শেখ হাসিনা ৩৯ বছর আওয়ামী লীগের সভাপতি, এটা অগণতান্ত্রিক ও জাতির প্রতি অন্যায়। উনার বেলায় কিছুটা ব্যতিক্রমের দরকার ছিল: উনার নিজের প্রাণ রক্ষা, ৩ টি আওয়ামী লীগ থেকে ১টি আওয়ামী লীগ করা, ও মিলিটারীর সৃষ্টি রাজনৈতিক দলগুলোকে কন্ট্রোলে আনা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে, সেটাও দরকারের চেয়ে বেশী করা হয়েছে। ২০০৯ বা ২০১৪ সাল থেকে উনার দরকার ছিলো আওয়ামী লীগকে ১৯৪৮ সালের আওয়ামী লীগের আদলে ফেরত নেয়া।
উনি প্রয়োজনের চেয়ে খুব বেশী সময় আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকায়, কাউকে দলের ব্যাপারে তেমন দায়িত্ন না দেয়ায়, এখন তিনি সব ক্ষমতার অধিকারী, নতুন কোন ব্যক্তি দল চালানোর দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি, ইহা রাজনৈতিক দিক থেকে ভয়ংকর অবস্হা। আরো খারাপ যা ঘটেছে, তা হলো, দেশে আওয়ামী লীগের দ্বৈত সরকার চলছে, এবং আওয়ামীরা উনাকে যতটুকু সমীহ করেন, ভালোবাসেন, তার চেয়ে বেশী ভয় করেন।
শেখ হাসিনা-পরবর্তী আওয়ামী লীগের সভাপতি যদি তিনি থাকাকালীন না বানান, সেই সভাপতির টিকে থাকা মুশকিল হতে পারে: আওয়ামী লীগের একাংশ ও প্রশাসনের লোকজন উহাকে না মানার সম্ভাবনা আছে। যদি শেখ হাসিনা, নতুন সভাপতির কার্যকলাপ নিজের চোখে দেখেন ও সাহায্য করেন, উহার টিকার সম্ভাবনা আছে; আর অবস্হা খারাপ হলে, উহাকে বদলাতে পারবেন শুধু শেখ হাসিনা; শেখ হাসিনার অনুপস্হিতে যিনি পদ পাবেন, উনি চালাতে না পারলেও জীবনেও সরতে চাইবেন না, তখন আওয়ামী লীগ বিভক্ত হবে।
এবার যদি শেখ হাসিনা সভাপতি না হয়ে, নতুন ১ জনকে মাত্র এক টার্মের জন্য বানান, আওয়ামী লীগও হারিয়ে-যাওয়া গনতন্ত্রের সাথে আবার নতুন করে অভ্যস্ত হওয়ার শুরু করবে, তাদের মাথায় ক্রমেই রাজনীতি ফিরে আসবে, ক্রমেই নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে ভাবার শুরু করবে। আবারও যদি শেখ হাসিনা সভাপতির পদ দখল করেন, তা'হলে আগামী ৫ বছরও সব কিছু আপার উপর বর্তাবে, কেহ সুঁচও নড়াবে না, সবকিছু আপাকে করতে হবে; শেষমেষ আপাকে মমি করে আওয়ামী লীগের সভাপতি বানিয়ে রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা একই সাথে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দেশের প্রাইম মিনিষ্টার থাকায়, কোনটাই সঠিকভাবে চলেনি; এবারই উনার হাতে শেষ সুযোগ, অন্য কাউকে সভাপতি বানিয়ে দেখা আওয়ামী লীগ কিভাবে মেনে নেয় ও দলে কি পরিবর্তন আসে। আওয়ামী লীগ বড় দল হিসেবে, সভাপতি ও সেক্রেটারীকে দলের বাইরে, সরকারে কোন দায়িত্ব দেয়া ঠিক হবে না। ওয়ায়দুল কাদের সাহেব দলকে সংগঠিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, দলে রাজনীতি নেই, এগুলোর স্হায়ী সমাধান হওয়ার দরকার।
শেখ হাসিনা এবার যদি নিজে সভাপতি হন আবারো, অন্য কাউকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার মতো উনার হাতে সময় থাকবে কিনা বলা মুশকিল; সেজন্য মনে হয়, এবারই ভালো সুযোগ, নতুন কাউকে সভাপতি বানায়ে পরীক্ষা করে দেখার।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:২৫