অনেক দিন ধরেই পরিকল্পনা ছিল, কোথাও একটা ঘুরতে যাবো। এক্সাম শেষ হওয়ায় অনেকটা সময় পেলাম। ঠিক করলাম শ্রীমঙ্গল যাবো আমরা। আমি, বাবা, মা, তুষার আংকেল। দিদিকে নেওয়ার অনেক ইচ্ছা ছিল, কিন্তু ছুটি পেলো না। রওনা দেওয়ার কথা ছিল ১০ মে তে। হঠাৎ করেই ভাবলাম, ৯ তারিখ কোনো কাজ নেই। বেরিয়ে পড়া যাক। যা কথা, সেই কাজ। বেরিয়ে পড়লাম আমরা গাড়ি নিয়ে।
১ম দিন:
দুপুর ১২ঃ৩০ এর দিকে আমরা বের হয়ে গেলাম, পেট ভর্তি ক্ষুধা নিয়ে। ৩০০ ফিট রোড দিয়ে ১২০ কিমি/ঘন্টা বেগে পূর্বাচল পেরিয়ে যখন নারায়নগঞ্জে আসলাম, তখন ক্ষুধায় পাগলপ্রায় অবস্থা। তবুও কোনো হোটেল খোলা না পেয়ে আরো অনেকটা পথ পেরিয়ে যখন নরসিংদী পৌছালাম, তখন বাজে প্রায় দুপুর ২ঃ৩০। অবশেষে খুধার সাগর পাড়ি দিয়ে মাছ ভর্তা, করলা ভাজি, রুই মাছ ও ডাল দিয়ে খানিককতক ভাত খেয়ে উদরপূর্তি করে আবার ছুটে চললাম গন্তব্যের পথে। হেমন্ত, অর্নব, ব্যাকস্টেজ এর রুদ্র এর গান শুনতে শুনতে কখন যে এসে পড়লাম গন্তব্যে, বুঝতেই পারিনি। শ্রীমঙ্গলে ঢুকেই গুগল মামার কাছে থেকে ম্যাপটি নিয়ে খুজতে শুরু করলাম, আগে থেকে বুকিং করা গ্রিনলিফ গেস্ট হাউজ। প্রথমে দেখে মনে হলো গেস্ট হাউজের সরু রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঢুকবে না। কিন্তু পরে তুষার আংকেল যখন তার নিপুন হাতে ঢুকিয়ে দিলেন গাড়িটিকে, তখন মজাই লাগছিল। কিন্তু, এর পরই বিপত্তিটা হলো। গেস্ট হাউজটি দেখতে খুব সুন্দর হলেও সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম, ৩য় এবং ৪র্থ তলা ছাড়া কোনো রুমই নেই তাদের। অপরদিকে কোনো লিফট ও নেই তাদের। সমস্যটা হলো মা সিড়ি ভাঙতে পারে না। তাই তাদেরকে সমস্যাটা বললাম আমরা। আমাদের কথা শুনে ম্যানেজার, বললেন, তাহলে তো এখানে হবে না, আরেকটা গেস্ট হাউজ আছে। শহর থেকে প্রায় ৫ কিলো দূরের ওই গেস্ট হাউজটা অনেকটা জায়গা নিয়ে এবং ১ তালা-২ তালা নিয়ে। তাই লিফটের কোনো ঝামেলা নেই। আমাদেরকে আরো অবাক করে দিয়ে তিনি বললেন, গাড়িতে জায়গা হলে আমি আপনাদের সাথে যাই ওখানে। এরপর তাকে নিয়েই আমরা রওনা দিলাম গেস্ট হাউজের পথে। গেস্ট হাউজে পৌছে দেখলাম, পাশাপাশি দুটি হাভেলি (যেমনটা ভৌতিক মুভিতে দেখা যায়) ভিতরে ঢুকে তো মাথাই ঘুরে গেলো। আগের দিনের রাজপ্রাসাদের ঘুরানো সিড়ি দেখে নিজেকে রাজা রাজা মনে হতে লাগলো। রুম দেখে তো পুরোই অবাক। একেকটা রুম প্রায় ৬৫০-৭০০ বর্গফুট। সাথের বাথরুমটিও প্রায় ২০০-২৫০ বর্গফুট। ভাড়া মাত্র ২৫০০ টাকা। কিন্তু আবার বিপত্তি হলো তুষার আংকেল এর সেহেরি নিয়ে। কারণ ওখানে কোনো খাবার পাওয়া যাবে না। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিতে পারলাম না ভৌতিক হাভেলিটি। ২০ মিনিট ধরে ঘুরে ঘুরে দেখানো হাভেলির মালিককে বলতেই তিনি একটা হাসি দিয়ে নিঃসংকোচে বললেন, এটা কোনো ব্যাপার না। যদিও আমার হাভেলিটি তে যাওয়ার পর থেকেই কেবল আহাট এর কথা মনে হচ্ছিল। এরপর ম্যানেজার লোকটি আমাদের শহরের মধ্যে একটা রিসোর্ট এ নিয়ে গেলেন। টি হ্যাভেন রিসোর্ট। বাইরে থেকে যতটা সুন্দর, ভেতর থেকেও ততটা সুন্দর রিসোর্টটি। মন ভালো হয়ে যাওয়ার মত একটা পরিবেশ। আমি, বাবা, মা মিলে একটা ফ্যামিলি স্যুট নিলাম। রুম থেকে ফ্রেশ হলাম। তুষার আংকেল ইফতার সেরে নিলেন এখানেই। তারপর সবাই মিলে বের হলাম খাদ্যান্বেশনে। সিলেটের নামকরা পানসি হোটেলের শাখা মনে করে যেই পানসিতে ঢুকলাম, সেখানকার খাবার খেয়ে তেমন মন ভরলো না। এরপর গাড়ি নিয়ে ৪০-৫০ মিনিট লং ড্রাইভ দিয়ে ব্যাক করলাম রিসোর্টে। অনেকটা টায়ার্ড থাকায় সেদিনের মতো ইতি টেনে ঘুমিয়ে পড়লাম।
২য় দিন:
রাতে ভালোমতো একটা ঘুম দিয়ে উঠতে উঠতে সকাল ৭টা বেজে গেল। রিসোর্ট থেকে দেওয়া কমপ্লিমেন্টারি নাস্তা খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্য, লাউয়াছড়া। রিসোর্টের রেস্টুরেন্ট এর একজন বয় একটা ট্যুর গাইড দিয়ে গেছিল। সেখান থেকে বেশ কয়েকটি গন্তব্য স্থির করে বের হলাম। এর মধ্যে মাধবপুর লেক লাউয়াছড়ার পরেই পরে। লাউয়াছড়া যাওয়ার পথে যে রাস্তাটি ধরে আমরা গেলাম, তাকে পৃথিবী না বলে ভূস্বর্গ বললেও ভুল বলা হবে না। এতটা সবুজের সমারোহ আগে কখনোও চোখে পড়েনি। রাঙামাটি, খাগরাছড়িতেও পাহাড়, বনজঙ্গল আছে। কিন্তু, এতটা জীবন্ত না। গাড়ির এসি বন্ধ করে দিয়ে পাখির কলতান শুনতে শুনতে এসে পড়লাম মাধবপুর লেকে। টিকেট কিনে ভেতরে ঢুকলাম। লেকটির পানি অসম্ভব স্বচ্ছ। লোকমুখে জানতে পারলাম, ওখানকার চা বাগানে কাজ করা মহিলারা নাকি ওই লেকের পানি সরাসরি খায়। ওই লেকেই প্রথম বেগুনি পদ্ম দেখলাম আমরা। দেখলাম সেখান থেকে প্রায় ১ কিমি উপরে চা বাগান আছে। মায়ের পায়ে ব্যাথা থাকার কারনে মা উঠতে পারলো না পাহাড় বেয়ে। আমি, বাবা, তুষার আংকেল আর সেখানকার একজন লোক উঠলাম ওই টিলা বেয়ে। যখন টিলাটার উপরে উঠে দাঁড়ালাম, পুরো চা বাগানটার চরাই উতরাই দেখতে পারলাম, চারিদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। সেখান থেকে কিছু ছবি তুলে নেমে আসলাম। এরপর গাড়িতে করে ছুটে চললাম শ্রীমঙ্গল শহরের পথে। লাউয়াছড়া আর যাওয়া হলো না। শহরে এসেই ঢুকলাম গোবিন্দাজে দুপুরের উদরপূর্তি করার জন্য। সেখানের সব খাবারই নিরামিষ। প্রথমে মনটা কিছুটা খারাপ হয়ে গেলেও, সেখানকার খাবার খেয়ে নিরামিষ এর উপর ধারণাই বদলে গেল। ৮-১০ পদের নিরামিষ আইটেম দিয়ে ভোজন সেরে আবার বেরিয়ে পড়লাম। এবার গন্তব্য মাধবকুন্ড, মৌলভিবাজার। প্রায় ৯০ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে যখন এলাম মাধবকুন্ড ইকো পার্কে, তখন ৪ঃ৩০ বেজে গেছে। টিকেট নিয়ে গেলাম ভেতরে। বন্ধ হয়ে যাবে ৫ টাতে। ভেতরে গিয়ে দেখলাম অনেক ঘন বন। আলো খুব কম। অনেক চরাই উতরাই পার করে প্রায় ২ কিমি পথ পেরিয়ে ঝর্ণার সামনে যখন আসলাম, তখন মনে হলো, ৯০ কিমি পথ পাড়ি দেওয়া স্বার্থক। প্রায় ২০০ ফুট উপর থেকে ঝর্ণার পানি আছড়ে পড়ছে ভূমিতে। সেই পানি কাচের মতো স্বচ্ছ। সেখানে অনেক ছবি তুলে বেরিয়ে পড়তে পড়তে ৫ঃ১৫ বেজে গেল। গেটম্যান ঝামেলা করলেও আমরা পাত্তা না দিয়ে চলে গেলাম। এদিকে ইফতার এর সময় হয়ে আসছে। তুষার আংকেল রোজা আছে। গাড়ি টান দিয়ে আমরা যখন বড়লেখা বাজারে আসলাম, তখন ৬ঃ১৫ বাজে। আমরা সবাই ইফতারি কিনে বসে থাকলাম। ৬ঃ৩২ এ আজান দিতেই সবাই মিলে ইফতার করলাম। ইফতার সেরে আবার চললাম শহরের পথে। শহরে এসে রেল স্টেশন এর সামনে থেকে সেখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় দোকান, গুপ্ত টি হাউজ থেকে চা কিনলাম। তারপর ভাবলাম মানু্ষের মুখে যে সাতরং চা এর গল্প শুনি, সেই সাতরং চা একবার খেয়ে আসি। চা খেতে গেলাম গ্র্যান্ড সুলতানের সামনের একটা দোকানে। প্রায় ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষার পর অবশেষে চা আসলো। চা খেয়ে সাতরং চা এর উপর ধারনাই পালটে গেল। এত বাজে চা আমি আমার জীবনে খাইনি। সবগুলো লেয়ারের একটাই স্বাদ পেলাম। তা হলো কড়া মিষ্টি। অর্ধেক চা খেয়ে ৪ জনে ৩০০ টাকার জলাঞ্জলি দিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। ফলাফল হলো মার ডায়াবেটিস বেড়ে গেল। তারপর পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে রাতের খাবার খেয়ে চলে এলাম রিসোর্টে। তারপর ঘুমিয়ে পড়লাম এবং আরেকটি দিনের ইতি টানলাম।
৩য় দিন:
ভোর ৫ টায় ঘুম ভেঙে গেলো। সুইমিং পুলের পাশে শুয়ে শুয়ে কিছুক্ষন গান শুনলাম। একটা কুকুর বেশ কিছুক্ষন ধরে পুলের ওপার থেকে তাকিয়ে ছিল। এর পর ভয়ে ভয়ে কাছে আসলো। ওর ভয়ের থেকে আমার ভয়ই বেশি ছিল। কাছে এসে কিছুক্ষন বসে থেকে আবার চলে গেল।
বাবা একটু পর এসে বসলো পাশে। হঠাৎ করেই অন্য একটি ডিসিশন নিলাম। শ্রীমঙ্গলে তো মোটামুটি সবই দেখা হয়ে গেছে। আজকে সিলেট যাওয়া যাক। মাকে গিয়ে বললাম। মা-ও রাজি। তাই সময় নষ্ট না করে নাস্তা করেই চেক আউট করে বেরিয়ে পড়লাম সিলেটের উদ্দেশ্যে। যাওয়ার পথে বাবার পরিচিত হোটেল, বটম-হিল এ বুকিং দিয়ে দিলাম ৩টা রুম। সিলেট শহরে ঢুকে ভালই লাগলো শহরটাকে। শহরের সিস্টেম টা খুব ভালো লাগলো। বড় গাড়ি যাতে শহরে ঢুকতে না পারে, তার জন্য শহরের প্রবেশ পথেই নিচু করে বেড়িকেট দেওয়া আছে। ফলে শহরের মধ্যে জ্যাম-জট কম। মাজার রোড এর সামনে দিয়ে আমরা ঢুকে গেলাম বটম-হিল প্যালেসে। বেশ সুন্দর ছিমছাম ২ তলা হোটেলটা।
রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ২ তলায় রেস্টুরেন্টে গেলাম। পেটপুরে খেয়ে রুমে এসে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে ৩ঃ১৫ এর দিকে বের হয়ে গেলাম জাফলং এর উদ্দেশ্যে। বরাবরের মতই সঙ্গী হলো গুগল মামার ম্যাপটা। জাফলং যাওয়ার পথে দেখলাম ডান দিক দিয়ে একটা রাস্তা গেছে। উপরে লেখা, "লালাখাল ৭কিমি"। ভাবলাম, মাত্র সাত কিমি! বাহ! তাহলে অইটাই আগে দেখে যাই। কিন্তু ওই রোডে ঢুকার পর বুঝলাম কি ভুলটা করেছি। রাস্তা এত্ত ভাঙা, যে ১৫-২০ এর উপরে গাড়ির স্পিডই তোলা যাচ্ছিল না। ফলাফল, লালাখালের ৭ কিমি যেতে ১ ঘন্টার উপরে লেগে গেল। লালাখাল পৌছে পুরাই হতাশ! দেখার মতো বলতে গেলে কিছুই নেই। একটা নদীর শাখা আছে। এইটুকুই। হতাশ হয়ে আবার ফিরে আসলাম গাড়িতে। এবার গুগল মামার ম্যাপ অন্য রাস্তা দেখালো জাফলং যাওয়ার জন্যে। সেই রাস্তাও অনেক ভাঙাচুরা। কাদার মধ্যে দিয়ে যেতে গিয়ে গাড়ির সিলভার কালার অদৃশ্য হয়ে মাটির কালার হয়ে গেল। অবশেষে অনেক চরাই উতরাই শেষে মেইন রোডে এসে পৌছালাম। মেইন রোড ধরে কিছুক্ষন যেতেই চোখে পড়লো অপূর্ব সুন্দর পাহাড়। পাহাড় গুলো ভারতের মধ্যে পড়ার কারণে তেমন পরিষ্কারভাবে দেখা যায় না। পাহাড়গুলো থেকে নেমে এসেছে অগণিত ঝর্ণা। রাস্তা ধরে এগুতে এগুতে দেখলাম এমন কিছু হেভি লোডের ট্রাক, যা আমাদের দেশে কখনোই দেখিনি। এবং অবাক করা বিষয়, ভাঙাচোরা রাস্তায় ট্রাকগুলো চালাচ্ছে ১০ বছরের বাচ্চা বাচ্চা ছেলেরা। আমরা এভাবে চলতে চলতে ঢুকে গেলাম জাফলং শহরে। জাফলং শহরটাকে যতটা বিরান ভেবেছিলাম, তা একেবারেই না। অনেক জমজমাট শহর জাফলং। বাজার পেরিয়ে যখন একটা ব্রিজের উপর দাড়িয়েছি, তখন সূর্যাস্ত হবে। সেখানে দাড়িয়ে নদীর কিছু ছবি তুললাম। কিন্তু পাথরের ওই স্পট টা কোথায়, তাই বুঝলাম না। মানুষকে জিজ্ঞাসা করতে জানলাম, আমরা অনেক আগেই জিরো পয়েন্টে ওই স্পট রেখে আসছি। আর ওইটা নাকি ৫ টায় বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে যাওয়া ভাগ্যে না থাকায় ১০০ কিমি পথ পাড়ি দিয়েও কোনো লাভ হলো না। হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হলো। আবার সেই ভাঙাচোরা পথ পাড়ি দিয়ে ঢুকলাম সিলেট শহরে। শ্রীমঙ্গলে যে ডুপ্লিকেট পানসীতে গেছিলাম, এবার সিলেটে এসে অরিজিনাল পানসীতে ঢুকলাম। ঢুকে তো আমার মাথায় হাত! সব মিলিয়ে কয়েক হাজার লোক একসাথে বসতে পারে। খাবার অর্ডার করলাম। খাবারের স্বাদ অসাধারণ। দামও অনেক রিজনেবল৷ আমরা খাওয়াদাওয়া শেষ করে হোটেলে ঢুকলাম। অনেক টায়ার্ড থাকায় ঘুমই হয়ে গেলো একমাত্র সঙ্গী।
শেষ দিন:
সকাল ৬ঃ৩০ তে ঘুম ভেঙে গেলো। আর না ঘুমিয়ে উঠে পড়লাম। ফ্রেশ হয়ে বের হতে গিয়ে দেখি হোটেলের গেট বন্ধ। সবাই ঘুমাচ্ছে। অগত্যা রুমে চলে আসলাম। তারপর পুকাল ৯ টার দিকে নাস্তা করলাম। তারপর বের হয়ে গেলাম রাতারগুলের উদ্দ্যেশ্যে। রাতারগুলে পৌঁছে তো দেখি এক নদীর পাড়ে কয়েকজরো হোটেলের ছবি তুললাম গুগল মামার ম্যাপে কন্ট্রিবিউট করার জন্যে। মামা আবার আমাকে লোকাল গাইড বানিয়েছেন। যাই হোক, সন মাঝি বসে আছেন। তো এক মাঝিকে নিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করলাম। ক্রমেই নৌকাটি বড় নদী পেরিয়ে ছোট একটা পথে ঢুকে গেল। এরপর থেকে যা দেখলাম, তা আমার নিজের জন্যে এক বিস্ময়। এই বিস্ময়কর স্থানটির বর্ণনা শেয়ার করে যারা দেখেন নি, তাদের বিস্ময় আমি নষ্ট করতে চাইছি না। তাই এটি একটা সাসপেন্সই থাকুক। যাই হোক, এরপর আমরা হোটেলে ফিরে আসি। এবং, সেই চরম মূহুর্ত উপস্থিত হলো, এবার আমাদের ফিরে যাওয়ার পালা। বিকেল ৪ টার দিকে আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই।
জীবন মানে শুধুই অন্যের প্রতি দায়িত্ব পালন করা নয়। জীবনের কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজের প্রতি দায়িত্ব পালন করাটাও জরুরি হয়ে পড়ে। ভ্রমণ এমনই এক দায়িত্ব পালন। দৈনন্দিন ১০টা-৫টার জীবন থেকে বিরতি নিয়ে, জ্যাম ঠেলে দৈনিক নিজ নিজ কর্মস্থলে যাওয়ার অবসাদ দূর করতে ভ্রমণের বিকল্প হয়ত আর কিছু নেই। ৫.৫/ ৬ ইঞ্চির মুঠোফোনটার বাইরেও যে একটা জগৎ আছে, তাই বারবার স্মরণ করিয়ে দেয় প্রকৃতি- যুগে যুগে করে এসেছে- ভবিষ্যতেও করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৬:১২