ধর্ম হলো বিশ্বাসের বিষয়, এখানে লজিকের প্রয়োজন ও প্রয়োগ নেই; লজিক প্রয়োগ করে, কোন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হলে, মানুষের মগজ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের লজিক ও সেই বিষয়ের ডাটাকে প্রসেসিং করে, এতে মগজ ব্যবহৃত হয়; ধর্ম প্রায় সব বিষয়ে কিছু কিছু ধারণা দিয়েছে, সেটাকে নিয়ে থাকলে, অনেক অনেক বিষয়ে কোনরূপ চিন্তা না করে থাকা সম্ভব; ফলে, মগজের ব্যবহার অনেক কম হওয়ার কথা।
মুসলমানেরা জানেন যে, হযরত ঈশা (আ: )'কে আল্লাহ উপরে নিয়ে গেছেন; এবং মোহাম্মদ (স: ) শবে-মেহরাজের রাতে হযরত ঈশা (আ: )'এর সাথে যেরুসালেমে নামাজ পড়েছেন ও পরে আসমানে দেখেছেন; এই বিষয়টা একজন মুসলমানের কাছে পরিস্কার, নতুন করে এটা নিয়ে অকারণে ভেবেচিন্তে নিজের মগজকে ঘর্মাক্ত করছেন না; কিন্তু ঈশা(আ: )'এর নিজ ধর্মের লোকেরা উনাকে নিয়ে অনেক কষ্টে আছেন: ইহুদী রাবাই ও রোমানরা মিলে উনাকে ক্রুশবিদ্ধ করে মেরে ফেলেছিল; ক্রুশে থাকা অবস্হায়, উনার কষ্টকে অনুধাবন, পরে উনাকে পাহাড়ের গুহায় স্হানান্তর ও কবর দেয়ার সময় উনার মৃতদেহ না পাওয়া, ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক ভাবনার, যাতনার সৃষ্টি করে মগজের উপর চাপ ফেলে আসছে সব সময়, যুগের পর যুগ ধরে; অথচ, মুসলামনেরা এই ব্যাপারে না ভেবেই সব জানেন। হযরত ঈশার মৃত্যুকালীন জটিলতা নিয়ে কার মগজ বেশী খরচ হচ্ছে? আসলে, এই ব্যাপারে, ধর্মে অবিশ্বাসীদের মগজ খৃষ্টানদের চেয়ে বেশী ব্যবহৃত হচ্ছে: যেহেতু হযরত ইশা (আ: )'কে কবর দেয়া সম্ভব হয়নি, ও কবর নেই; এদেরকে ভাবতে হচ্ছে, তা'হলে গুহাতে কি হয়েছিলো, উনি গেলেন কোথায়; কোথায় যাওয়া সম্ভব ছিলো? যদি উনি ক্রুশে প্রাণ না হারায়ে থাকেন, উনি কি রোমানদের থেকে পালিয়ে গেলেন?
নাসা থেকে যাঁরা মহাকাশে যান পাঠাচ্ছেন, তাঁরা তাদের মগজকে অনেকভাবে ব্যবহার করছেন; তাঁদেরকে কঠিন কঠিন ডিজাইনের মাধ্যমে নতুন নতুন যান তৈরি করতে হচ্ছে, উহাকে পাঠানো, কন্ট্রোল করা, ফিরিয়ে আনা নিয়ে দুনিয়ার কঠিন কঠিন অংক কষতে হচ্ছে, মেকানিক্যাল থেকে শুরু করে এরোনোটিক্যাল, কেমিক্যাল ও বাইওলপজিক্যাল সমস্যা সমাধান করতে হচ্ছে! এতে মানুষের মগজের ব্যবহার নিয়ে রূপকথার সৃষ্টি হচ্ছে! এত কিছু ভেবে টেবে, মানুষ চাঁদ অবধি যেতে পেরেছেন। অথচ, একজন মুসলমান জানেন যে, বোরাক নিয়ে কোন মাথা ঘামানোর দরকার নেই; ইহার ডিজাইন নিয়ে ভাবার দরকার নেই; বোরাক জীবিত ও সহজেই সেকেন্ডের মাঝেই সাত আকাশ পরিভ্রমণ করতে পেরেছে; চিন্তাভাবনা থেকে বাঁচা গেলো; মগজটা শান্তিতে থাকলো, কোন প্রেসেসিং'এর ঝামেলা পোহাতে হলো না।
মুসলমানের জানেন যে, কুরান একটি পুর্ণাংগ জীবনের জীবন্ত বই; এই বই বুঝতে পারলে, জীবন যাপনের জন্য অন্য কোন বই পড়ার দরকার নেই; একজন মুসলমান জীবনে যতবার কোরান পড়েন, অন্য কোন বই তার হাজার ভাগের একভাগও পড়েন না; সেইদিক থেকে বলতে গেলে, তাঁরা অবশ্যই এই পুস্তকে যা পাচ্ছেন, নতুন করে কিছু আবিস্কার করার দরকার নেই। খৃষ্টানরাও একইভাবে বিশ্বাস করেন যে, বাইবেলও পুর্ণাংগ জীবনের জীবন্ত পুস্তক; তবে, সমস্যা হলো, ফাদারেরা ব্যতিত বাকীরা সারা জীবনেও বইটা শেষ করতে পারেন না; কিন্তু প্রতি ঘরেই কয়েক কপি থাকে। ইহুদীরা তাদের বইকে পুর্ণাংগ জীবনের বই বলে না; তারা তাদের নবীর বই থেকে নিজেদের লেখা বইকে বেশী দাম দেয়; উহার নাম তালমুদ; তালমুদ হলো, গ্রান্ড রাবাইদের কর্তৃক গৃহিত সব ধরণের নিয়ম কানুন; ইহা লিখতে মাথা ঘামাতে হয়; কারণ, যারা ইহা পড়েন, উহারা অন্য কাজে নিজেদের মাথা ঘামান বলে, তাদের মাথার ব্যবহার হয়ে থাকে যথেষ্ট।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৫৬