শেখ হাসিনা, বেগম জিয়া, সাজেদা চৌধুরী, শিরীন আক্তার,মতিয়া, পুতুল, সারাহ কামাল, দীপুমণিরা মাদ্রাসায় পড়েনি; নুসরাত মাদ্রাসায় পড়ছিলো কেন? কতজন মহিলা ব্লগার মাদ্রাসায় পড়েছেন, কতজন ব্লগার নিজের বোনকে মাদ্রাসায় পড়ানোর পক্ষপাতি?
গতকাল একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম, শিরোনাম ছিলো, "মেয়েদের কি ইমাম, মুয়াজ্জিন, ধর্ম-প্রচারক হওয়ার দরকার আছে?"; মন্তব্যকারীদের অনেকেই বলেছেন যে, মেয়েদের দ্বীন শিক্ষার দরকার আছে, মাদ্রাসায় যাবার দরকার আছে। তাদেরকে বুঝানো হয়তো অনেক কষ্টকর হবে যে, সব নবীরা মেয়েদের পেটে জন্ম নিয়েছিলেন, এবং মায়ের কাছেই সবকিছুর শিক্ষা নিয়েছিলেন, মায়েরা দরকারী সবই জানেন, ধর্ম হোক, আর কর্ম হোক; সেই মায়েদের গড়তে হবে শিক্ষক হওয়ার জন্য, ডাক্তার হওয়ার জন্য, ইন্জিনিয়ার হওয়ার জন্য, নার্স হওয়ার জন্য; প্রকৃতি তাঁদেরকে বড় ইমাম ও নবীদের মাতা বানায়েছেন।
শেখ হাসিনা, বেগম জিয়া, সাজেদা চৌধুরী, শিরীন আক্তার, মতিয়া, পুতুল, সারাহ কামালদের মাদ্রাসায় পড়তে হয়নি; নুসরাতকে কেন মাদ্রাসায় যেতে হয়েছিলো? শেখ হাসিনা, বেগম জিয়া, মতিয়া চৌধুরীরা কি বাংলার মেয়েদের অকারণ অপরিসীম কষ্ট দেখছে না? এরা দেখছে; কিন্তু এদের ভাবনাশক্তি লিলিপুটিয়ানদের মতোই ছোট, এদের ভাবনাশক্তিতে সঠিক কোন সমাধান নেই, এরা ঘুরেফিরে বদি'র বউ'এর কাছাকাছি। বাংলার সম্পদ ওরা ধনী পরিবারের সন্তানদের পড়ানোর জন্য খরচ করছে, নিজেদের পরিবারের লোকদের পেছনে খরচ করছে; নুসরাতদের জন্য খরচ করছে না; নুসরাতেরা পড়ছে সৌদীদের ফিতরার টাকার মাদ্রাসায়; এদের কেহ কেহ পরে সৌদী গিয়ে সেই টাকা শোধ করবে।
আসলে, শেখ হাসিনা, বেগম জিয়া, সাজেদা চৌধুরী, শিরীন আক্তার, মতিয়া, পুতুল, সারা কামালরা তাদের প্রয়োজনের চেয়ে, তাদের যোগ্যতার বেশী দখল করে রাখায়, তাদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশী ভোগ করায়, তাদের মত লোকদের সন্তানেরা ভালো স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি দখল করে রাখায়, নুসররাতদের যেতে হচ্ছে মাদ্রাসায়।
যেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তার গোপনাংগে হাত দিয়েছিলো, নজুসরাত কেন সেখানে আবার পরীক্ষা দিতে গেলো? তার মা কেন শেখ হাসিনাকে, শিরিন আক্তারকে, দীপুমণিকে কিংবা নোয়েলকে জানাতে পারলো না? কেন কমপক্ষে থানা শিক্ষা অফিসারকে জানাতে পারলো না? সেই পথ নেই কেন? শেখ হাসিনা যদি জয়ের জন্য খিচুড়ী পাক করার সময় পায়, নুসরাতদের জন্য ২ মিনিটের সময় হয় না কেন? শেখ হাসিনা কেন প্রতি স্কুলে, প্রতি মাদ্রাসায় ১ জন মেয়ে-এডভাইজার দেয়নি, যার কাছে মেয়েরা নিজেদের অসুবিধার কথা বলতে পারবে, কষ্টের কথা বলতে পারবে, কেহ গোপনাংগে হাত দিলে অভিযোগ করতে পারবে? টাকার অভাব, নাকি মগজের অভাব?
যেখানে মেয়েরা পড়ে, সেখানে প্রতি ১০০ জন মেয়ের জন্য, একজন দক্ষ মহিলা এডভাইজার দরকার, যারা মেয়েদের সবকিছু জানবে, সবকিছুতে সাহায্য করবে। তখন মেয়েদের শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক সব সমস্যা সরকার বুঝতে পারবে; আমরা শক্তিশালী মাতা পাবো, জাতি শক্তিশালী হবে; আমাদের প্রয়োজনীয় সম্পদ আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৫