সোনাগাজী মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতের হত্যাকান্ডে যেই ১৬ জনের মৃত্যুদন্ড হয়েছে, তাদের মাঝে কয়েকজন ছাত্রছাত্রী আছে, এদের জীবন রক্ষা করা দরকার; এরা বন্চিত গরীব পরিবারের সন্তান হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। প্রথমত, দেশবাসী ও সরকার এদেরকে কিছু দেয়নি, যার ফলে এরা মাদ্রাসায় যেতে বাধ্য হয়েছে; আবার, মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্হায় বয়স অনুযায়ী এদের মানসিক উন্নয়ন না হওয়ার বিরাট সম্ভাবনা; এ'ছাড়া, সবচেয়ে বড় কথা হলো, তারা নিজের জন্য এই হত্যাকান্ড ঘটায়নি; এসব হিসেবে নিয়ে তাদেরকে বাঁচতে দেয়ার দরকার।
এই ছাত্রছাত্রীগুলোর প্রাণ রক্ষার্থে দেশের মানুষ নুসরাতের মা-বাবা ও বিচার ব্যবস্হাকে অনুরোধ করার দরকার। এদের বিচার দ্রুততার সাথে শেষ হয়েছে, এটা ভালো উদাহরণ; হত্যাকারীরা তাদের ভয়ংকর অপরাধের গুরুত্ব টের পেয়েছে ইতিমধ্যে। তবে, দ্রুততার সাথে এদের শাস্তি কার্যকর করা ঠিক হবে না।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষের হয়ে হত্যাকান্ড ঘটানোতে, এটি আমেরিকার নিয়ম অনুসারে "প্রথম ডিগ্রি" হত্যাকান্ড নয়; বাংলাদেশেও এই ধরণের ধারা নিশ্চয় আছে; যদি "প্রথম ডিগ্রির" হত্যাকান্ড না হয়ে থাকে, ও এদের জীবনে বন্চনা ও সুযোগের অভাবের কারনে, এদের প্রাণ রক্ষা করা জাতির দায়িত্ব।
এদের হয়ে কোন মানবাধিকার সংস্হা লড়বে কিনা আমি জানি না; তবে, একই মামলায় এত বেশী সংখ্যক মানুষকে প্রাণদন্ড দেয়ায়, উচ্চ আডালত নিজের থেকে ব্যাপারটা নিজেদের আওতায় নিতে পারে; দেশের এটর্নি জেনারেলকে বিচারটি হাইকোর্টে আনার জন্য নির্দেশ দিতে পারে।
সম্ভবত, দরিদ্র পারিবারগুলো হয়তো প্রথামিকভাবে আপীল করবে; তবে, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্হা যেই ধরণের বিচারকদের নিয়ে গঠিত, ওখানে মানুষের জীবনের মুল্য গরুর জীবন থেকে কম হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। তবে, হাইকোর্টে নিশ্চয় কিছু অভিজ্ঞ বিচারপতি থাকার কথা, যারা মানুষের জীবনের মুল্য বুঝতে পারবে।
যেহেতু আমাদের বিচার ব্যবস্হা খুব একটা দায়িত্বশীল নয়, হয়তো, ঊঁচু কোর্টে আপিলে এসব ছাত্রছাত্রীদের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে দিতে পারে; সেই ক্ষেত্রে আমাদের প্রেসিডেন্টকে উদার হতে হবে; যেহেতু, বিচারটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, ও অপরাধীদের সঠিক বিচার হয়েছে, এবং অপরাধীরা তাদের পরিণতি দেখছে, তাদেরকে জীবনে আরেকটি সুযোগ দেয়া যেতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৬