somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিউটের ডিব্বা ! (সম্পূর্ণ)

২২ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাচ্চাটা কিছুতেই আসতে চায় না। মায়ের কোলেই থাকে। হঠাৎ সামনে পড়লে গুটিগুটি পায়ে দূরে চলে যায়। তার সাথে কান্নাকাটি তো আছেই।

কি সুন্দর বাবু ! লাল গালটা শুধু টিপে দিতে ইচ্ছে হয়। বয়স একবছরও হয় নি। তবুও নতুন কেউ এলেই উনার দেখা নেই। তাকাতেও কি ভয় ! যেন রাক্ষস-খোক্কস এলো। মায়ের কোলই যেন শেষ আশ্রয় !

কি করা যায় ! ভেবে পাই না। যেভাবেই হোক বাবুটাকে কোলে নিতেই হবে। ওকে আদর না করলে আমার আসাটাই বৃথা !

একটা প্ল্যান করলাম। বাবুর মাকে ফোন করলাম না। বাবু নাকি মায়ের ফোনে কথা বলার মাধমেই বুঝতে পারে কেউ আসছে। এত্তটুকুন বাবু কিভাবে যে বোঝে ! আমার হাই আই-কিউ মস্তিষ্কও ফেল ওকে বুঝতে। কুট্টি জিনিয়াস একটা !

প্ল্যানটা হলো একটা বড় টেডি বিয়ার কিনলাম। লাল টুকটুকে। শুনেছিলাম ওর নাকি একটা আছে, কিন্তু ছোট। সারাদিনই উনি ওটা নিয়ে ঘোরেন। যাইহোক, পুরো একসেট চিপস সাথে নিয়েছিলাম। উনি নাকি চিপসও খান। সাথে কিছু খেলনা। সো চিন্তা ডান এ্যান্ড ওয়ার্ক অন........

ট্রেনটা যথাসময়ে স্টেশনে এলো। যথারীতি ট্রেন হতে নামা এ্যান্ড রিকশা নেওয়া। চিপস আর টেডি বিয়ার দুটো আলাদা ব্যাগে ভরা। সাথে আমার ছোট ব্যাকপ্যাক। রিকশা চলতে শুরু করলো...........

বাসায় পৌঁছে কলিংবেল টিপা এন্ড ইয়েস ! বাবু ইন দ্যা কোল অফ মাদার। উনি নাকি আগেই বুঝে গেছেন। কিভাবে বুঝলো আল্লাহ জানে !

আড় চোখে একবার বাবুর দিকে তাকালাম। তাকাতেই মাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আহারে বেচারা !

ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলাম। আমার আসার এতোটা সময়েও উনি মায়ের কোল থেকে নামেন নি। তাই বাধ্য হয়ে বাবুর মাকে বাবুসহই রান্না করতে হলো। বাবুর মার রান্না বরাবরই অসাধারণ। কিন্তু বেশি কিছু রাঁধতে পারেনি। যেটুকু করেছে সেটুকুই অমৃতের মতো খেয়ে নিলাম। খাওয়ার পুরোটা সময় লুকিয়ে লুকিয়ে বাবু আমাকে দেখছিলো। আমি কিন্তু তাকাচ্ছিলাম না। কারন বাবুকে এখন পাত্তা দেওয়া যাবে না।

খাওয়া শেষে বাবুর ভাইয়ের রুমে ঘুমিয়ে পড়লাম। জার্নির যে ধকল গিয়েছে ! সুন্দর একটা ঘুম দিলাম।

ঘুম থেকে উঠে দেখি দরজার পর্দার নিচে ছোট্ট ছোট্ট পা। বুঝলাম আমার প্রতি বাবুর কৌতুহল আছে ! বাবুর ভাইকে ডাকলাম। ও-ই বললো বাবু নাকি এদিকে প্রায়ই লুকিয়ে দেখে গেছেন। আমার কাছে এটা শুভ লক্ষণই বটে !

আমার উঠে পড়ার আভাস পেয়েই বাবু আবারো মায়ের কোলে। ওদের সাথে অনেক কথা বললাম। বহুদিন পরে আসা। শত কথা লুকিয়ে আছে !

একসময় বাবু ঘুমিয়ে পড়লো। ছোট্ট মুখটা দেখতে দারুণ কিউট লাগছিলো। যেন একটা পুতুল !

বাবুর ঘুমের সময়েই আমাকে যা করার করতে হবে। বাবুর মা ও ভাইকে সবকিছু বুঝিয়ে বললাম। বাবুর মা বললো, "তুমি পারো বটে ! "

বাবুজি ঘুমাচ্ছেন। আর আমি প্রস্তুত হচ্ছি বাবুকে পটানোর জন্য। প্রথমেই ব্যাগ থেকে কিছু খেলনা ও চিপসের প্যাকেট বের করলাম। তারপর বাবুর জেগে ওঠার অপেক্ষা.....

ইয়েস ! বাবুজির ঘুম ভাঙল অবশেষে ! উঠেই মাকে খুঁজছে। আমি সন্তপর্ণে বাবুর হাতে একটা চিপসের প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে চলে এলাম পাশের ঘরে। বাবু চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে আছে। অতঃপর ক্রন্দন। যা কিনা চিপস মুখে নেওয়ার পরই কমলো। আমি পাশের রুমে অপেক্ষা আছি। বাবু কি আসবে???

নাহ, এলেন। হাতে চিপসের প্যাকেট নিয়ে। আমার দিকে একবার তাকালো। তারপর চিপসের প্যাকেটটা দেখালো ছোট্ট হাত বাড়িয়ে। তবে কি আমার জয় হলো?? কালক্ষেপণ না করে টেডি বিয়ারটা ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। নিলো। তারপর মিষ্টি একটা হাসি দিলো। বরফ এখন পানিতে রূপান্তরিত হয়েছে। বাবুর মা অবাক। হেসে বললোঃ" তাহলে অবশেষে .... "।

এরপর থেকে ও আমার সার্বক্ষনিক সঙ্গী হয়ে যায়। পিছু ছাড়তে চায় না। যতদিন ছিলাম ততদিনই এই দশা। তবে গরম পানির বিড়ম্বনা ছিলো। একেই বোধহয় মধুর সমস্যা বলে !
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:২৯
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×