somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উগ্র হিন্দুবাদী বিজেপি, ভারতীয় কাশ্মীর ও জম্মুতে কি কি করতে চাচ্ছে?

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৯৪৭ সালে, কাশ্মীরের রাজা হরি সিং

প্রথমত: বিজেপি'র উগ্র হিন্দুবাদী নেতারা ও বিজেপি'র দরিদ্র হিন্দু সমর্থকেরা ভারতে মুসলিম-প্রধান কোন এলাকা রাখার পক্ষপাতী নয়; দ্বিতীয়ত: কাশ্মীরী গেরিলা ও পাকী জংগীরা কাশ্মীরের অভ্যন্তরে যে তৎপরতা চালায়, উহাতে কাশ্মীরীদের প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ সমর্থন আছে; অধিবাসীদের ভেতরে হিন্দু প্রবেশ করিয়ে দিলে, গেরিলা ও জংগী তৎপরতা দ্রুত কমে আসবে; তৃতীয়ত: ভারতের অনেক শুস্ক এলাকার ভুমিহীন দরিদ্ররা এই এলাকাগুলোতে আসতে আগ্রহী; ৫০/৬০ লাখ ভারতীয় ধনী পরিবার কাশ্মীরে গ্রীস্মকালীন বাড়ী করতে প্রস্তত!

কাশ্মীরে ভারত সরকার সেনাবাহিনী, পুলিশ, সিকিরিটি ইত্যাদিতে বিপুল অর্থ ব্যয় করে; মোদী সরকার এই ব্যয় কমাতে চাচ্ছে। ভারতীয়দের মতে, পাকিস্তান এখন অনেক দুর্বল দেশ, সারা বিশ্বে এখন ভারত পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশী সামনে; কাশ্মীরকে পুরোপুরিভাবে দখল করে নেয়ার জন্য এখনই সঠিক সময়।

ভারত সরকার শিখ ও আসামীদের স্বাধীনতা আন্দোলন পুরোপুরি থামিয়ে দিয়েছে, কিন্তু কাশ্মীরে উহা এখনো জীবন্ত; ভারতের বিশাল অংশ মনে করে যে, কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলন থামানোর দরকার, এবং মোদীর দলই ইহাকে শক্ত হাতে দমন করতে পারবে।

কাশ্মীর ও জম্মু নিয়ে পাকিস্তানের সাথে বারবার যুদ্ধ হওয়ায়, পাকীরা ও ভারতীয়রা ইহাকে এখন নিজেদের মানসন্মান, ইগোতে পরিণত করেছে: জম্মু-কাশ্মীরের বেলায় কোন ছাড় দেয়া হবে না।

ঐতিহাসিকভাবে ১৯৪৭ সালে, কাশ্মীর নিয়ে যা ঘটেছে, পাকিস্তানের ভুমিকা কাশ্মীরীদের পক্ষে যায়নি; পুরো কাশ্মীর ও জম্মু'র আয়তন ২,২২,২৩৬ বর্গ কিলোমিটার; পাকিস্তান কৌশলে যুদ্ধ করে ১৯৪৭ সালে কাশ্মীরের ৭৭,১১৪ বর্গ কিলোমিটার দখল করে, উহাকে আজাদ কাশ্মীর নাম দিয়েছে। (কাশ্মীরের আরেকটা অংশ, আনুমানিক ৩৭,০০০ বর্গ কিলোমিটার চীন দখল করে নিয়ে ১৯৬২ সালের যুদ্ধে)। পাকিস্তানী কাশ্মীরে আনুমানিক ৫৫ লাখ কাশ্মীরী বাস করছে, আর ভারতীয় এলাকায় ১ কোটী ৫০ লাখের কাছাকাছি।

পাকিস্তান যদি একাংশ দখল করে না নিতো, তা'হলে পুরো কাশ্মীরের অবস্হা কি আজকের ভারতীয় কাশ্মীরের ভাগ্য বরণ করতো? মনে হয়, ইতিহাস অন্য দিকে মোড় নিতে পারতো; কারণ, কাশ্মীর নিয়ে যখন সমস্যা দেখা দিয়েছে, তখন ভারতের মুল সিদ্ধান্তগুলো নিতেন মহাত্মা গান্ধী ও পন্ডিত নেহেরু; তাঁরা ২ জনই বলেছিলেন যে, কাশ্মীরের জনগণ যা চায়, তাই হবে: তারা যদি পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে চায় তাই হবে; তারা যদি ভারতের সাথে যোগ দিতে যায়, তা সম্ভব; আর, তারা যদি আলাদা থাকতে চায়, সেটাও সম্ভব। এই ২ জন মানুষের কথার মুল্য ছিলো, এঁরা হিন্দু হলেও, তাঁরা মুসলিম বিরোধী ছিলেন না, ভারত বিভক্তির বিপক্ষে ছিলেন মাত্র।

পাকিস্তান যুদ্ধ লাগিয়ে দেয়াতে, মহাত্মা ও পন্ডিত নেহেরুর কথা যুদ্ধের দামামার নীচে চাপা পড়ে যায়; ভারতীয়রাও যুদ্ধকে বেচে নেয়।

পাকিস্তান কিভাবে ১৯৪৭ সালে কাশ্মীরের একাংশ এত সহজে দখল করে নিলো? ভারতীয় বাহিনী কি দুর্বল ছিলো? না, ভারতীয় বাহিনী দুর্বল ছিলো না, ভারতীয় বাহিনী কাশ্মীরে আসার আগেই পাকিস্তানের বাহিনী কাশ্মীরের রাজার বাহিনী থেকেই ভুমি দখল করে নেয়। রাজা ভারতীয় সাহায্য চেয়ে আসছিলো; কিন্তু সমস্যা ছিলো, ভারতীয় ও পাকিস্তানী বাহিনীর সুপ্রীম কমান্ডার-ইন-চীফ ছিলেন একই ব্যক্তি, বৃটিশ ফিল্ড মার্শাল ক্লদ অউচিনলেক। তিনি পাকিস্তান বাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর প্রধান হওয়ায়, ২ সেনা বাহিনীকে যু্দ্ধ থেক বিরত রাখেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান, ফিল্ড মার্শালকে দাংগার নামে কাশ্মীরে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী নিয়োগ করতে বললেন; তিনি নাকচ করে দিলেন। তখন লিয়াকত আলী খান পাকিস্তানের উত্তরান্চল থেকে ৩০ হাজারের মতো উপজাতীয় যোদ্ধা সংগ্রহ করে, তাদের সাথে প্রাক্তন সৈন্যদের যোগ করে কাশ্মীর দখলে পাঠায়ে দেয়। এই উপজাতীয়রা ও কাশ্মীরের কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে, কাশ্মীরের দুর্বল বাহিনীকে আক্রমণ করে বিরাট এলাকা দখল করে নয়। কাশ্মীরের রাজা হারি সিং দেশটিকে পাকিস্তান ও ভারত থেকে আলাদা রাখার পক্ষে ছিলেন; দেশটি রাজা হারি সিং'এর পুর্ব পুরুষ মহারাজা গুলাব সিং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী থেকে ১৮৪৬ সালে, আনুমানিক ৭৭ লাখ রুপিতে কিনে ছিলেন।

কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ছিলো, বৃটিশ যেভাবে রেখে গিয়েছিলো, সেভাবে থাকা; সেভাবে থাকলে, দেশটা একদিন স্বাধীন রিপাবলিকে পরিণত হতো, এবং হয়তো ভুটানের মতো সুখী হতো, কিংবা নেপালের মতো দরিদ্র হতো; পাকিস্তান ও ভারতীয়রা মিলে ইহাকে কাশ্মীর বাসীদের রক্ত দিয়ে ভাসিয়ে দিয়েছে। পাকিস্তানী দখলের সময়, উপজাতীয়রা হিন্দু মুসলমান উভয় জাতিকে হত্যা করেছে জম্মুতে। মগজহীন পাকিস্তান সরকার ও নীচু মানসিকতার ভারতীয়দের হাতে পড়ে কাশ্মীরের মানুষগুলো চির দু:খীতে পরিণত হয়েছে।

এখন, সঠিক সমাধান হবে, তিনটি কাশ্মীরকে এক করে একটি স্বাধীন রিপাবলিক গঠন করা।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:১৮
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×