানকালে তাঁর বিরুদ্ধে চলতে থাকা কোন মামলারই উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয়নি এবং চলতে থাকা তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি।

২০০৮ সালের ১/১১ সরকারকে ফুল দিয়ে বরণ করছিলেন বর্তমান বিনাভোটের প্রধানমন্ত্রী তিনি বলেছিলেন এই আমাাদের আন্দোলনের ফসল । ১/১১ েএর নাটের গুরু মঈন-ফখরুলদের সাথে সমঝোতা করে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লাগে স্বৈরাচারী মহল, তারেই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে ১৫৪ জন বিনাভোটের এমপি নিয়ে সরকার গঠন করে বর্তমান শাসক দল, ২০১৮ নির্বাচনের আগে হঠাৎ বেগম খালেদা জিয়ার নামে থাকা রাজনৈতিক মামলা গুলো ঢালপালা মেলতে শুরু করে, একের পর েএক হাজিরার নামে হয়রানী দিয়ে বেগম জিয়াকে হেনস্তা করতে থাকে। তার ভিতর এসব অনিয়ম নিয়ে মুখ খোলায় দেশের প্রধান বিচারপতিকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে । আর বেগম জিয়াকে মাত্র ২ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রথমে ৫ বছর পরে রাতারাতি আপিল করে ১০ বছর সাজা দিয়ে নির্বাচনের অযোগ্য করেছে। এবং বিএনপিকে ধ্বংস কারার সকল ষড়যন্ত্র করে আবারো ২০১৮-৩০ ডিসেম্বর তথাকথিত নাইট ভোট করে ক্ষমতা দখল করেছে মহা স্বৈরাচারী । এর ভিতর আপোষহীন সংগ্রামী নারী দেশনেত্রীর ৪০০ তম দিন অতিবাহিত হলো নির্জন কারাগারে।

দেশের ইতিহাসে কোন দুনীর্তিবাজ রাজনীতিবিদ ১ বছর জেল খাটার ইতিহাস নেই, হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে, শেয়ার বাজার থেকে উধাও হলো ৫৩ হাজার কোটি ডলার কাউকে গ্রেফতার তো দূরে থাক কারো নামে অভিযোগও হয়নি, তারপরে বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, রির্জাভ , কৃষি ব্যাংক সহ শুধু ব্যাংকিক খাতে লোপট হয়েছে ৭০০ হাজার কোটি টাকার মতো । কিন্ত কেউ শাস্তি পায়নি।

অথচ ২ কোটি টাকার অভিযোগে কিনা একজন সম্মানি দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছরের জেল হয়, তাও নজিরবিহীন ভাবে একের পর এক শোন এরেস্ট করে জামিন আটকাচ্ছে। তিনি কারাগারে ভিশন অসুস্থ তাকে তার প্রাপ্য চিকিৎসা পর্যন্ত দিচ্ছে না, অথচ কাদিরের স্টোকের পর সিঙ্গাপুর ও ভারত থেকে ডাক্তার হায়ার করা হয়েছে ।

যে দেশে একজন ইউপি চেয়ারম্যান তার নির্বাচনী ব্যায় করে ২ কোটি টাকা সেই দেশে কিনা একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ২ কোটি টাকার অভিযোগ এনে ১০ বছরের সাজা দেয়। দেশে আইন আদালত বলে স্বতন্ত্র কোন কিছু নেই, যা আছে তা হাসিনা নিয়ন্ত্রিত, বিচারকরা জিম্মি । আইন আদালত সব এখন শুধু বিএনপিকে দমানোর জন্যই ব্যবহার হচ্ছে, তারপরও ১৩ বছরে পেরেছে কি বিএনপিকে দমাতে ? বিএনপি ছাড়া দেশের মানুষে আর কাউকে গ্রহণ করেছে কি ? করলে বিএনপি নির্বাচন বয়কটের পর নির্বাচনের মাঠে কুকুর ছাগল ছাড়া ভোটার দেখা যায় না কেন??

অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৬
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×