somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোডিয়ামের আলোয় কয়েকজন কামান্ধ পুরুষ | একজন প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতা থেকে অনুলিখন

২৭ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রচণ্ড এক আর্ত চিৎকার! একটু চমকে উঠেও আবার ভাবলাম কি জানি, হবে হয়তো কেউ। কিন্তু হঠাৎ আবার..... তারপর আবার....। আর পারলাম না, দৌড়ে এলাম বারান্দায়। ১২-১৩ বছরের বাচ্চা একটা মেয়ে চিৎকার করছে। মায়ের সাথে অভিমান করে নয়, বন্ধু দের সাথে ঝগড়া নয়, দেখতে মানুষের মতন এক পুরুষ তাকে টেনে হিঁচ্‌ড়ে নিয়ে যেতে চাইছে কোথাও! নিজেকে বাঁচানোর আদিম আকুতি নিয়ে প্রানপনে ছুটে পালাতে চাইছে মেয়েটি। কিন্তু ঐ বয়সী এক শিশু কতটুকুই বা কুলিয়ে উঠতে পারে!

রাতের ঘড়িতে তখন দুটো কি আড়াইটে। কাওরান বাজারের নির্জন রাস্তা জুড়ে এলিয়ে পরেছে সোডিয়ামের নরম ঘোলাটে আলো, কয়েকটা ট্রাক আর বাস রাত জাগা কিছু মানুষকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো গন্তব্যের দিকে। ঘটনাটা পুরো জানা হয়ে ওঠেনি। শুধু মনে হচ্ছিলো এন.টিভির পাশের ব্রোথেল থেকে শিশুটি কেমন করে যেন বেড়িয়ে পরেছিল। পালাতে চেয়েছিল, হয়তোবা পালিয়েও গিয়েছিল প্রায়। কিন্তু মানুষের মত দেখতে ঐ পুরুষটি তাকে জোর করে ফেরাতে চাইছিল নরকে। মেয়েটি তখনো হাল ছারেনি (যদিও সে "হাল ছেরনা বন্ধু" গানটি শুনেছে বলে মনে হয়না)"।

কাওরান বাজারের রাস্তায় চলছিল এক শিশুর সাথে পুরুষাঙ্গের লড়াই!

কিছুক্ষনের ভেতরেই আরো কয়েকটি পুরুষাঙ্গ ঘিরে ধরলো শিশুটিকে; আকন্ঠ ঘৃনায় কুঁকড়ে উঠে সরে এলাম বারান্দা থেকে। অসহায়ত্বের তুমুল গ্লানি আমাকে তখন মেয়েটির চেয়েও আরো বেশি বিদ্ধস্ত করে ফেলেছে, ইচ্ছে করছিলো চরাচর কাঁপিয়ে একটি চিৎকার দিতে। পারিনি, যেমন পারিনি মেনে নিতেও, আমার আর ঐ শিশুটির অক্ষমতা!

বাচ্চা মেয়েটির কি হলো শেষে? জানা নেই, তবে অনুমান করতে পারি সহযেই। কি-ই বা আর হতে পারে। যে সমাজ তার শৈশব আর কৈশরকে গলা টিপে হত্যা করেছে তার কাছে বেশি কিছু আশা করা নেহায়েতই বাতুলতা। এই সমাজের কাছে সে শুধুই মেয়ে, একটা শরীর। সে কখনই শিশু হতে পারবেনা, পারবেনা কিশোরী হয়ে উঠতে!

সামান্য সমবেদনা জানানো ছাড়া আমি আর কিছুই করতে পারিনি ওর জন্য! আমার দু হাত বাধা, শুধু আপ্রান চেষ্টায় চোখের পট্টি টুকু খুলে রাখতে পেরেছি এখনো। কারো কাছেই নালিশ জানানোর নেই, নেই কোন অভিযোগ দাখিলের ন্যুনতম ইচ্ছে। হয়তোবা তারাই ওখানকার বাধা খদ্দের। কে জানে।

এন.টিভি, একুশে টিভি বা প্রথম আলোর পাশে গড়ে ওঠা ব্রথেলে যখন শৈশব বিক্রি হয় তখন কি-ই বা আর বলার থাকে।

(একজন প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতা থেকে অনুলিখন। সময়কাল: গত সপ্তাহ)
৪১টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×