হতাশ হয়ে লিখতে বসলাম এই লিখা। বড় গলায় লোকজন বলছেন, "কেউ ভুল করলে ক্ষমা হয়, কিন্তু অন্যায় করলে তার শাস্তি পেতেই হবে"। ভুল আর অন্যায়ের পার্থক্য নির্ধারণ করবে কে? এই অন্দোলনকারীরা?
আরো এক কাঠি ওপরে আরেকজন বলেছেন, "ক্ষমা চাইতে হলে নবীজি(সা)র কাছে চাইতে হবে।" তো তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা আন্দোলন করতে থাকবেন, কেয়ামত পর্যন্ত আন্দোলন চালাবেন?
"ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী গতকাল চকবাজারের বড় কাটারা জামে মসজিদে বলেছেন, নবীজীর সঙ্গে বেয়াদবির কোন ক্ষমা ইসলামে নেই। "(আজকের ইত্তেফাক)
আমিনী সাহেব ভুলে গেছেন, বৃদ্ধা ইহুদী নারীর প্রতিদিন পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখার কথা। নবী (সা) তাঁকে কি শাস্তি দিয়েছিলেন, আমিনী সাহেবকে সেটা একবার জিজ্ঞেস করা উচিৎ।
আমিনী সাহেব আরো ভুলে গেছেন, মোহাম্মদকে দাওয়াত দিয়ে বিষ মেশানো মাংস খাওয়ানোর কথা। সেই মাংস মুখে দিয়েই মোহাম্মদ ফেলে দেন। কি শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন তিনি সেই ইহুদী নারীকে?
তায়েফবাসীর অত্যাচার, মক্কাবাসীর অত্যাচার, কৌতুক কিছুরই প্রতিশোধ তো তিনি নেন নি। তাহলে আজ কেন তাঁর অনুসারীরা তাঁর অপমানের প্রতিশোধ নেবে? এটা কি নিজেদের ভালবাসার মানুষকে অপমানের প্রতিশোধ নেয়া? নাকি স্বার্থ? যে ঘটনাটা তাঁকে অপমানের উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়না, সেই ঘটনা নিয়ে এতদূর বাড়াবাড়ির কি অর্থ?
এমনিতেই দেশের বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায় ইসলাম নিয়ে বিরক্ত। তার উপর এবার প্রথম আলোর মত নামজাদা পত্রিকার উপর আঘাত। চার্চের কাছে গ্যালিলিওর ক্ষমা চাওয়ার প্রতিশোধ আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা নিয়ে যাচ্ছেন বিবর্তনবাদের শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করে। নতজানু মতিউর রহমানের ক্ষমা চাওয়ার প্রতিশোধ বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায় কিভাবে নেবেন? সেই প্রতিশোধের আঘাত সইতে পারবে তো ইসলামপন্থীরা? আরও কিছু তসলিমার জন্ম নেয়ার সুযোগ কি তৈরি করে দেওয়া হলো না? সময়ই বলে দেবে, এই অন্দোলনকারীরা কি ক্ষতি করে গেলো ইসলামের।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৭ রাত ২:১৯