somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৩ চুরির আসামি সাক্ষ্য দিলেন মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১১ ভোর ৪:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দৈনিক নয়াদিগন্ত:

তিনটি চুরির মামলার আসামি সুলতান আহমদ হাওলাদার সাক্ষ্য দিলেন মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে। কলা চুরির মামলায় পিরোজপুর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জেল দেন সুলতান আহমদকে। পিরোজপুর জজ কোর্ট সে সাজা বহাল রাখেন। বর্তমান হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে তার আপিল। সুলতান আহমদের বিরুদ্ধে ট্রলার চুরির দায়ে অপর দু’টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বরিশালে।
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীদের জেরায় সাক্ষী সুলতান আহমদ সম্পর্কে এসব তথ্য বের হয়ে আসে গতকাল। সুলতান আহমদ গত বুধবার মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দেন। গতকাল মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত চারজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিলেন, এর মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধেই চুরির মামলা রয়েছে বিভিন্ন ঘটনায়। এ ছাড়া অন্য মামলাও রয়েছে এ তিন সাক্ষীর বিরুদ্ধে। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার বাদি ও প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদার চুরির মামলায় জেল খেটেছেন। পরে তিনি এ সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন বলে আদালতে বলেছেন। এ ছাড়া স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক মামলায় তার দণ্ডাদেশ হয়েছে এবং বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষী রুহুল আমিন নবীনের বিরুদ্ধেও বিদ্যুৎ চুরির মামলা হয়েছে বলে আদালতে তথ্য প্রকাশ করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা। গতকাল মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে চতুর্থ সাক্ষী সুলতান আহমদের বিরুদ্ধে তিনটি চুরির মামলার তথ্য প্রকাশ পেল।
জেরার সময় সুলতান আহমদকে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী প্রশ্ন করেন, ‘আপনি তালিকাভুক্ত কোনো মুক্তিযোদ্ধা কি না।’ জবাবে সুলতান আহমদ বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধাই নই’। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী তখন প্রশ্ন করেন, ‘আপনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য পিরোজপুর সদর এমপি এ কে এম এ আউয়ালের কাছে দরখাস্ত করেছেন এবং এমপি আপনাকে ডিও লেটার দিয়েছেন। তখন সুলতান আহমদ বলেন, ‘সহায়ক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য দরখাস্ত করেছি। মুক্তিযোদ্ধার সমর্থনকারী হওয়ার জন্য।’ এরপর মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী স্পষ্ট করে জানতে চান মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য দরখাস্ত দিয়েছেন কি না। তখন তিনি বলেন, ‘না’।
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী তাকে প্রশ্ন করেন ধানকাটা বিষয়ে আপনার বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে। সুলতান আহমদ বলেন, জানা নেই।
সাক্ষী সুলতান আহমদ আদালতে বলেছিলেন দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমান সাঈদী আরবি ও উর্দু ভাষা ভালো জানায় এবং বাকপটু হওয়ায় পাকবাহিনীর সাথে যোগাযোগসহ সব কর্মকাণ্ড তার নির্দেশেই পরিচালিত হতো। কিন' গতকাল জেরার সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয় পিরোজপুরে আজ পর্যন্ত তিনি আরবি ভাষায় কাউকে কথা বলতে শুনেছেন কি না। তখন সুলতান আহমদ বলেন, ‘আমি আরবি উর্দু জানি না। কোনটা আরবি আর কোনটা উর্দু হয়ে যায় তা বলতে পারি না।’
গ্রাম্য মহিলাদের ধরে ধরে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তুলে দেয়াসহ মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন সাক্ষী সুলতান আহমদ। কিন' গতকাল জেরার সময় তাকে জিজ্ঞেস করা হয় তিনি কোনো মেয়েকে এভাবে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দিতে দেখেছেন কি না। এর জবাবে তিনি বলেন, দেখেননি, তবে শুনেছেন।
গতকাল সাক্ষী সুলতান আহমদ হাওলাদারকে জেরা করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম, মনজুর আহমদ আনছারী ও কফিলউদ্দিন চৌধুরী। তাকে সহায়তা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভির আল আমিন, মুন্সি আহসান কবির প্রমুখ।
আইনজীবী : আপনি তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা কি না।
সাক্ষী : আমি মুক্তিযোদ্ধাই নই।
আইনজীবী : আপনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন এবং পিরোজপুর সদরের এমপি এ কে এম এ আউয়াল ডিও লেটার দিয়েছেন।
সাক্ষী : সহায়ক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য দরখাস্ত করেছি। মুক্তিযোদ্ধার সমর্থনকারী হওয়ার জন্য।
আইনজীবী : আমি বলছি আপনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : পারেরহাটের কাদের গাজিকে চেনেন?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : তিনি আপনার বিরুদ্ধে কলা চুরির মামলা করেছেন। মামলায় আপনার জেল হয় এবং সে সাজা বহাল আছে।
সাক্ষী : জমিজমা নিয়ে মামলা হয়েছে। মামলা বিচারাধীন আছে এবং আমি জামিনে আছি।
আইনজীবী : আমি জানতে চাচ্ছি আপনার জেল হয়েছিল কি না।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : বর্তমানে মামলাটি কোন কোর্টে বিচারাধীন আছে?
সাক্ষী : হাইকোর্টে। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার ১০ বছর পর আমার অনুপসি'তিতে রায় হয়েছে। এডিএম (অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট) কোর্ট আমাকে খালাস দেয়ায় বাদি আবার মামলা করে। তা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য আমি আবার আবেদন করেছি। আপিল বিচারাধীন আছে।
আইনজীবী : জজ কোর্টের রায় কী ছিল?
সাক্ষী : জজ কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছেন।
আইনজীবী : বরিশাল আদালতে আপনার বিরুদ্ধে ট্রলার চুরির দু’টি মামলা আছে?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : ইব্রাহীম কুট্টির পিতার নাম বলতে পারবেন? (মাওলানা সাঈদীর যোগসাজশে পাক আর্মিরা তাকে হত্যা করে বলে আদালতে সাক্ষ্য দেন এই সাক্ষী।)
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : তার বাড়ি কোথায় বলতে পারবেন?
সাক্ষী : সম্ভবত টেংরাখালী বা বারইখালী। বারইখালী তার শ্বশুরবাড়ি।
আইনজীবী : ইব্রাহীম কুট্টির স্ত্রীর নাম জানা আছে?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : তার কোন ছেলেমেয়ে তখন ছিল কি না এবং থাকলে তাদের সম্পর্কে কিছু বলতে পারবেন?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : পারেরহাটের দানেস আলী মোল্লা চেয়ারম্যানকে চেনেন?
সাক্ষী : চিনি। তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন।
আইনজীবী : আতাহার আলী হাওলাদার, পিতা আইনুদ্দিন হাওলাদার, বারইখালী- তাকে চেনেন?
সাক্ষী : চিনি না।
আইনজীবী : আস্রাব আলী, পিতা আসমত আলী, টেংরাটিলা- চেনেন?
সাক্ষী : স্মরণে নেই।
আইনজীবী : আব্দুল মান্নান, বারইখালী- চেনেন?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : আইউব আলী, বারইখালী।
সাক্ষী : চিনি না।
আইনজীবী : কালাম চৌকিদার, বারইখালী।
সাক্ষী: চিনি না।
আইনজীবী : রুহুল আমিন, পিতা আনওয়ার হোসেন, পারেরহাট।
সাক্ষী : রুহুল আমিন নামে একজনকে চিনি। সে রাজাকার ছিল।
আইনজীবী : আব্দুল হাকিম মুন্সি, বারইখালী।
সাক্ষী : চিনি না।
আইনজীবী : মবিনউদ্দিন, পিতা আব্দুল গনি, গাজিপুর, পিরোজপুর।
সাক্ষী : মবিন নামে একজনকে চিনি। রাজাকার ছিল।
আইনজীবী : সেকেন্দার আলী শিকদার, পিতা মনসুর আলী, হোগলাবুনিয়া।
সাক্ষী : চিনি। সে আমার ফুফাতো বোনের জামাই। পিস কমিটির সেক্রেটারি ছিল। দানেস আলী মোল্লা ছিল সভাপতি।
আইনজীবী : মোসলেম মাওলানা, পিতা মোদাচ্ছের হাজি, বাদুরা।
সাক্ষী : চিনি। পিস কমিটির সদস্য ছিল।
আইনজীবী : মোসলেম মাওলানা এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী : মোসলেম মাওলানা এখন পিরোজপুর ওলামা লীগের সভাপতি তা জেনেশুনে গোপন করছেন আপনি।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : ওপরে যে নাম বলা হলো এবং তাদের মধ্যে যাদের আপনি চেনেন তাদের বাদে অন্যরাও রাজাকার ছিল?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম কবে কোথায় শান্তি কমিটি গঠিত হয় জানেন?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : শান্তি কমিটির সভাপতি সেক্রেটারির নামও জানা নেই?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : রাজাকার বাহিনী কবে কোথায় গঠিত হয় তাও জানেন না?
সাক্ষী : বলতে পারব না।
আইনজীবী : রাজাকার বাহিনীর প্রধান কে ছিল তাও বলতে পারবেন না?
সাক্ষী : শুনেছি গোলাম আযম ছিল।
আইনজীবী : পিরোজপুর পিস কমিটি কবে গঠিত হয় জানা আছে?
সাক্ষী : স্মরণে নেই।
আইনজীবী : পিস কমিটির সভাপতির নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী : সৈয়দ আফজাল সাহেবের নাম শুনেছি।
আইনজীবী : পিরোজপুর মহকুমায় কবে রাজাকার বাহিনী গঠিত হয় জানেন?
সাক্ষী : স্মরণে নেই।
আইনজীবী : পিরোজপুর রাজাকার কমান্ডার মানিক খন্দকার। তার বাড়ি চরখালী।
সাক্ষী : মানিক খন্দকারের নাম শুনেছি।
আইনজীবী : মানিক খন্দকারের চাচাতো ভাই ছিল শানু খন্দকার। শানু খন্দকার ছিল মুক্তিযোদ্ধা এবং তার হাতে মানিক খন্দকার নিহত হয় তা জানা আছে?
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : পিরোজপুর মহকুমায় যেসব থানা ছিল তার পিস কমিটির সভাপতি এবং রাজাকার কমান্ডারদের নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী : না।
এরপর মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী সাক্ষী সুলতান আহমদকে তার নিজ গ্রাম শঙ্করপাশা সম্পর্কে বিস্তারিত জিজ্ঞেস করেন। ১৯৭১ সালে শঙ্করপাশা কত নম্বর ওয়ার্ড ছিল, মেম্বার নির্বাচন কিভাবে হতো- এসব প্রশ্ন করা হলে তিনি সঠিক জবাব দিতে ব্যর্থ হন। তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, এসব প্রশ্নের সাথে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের সম্পর্ক কী এবং এসব মনে রাখা সম্ভব কি না। জবাবে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, সাক্ষী একজন শিক্ষিত লোক। তিনি তার নিজ গ্রামের তথ্য বলতে পারেন না; কিন' ৪০ বছর আগের কথা সব মুখস' বলে দিলেন।
আইনজীবী : মাহবুবুল আলম হাওলাদার মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে পিরোজপুর আদালতে যে মামলা করেছেন তাতে আপনি সাক্ষী ছিলেন?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : মানিক পসারীর মামলায়ও আপনি সাক্ষী?
সাক্ষী : মনে নেই। মানিক পসারী পরে ডেকে আনে সাক্ষ্য দিতে।
আইনজীবী : আপনার পেশা?
সাক্ষী : ছোটখাটো ব্যবসা ও কৃষি।
আইনজীবী : পারেরহাটসহ পিরোজপুরের কোনো লোককে আরবিতে কথা বলতে শুনেছেন কখনো?
সাক্ষী : (অনেকক্ষণ ভেবে) মসজিদের ইমাম সাহেব তো মাঝে মধ্যে খুতবা দেয়ার সময় আরবি কথা বলেন। সেটি শুনেছি।
আইনজীবী : সেটি না, আমি জানতে চাচ্ছি মুখোমুখি দু’জনকে কথাবার্তা বলতে শুনেছেন কি না।
সাক্ষী : আমি আরবি-উর্দু জানি না। কোনটি আরবি আর কোনটি উর্দু হয়ে যায় তা বলতে পারব না।
আইনজীবী : ২২ সের সোনা রুপা মাটি থেকে খুঁড়ে বের করতে কত সময় লেগেছিল বলতে পারবেন?
সাক্ষী : ওই দেড়-দুই ঘণ্টার মধ্যে হয়েছে। আমি সেখানে ছিলাম না।
আইনজীবী : গত ঈদুল ফিতরের ঈদ কবে হয়েছে বলতে পারবেন?
সাক্ষী : স্মরণ নেই।
আইনজীবী : কোরবানি ঈদ?
সাক্ষী : স্মরণ নেই।
আইনজীবী : পারেরহাট বাজারে আপনার বা আপনার পরিবারের কোনো ব্যবসা ছিল?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : দেলোয়ার হোসেন মল্লিক নামের কোনো রাজাকারের নাম শুনেছেন?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : আপনি যে দেলোয়ার শিকদারের নাম বলেছেন তার পিতার নাম রসুল শিকদার?
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : দেলোয়ার হোসেন মল্লিক নামে যে রাজাকার ছিল তার দায়ভার আপনি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ওপর চাপাচ্ছেন শেখানো মতে।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : ৪০ বছর আগের ঘটনা আপনি যেভাবে বললেন তা কি মুখস' বলেছেন না নোট করে রেখেছিলেন?
সাক্ষী : স্মরণ থেকে বলেছি। নোট ছিল না।
আইনজীবী : আপনি বলেছেন, শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর লোকেরা পাক হানাদার বাহিনীকে পাকিস্তান রক্ষার জন্য সর্বপ্রকার অঙ্গীকার করে। তারা এ সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আপনি কি আশপাশে ছিলেন?
সাক্ষী : না।
আইনজীবী : আপনি বলেছেন, রাজাকারেরা নারীদের ধরে ধর্ষণের উদ্দেশে জোরপূর্বক পাক হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দিত। আপনি কাউকে তুলে দিতে দেখেছেন?
সাক্ষী : খেয়াল নেই। আমি শুনেছি।
আইনজীবী : আপনার পরিবারের কেউ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি এবং আপনাদের বাড়িঘরের কোনো ক্ষতি হয়নি।
সাক্ষী : না। আমাদের তো তখন কিছুই ছিল না। ক্ষতি করবে কী।
আইনজীবী : আপনি আপনার এলাকার নিরীহ লোকজনের সম্পত্তি জোর করে দখল করেন।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : এ কারণে আপনার বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা বিচারাধীন আছে।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : আপনি চিথলিয়াচরে প্রায় ১০ বিঘা জমি দখলে রেখেছেন।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : ১ মে নিজ বাড়িতে যাওয়ার যে কথা আদালতে বলেছেন তা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দীতে বলেননি।
সাক্ষী : স্মরণে নেই।
আইনজীবী : পারেরহাট এসে জানলাম দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদীর নেতৃত্বে পিস কমিটি গঠিত হয় বলে যে কথা বলেছেন তা-ও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি।
সাক্ষী : বলেছি।
আইনজীবী : মে মাসের সাত তারিখ পারেরহাট গেছেন এ কথাও বলেননি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : পারেরহাট রিকশা স্ট্যান্ডের কাছে দানেশ আলী মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার, মোসলেম মাওলানা, দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমান সাঈদী পাক বাহিনীকে অভ্যর্থনার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে মর্মে যে কথা বলেছেন, তা-ও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমান সাঈদীসহ অন্যান্য পিস কমিটির লোকজন পাক হানাদার বাহিনীকে বাজারের দিকে নিয়ে যাওয়া, দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমান সাঈদী হাত উঁচু করে হিন্দু ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির লোকদের ঘরবাড়ি দেখিয়ে দেয়ার ঘটনা, ৩০-৩৫টি ঘর লুটপাট, খেয়াঘাটে রাস্তার ওপর লুটের মাল স্তূপ করে রাখার যে ঘটনা আপনি আদালতে বলেছেন, তা-ও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে আগে বলেননি।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদীর নেতৃত্বে লুটের মাল ভাগবাটোয়ারা করা, লুটের মাল নিয়ে ব্যবসায়প্রতিষ্ঠান খোলা এবং দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী সে ব্যবসার পরিচালক হওয়ার বিষয়ে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি।
সাক্ষী : সম্ভবত বলেছি।
আইনজীবী : ইব্রাহীম কুট্টিকে হত্যার কথাও বলেননি।
সাক্ষী : বলেছি।
আইনজীবী : দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমান সাঈদী আর্মির সাথে কী যেন বলাবলি করছে এবং এরপরও গুলির শব্দ শুনতে পাওয়া, পরের দিন ইব্রাহিম কুট্টিকে হত্যার ঘটনা শুনতে পাওয়ার কথাও বলেননি।
সাক্ষী : বলেছি।
আইনজীবী : মদন সাহার ঘর ভেঙে মালামাল মাওলানা সাঈদীর শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথাও বলেননি।
সাক্ষী : বলেছি।
আইনজীবী : রিকশা স্ট্যান্ডের দক্ষিণে গনি হাজী আপনার কোনো আত্মীয় নন।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : ভানু সাহাকে মাওলানা সাঈদী ও মোসলেম মাওলানা নিয়মিত ধর্ষণ করত বলে যে অভিযোগ করেছেন, তা জঘন্য মিথ্যাচার।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : ভানু সাহার বাড়িতে গেছেন?
সাক্ষী : হ্যাঁ।
আইনজীবী : রাতে না দিনে?
এ পর্যায়ে আদালত ভাষা প্রয়োগ বিষয়ে সাবধান হতে বলেন।
তখন সাক্ষী বলেন, তাদের দোকানের পেছনেই বাসা ছিল। আমি তাদের দোকানে গিয়েছি।
আইনজীবী : আপনি চুরির মামলা থেকে খালাস পাওয়ার জন্য, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তি এবং ভাতা গ্রহণ, সরকারি বিভিন্ন সুবিধা আদায়, চুরির মামলা থেকে খালাস পাওয়ার জন্য এবং চরের জমি দখলে রাখার জন্য স'ানীয় এমপি, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলায় মিথ্যা অভিযোগ করে মিথ্যা সাক্ষ্য দিলেন।
সাক্ষী : সত্য নয়।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×