ইহুদীরা গত ১০০০ হাজার বছর থেকেই শিক্ষিত, ইংরেজরা ৫০০ বছর থেকে শিক্ষিত, আমেরিকানরা ১০০ বছর থেকে শিক্ষিত; তারা বিশ্বের বড় বড় লেখক, তারা সবচেয়ে বেশী বই পড়ে; কিন্তু তাদের কারো ১ মাস ব্যাপী কোন বইমেলা নেই; যেই জাতি স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও, শতে ৪০ জনকে নাম লেখা শেখায়নি, তারা কি করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলা করছে? এর পেছনে আসলে কি কাজ করছে?
মনে হয়, শিক্ষিতদের কৌলন্যবোধ, ব্যবসায়ীদের লোভ, লেখকদের পরিচিতি ও শিক্ষিত সাধারণ মানুষের এলিট এলিট ভাব কাজ করছে। ১ মাসে ৮০/১০০ কোটী টাকার বই বিক্রয় ব্যবসায়ীদের জন্য লোভনীয় ব্যাপার; তারা বর্তমানে যেই ফর্মুলায় বই বের করছে, উহা সঠিক ফর্মুলা নয়, ইহা প্রমাণিত। বাংগালীরা অন্য যেকোন জাতির থেকে বেশী লিখতে চান, বলতে চান, নিজকে প্রকাশ করতে চান; এটা একেবারে খারাপ নয়, যদি লেখাতে ভাবনা থাকে, বলাতে ধারণা থাকে, প্রকাশে মানুষের কথা থাকে!
গত বছরের বইমেলা বদনাম কুড়ায়েছে নিশ্চয়; অনেকেই বলেছেন যে, শতকরা ৯০ ভাগ বই পড়ার মতো ছিলো না; অথচ, বেশীর ভাগ বই বিক্রয় হয়ে গেছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ নিয়ে লেখা বই নাকি তেমন বিক্রয় হয়নি গত বছর; এই বছর নিশ্চয় সেই ধরণের বই আরো কম বিক্রয় হবে। এই বছর, বিএনপি'র কোন লেখক হয়তো রাজনৈতিক বই প্রকাশ করবেন না; ফলে, রাজনৈতিক বইয়ের বদনাম কিছুটা কমে আসবে।
গত বছর অনেক ব্লগারের বই বের হয়েছিলো; মেলা শেষে ব্লগারেরা নিজেদের বই নিয়ে মুখ খোলাননি; মুখ খুললে ভালো হতো, একটা ধারণা পাওয়া যেতো। এবার সবচেয়ে বেশী সংখ্যক ব্লগার বই বের করেছেন; অনেক ছবি আসছে, অনেক আলাপ হচ্ছে ব্লগে। বাইরের পাঠকেরা কি জানেন যে বইমেলায় ব্লগারদের বই এসেছে, নাকি ব্লগারেরা সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের পরিচায় চেপে যাচ্ছেন?
বইমেলা নিশ্চয় একটি শুভ ও জ্ঞান প্রসারণের প্রচেষ্টা; কিন্তু ইহার দীর্ঘতা ও নতুন বইয়ের সংখ্যা মানুষকে চিন্তিত করার মতো ব্যাপার! এত কম শিক্ষিত ও কম মানের শিক্ষার দেশে এত আয়োজন কেন? বই মেলাতে দেশের জনসংখ্যার ৫০ ভাগ মানুষের যাবার কোন কারণই নেই!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৫