বাংগালীরা জীবনে একটি মাত্র ইমারজেন্সী ফান্ড দেখেছিলেন ১৯৬৫ সালে, ইহা গঠন করা হয়েছিলো পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময়; ততকালীন সামরিক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান এই "ভুয়া" ফান্ডটি করেছিলো। তখন পাকিস্তানের নাগরিকেরা ছিলো গরীব, তারপরও পরিবারের মেয়েদের কানের দুল, হাতের সোনার দু'খান চুড়ি দিয়েছিলো। ফান্ডের টাকা যুদ্ধে খরচ করা লাগেনি, চীন ও আমেরিকা ফ্রি অস্ত্র দিয়েছিলো; এবং পুরো যুদ্ধটা ছিলো ষড়যন্ত্র, আইয়ুব খান ভোটে জয়ী হওয়ার জন্য সেই যুদ্ধ করেছিলো। এই ফান্ডের টাকা কি করেছিলো, তা পরে জানা যায়নি। সমস্যা, উহা 'জাতীয় ফান্ড" ছিলো না, ছিলো প্রেসিডেন্ট ফান্ড।
বাংগালীরা অনেক ইমারজন্সীতে "দান" হিসেবে টাকা-পয়সা, খাবার, কাপড়-চোপড় দিয়েছেন; কিন্তু কোন জাতীয় ফান্ড না থাকায়, তাঁরা এই ধরণের কিছুতে অভ্যস্ত নন। এশিয়ায় সফল জাতীয় ফান্ড করেছিলেন সিংগাপুরের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট লি কুয়ান; সেই ফান্ডটা এখনো আছে; মালয়েশিয়ায় ফান্ড করেছেন মাহাথির; কোরিয়া ১৯৯৮ সালে আইএমএফ'এর টাকা ফেরত দিতে পারছিলো না, তখন একটা ইমারজেন্সী ফান্ডের অধীনে স্বর্ণ সংগ্রহ করা হয়েছিলো, মানুষ ২২৭ টন স্বর্ণ "দান" করেছিলেন।
এশিয়ায় যাদের ফান্ড ছিলো, বা আছে, তারা ভালো করেছে, ভালো আছে! বাংগালীদের জাতীয় ফান্ড থাকলে, এখন করোনায় ইহা ব্যবহার করে ছিন্নমুল মানুষদের পুণর্বাসন করা যেতো। এখন প্রাইম মিনিষ্টারের একটা ফান্ড আছে, উহা জাতীয় ফান্ড নয়, এবং ইহাতে টাকার পরিমাণ নিতান্ত নগন্য হওয়ার কথা।
বাংগালীদের আর্থ সামাজিক অবস্হা অনুসারে একটা জাতীয় ফান্ড করলে, উহা "দান" ব্যতিত করা সম্ভব; ফান্ডের শুরুতে মানুষ ৫ বছরের জন্য টাকাটা ফান্ডকে বিনা লাভে "ঋণ" দেবেন; ৫ বছরের পর, ঋণদাতা টাকাটা ফেরত নিতে পারেন, কিংবা দেশের সরকারী বন্ডের সমান লভ্যাংশ পেতে পারেন; তখন টাকাটা ১/৫/১০ বছরের জন্য বন্ডে বিনিয়োগের মতো থাকবে।
আমি এই পোষ্ট দেয়ার পর, কোন ফান্ড হয়ে যাচ্ছে না, এবং আপনাকে ইহাতে টাকা দিয়ে অংশ নিতে হবে না; এই ধরণের উতোপিয়া ভাবনার ফান্ডের ব্যাপারে ১৮ কোটী বাংগালীর ২৭ কোটী মতামত থাকবে; আপনারও কমপক্ষে ২টা মতামত থাকার কথা।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৩১