somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আনন্দমোহন কলেজের উৎসবে দুঃসহ ঘটনা, সবাই নীরব!!!!!! ...... অবক্ষয়ের আর কতো বাকি??????

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




‘ব্যান্ডের গান শুরুর আগেই হাজার হাজার তরুণ-যুবক ঢুকে পড়ে নারীদের জন্য সংরক্ষিত স্থানে। শুরু হয় বিশৃঙ্খলা থেকে তাণ্ডব। দুই তরুণীকে আমি অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে পাশের বাড়িতে পৌঁছে দিই। ১৫ মিনিট পর ফিরে এসে দেখি, সেই একই অবস্থা। আরও দুই তরুণী আমাকে জড়িয়ে ধরে বাঁচার আকুতি জানায়। প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়া এমন ৪০ থেকে ৫০ জনকে আমি উদ্ধার করতে দেখেছি।’ এটি ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজের গত ৩০ জানুয়ারির রাতের ঘটনা।


আনন্দমোহন কলেজের শতবর্ষপূর্তি উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে ঘটে এ অপ্রীতিকর ঘটনা। দুই দিন ধরে আনন্দমোহন কলেজের দুটি ছাত্রী হোস্টেল, আশপাশের কয়েকটি ছাত্রী মেস ও শহরের বিভিন্ন বয়সী নারীদের সঙ্গে কথা বলে এ ঘটনার সত্যতা মিলেছে। সেদিন রাতে একদল তরুণ পুলিশ-র্র‌্যাব, রাজনৈতিক নেতা ও কলেজের শিক্ষকদের সামনেই নারীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছে, অনেকের শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করেছে। তবে লোকলজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীরা আইনের আশ্রয় নেননি। এমনকি প্রকাশ্যে চিকিৎসআও নিতে যাননি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ময়মনসিংহ শহরের অনেকের মনে চাপা ক্ষোভ আছে এ নিয়ে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি জানাজানি হোক, তা চান না স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। তাই সংশ্লিষ্ট সবাই বিষয়টি চেপে যান।





অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরুর সময় পেছন থেকে কয়েক হাজার দর্শক ঢুকে পড়ে নারীদের জন্য সংরক্ষিত স্থানে। শুরু হয় হুড়োহুড়ি। এ সময় অধিকাংশ নারী বের হয়ে যেতে পারলেও প্রায় পাঁচ শ নারী আটকা পড়েন। উচ্ছৃঙ্খল দর্শনার্থীরা এরই মধ্যে অনেকের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। ভুক্তভোগীদের চিৎকারে তখন ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।


কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী গাজী হাসান কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুষ্ঠান চলাকালে হট্টগোলের সময় ভয়ে দুজন ছাত্রীকে জ্ঞান হারাতে দেখেছি। এ ছাড়া অন্য কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ তিনি বলেন, সাংসদ কে এম খালিদ ও মোস্তাক আহমেদ এ কলেজের ছাত্র। তাঁরা উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
তবে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও অনুষ্ঠান অভ্যর্থনা কমিটির সচিব এহতেশামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি পরে ঘটনাটি শুনেছি, যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক।’


আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি এক তরুণকে তার জ্যাকেট খুলে আরেক তরুণীকে সাহায্য করতে দেখেছেন। মাঠের আশপাশের আরও কয়েকজন দর্শনার্থী ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, সেখানে তাঁরা মেয়েদের অনেক জুতা-স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখেছেন। কয়েক শ প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙা হয়েছে।


সেদিনের কথা মনে করতেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন আরেক তরুণী। তিনি জানান, সেই উৎসবে অনেকে গেছেন স্বামীর সঙ্গে, কেউ সন্তানের সঙ্গে, কেউ বা সহপাঠীদের সঙ্গে। কয়েক হাজার উচ্ছৃঙ্খল তরুণের এ তাণ্ডব দেখে হতবাক সবাই।


কলেজের পাশের এলাকা হামিদ উদ্দিন রোডের একটি মেসের ছাত্রী বলেন, ‘অশ্লীলতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারছিলাম না।’

মীরবাড়ি সড়কের এক দোকান কর্মচারী বলেন, ‘লাঠি দিয়ে আঘাত করেও অনেক ছেলেকে তাণ্ডব থেকে ফেরানো যাচ্ছিল না।’ ভুক্তভোগী এক তরুণী বলেন, ‘মানসিকভাবে আমরা ভেঙে পড়েছি। না পারছি পরিবারকে জানাতে, না পারছি চিকিৎসা নিতে।’






প্রথম আলো

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৪৬
৩০টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×