মোদী জম্মু-কাশ্মীরের উপর বক্তব্য রেখেছেন; তিনি বলছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের উন্নয়নের জন্য নতুন এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে; এসব পদক্ষেপের ফলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। মোদী তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, ৩৭০ ধারার কারণে জম্মু-কাশ্মীরের জনগণ এবং শিশুদের ক্ষতি হচ্ছিল; এবং এই বিষয়টি নিয়ে কখনো পরিস্কারভাবে আলোচনা হয়নি। ৩৭০ ধারা আসলে কিভাবে জম্মু-কাশ্মীরের জনগণ ও শিশুদের ক্ষতি করছিলো, সেটার ব্যাখ্যা তিনি দেননি। আমরা বাংলাদেশীরা ৩৭০ ধারাকে যেভাবে বুঝি, জম্মু-কাশ্মীরের জনগণ উহাতে কিভাবে উপকৃত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সেটা আমাদের পক্ষে পুরোপুরি সঠিকভাবে এনালাইসিস করা সহজ হবে না; যারা কাশ্মীরবাসীদের জীবন যাপনের মান, তাদের জীবন যাপনের ইনডেক্স নিয়ে কাজ করেছেন, শুধু তারা ব্যাখ্যা করতে পারবেন, হয়তো।
মোদী বলেছেন যে, ৩৭০ ধারা এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ জম্মু-কাশ্মীরকে সন্ত্রাস, বংশ পরম্পরায় রাজনীতি এবং দুর্নীতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। এখানে বুঝার মতো অনেক কিছু আছে; জম্মু-কাশ্মীরের রাজনীতিতে আবদুল্লাহ ও কি এক পীর পরিবার পরিবারতন্ত্র চালু করে রেখেছে; সাধারণ মানুষ স্বাধীনতার (অলৌকিক) জন্য অপেক্ষা করছে, উন্নয়নের জন্য নয়; ফলে, সাধারণ মানুষ কোনভাবে বেঁচে, স্বাধীনতার আশায় আশায় থাকছে, যা কাশ্মীরে ভয়ংকর দারিদ্রতার সৃষ্টি করেছে।
জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য সরকারগুলো(বেশীর ভাগই মুসলমান কর্মকর্তা) মানুষের শিক্ষা ও চাকুরীর নিশ্চয়তা দেয়নি কখনো; বাংলাদেশের সমান একটি দেশে মাত্র ১ কোটী ৪৮ লাখ মানুষ বসবাস করছে, এবং তারা দরিদ্র! হতবাক হওয়ার মতো ব্যাপার!
মোদী যা বলছে তা সত্য হলে, সে কেন সকল রাজনীতিবিদদের আটকিয়ে রেখে এত বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দিলো? সে কেন রাজনীতিবিদদের নিয়ে এই ব্যাপারে মিটিং করেনি ও মানুষের মতামত নেয়নি, বা কমপক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন অন্চলে মানুষের সাথে মিটিং করেনি।
মোদী পর্যটনের বাইরে, তেমন কোন কিছু করার তেমন রোড-ম্যাপ দেননি; উন্নয়ন করতে হলে, তার রোড-ম্যাপ দেয়ার দরকার। মোদী উল্লেখ করেছেন যে, জম্মু-কাশ্মীর এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারে অনেক নতুন চাকুরী সৃষ্টি করা হবে; কিন্তু সেখানে কারা নিযুক্তি পাবে, সেটা নিয়ে কোন রুল উল্লেখ করেনি; চাকুরীর নামে, সেখানে বিজেপি'র লোকদের ঢুকিয়ে দিলে, মানুষ নতুন আরেক বিপদেই পড়বেন মাত্র।
মোদীর একটি বড় উদ্দেশ্য হলো, গেরিলা যুদ্ধ ও পাকী জংগীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে রাজ্যে হিন্দু নাগরিকদের বসতি স্হাপন করা হবে; এবং ধনী পরিবারেরা এখন থেকে রাজ্যে তাদের গ্রীস্মকালীন ঘরবাড়ী বানানোর অনুমতি পাবে। এই ধরণের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা না করাতে, বুঝা যাচ্ছে যে, মোদী অনেক কিছু লুকিয়ে রাখছে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ ভোর ৫:৪০