somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এসেছে বিজয়ের মাস, এসেছে আবেগ উছলে ওঠার দিন, আসুন আবেগের বহিপ্রকাশ ঘটাই কর্মের মাধ্যমে

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবার এসেছে বিজয়ের মাস, বছর ঘুরে বিজয়ের বার্তা নিয়ে এসেছে গৌরবান্বিত ডিসেম্বর। এবার আমরা চল্লিশ বছর পূরন করতে যাচ্ছি বিজয়ের। আমরা হয়ত অনেকেই জানি না এমন এক জাতির উত্তরসূরি আমরা যে জাতির রয়েছে চার হাজার বছরের গৌরব গাঁথা। এমন এক দেশে জন্ম হয়েছে আমাদের যে সারা জীবন গর্ব করার জন্য আর কিছু খুঁজতে হয় না, কিন্তু আমি বা আমরা কি আমাদের দায়িত্ব পালন করছি? আমাদেরকে বা আমাদের জাতিকে যাঁরা এত গৌরবান্বিত করেছেন তাঁদেরকে আমরা কতটুকু সম্মান দিয়েছি? তাঁদেরকে আজ সমাজে কয়জন লোক চেনে? হয়ত বিজয়ের এরকম চল্লিশ বছর আরো হাজারোবার কাটবে কিন্তু এই প্রথম চল্লিশ বছরেই তো আমরা আমাদের সেই বীর সেনানীদের অনেকটা লাইব্রেরির ইতিহাস বইয়ের মলাটে বন্দী করে ফেলিছ । নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার মত কোন নিরপেক্ষ ইতিহাস কি রেখেছি আমরা? আমাদের এত গৌরবজ্জ্বল অধ্যায়ে এখন কতজন নিজেকে ভাগ্যবান মনে করবেন জানি না, তবে আমরা যে আজ একটা নির্লজ্জ বেহায়া আত্মকেন্দ্রিক অসভ্য জাতিতে পরিনত হতে যাচ্ছি এই ধ্রুব সত্য টি সবাই তাদের সচেতন বা অসচেতন মনে ধারন করে থাকেন। পাশাপাশি আরো একটি ধ্রুব সত্য আছে,এই গৌরব কখনোই অস্তমিত হবে না। তবে বিশ্বের দরবারে এই গৌরবের আলোকছটা ছড়াতে হলে এই মুহুর্তে কিছু করনীয় আছে।

যুদ্ধাপরাধীদের তথা রাজাকারদের বিচারঃ

আমরা যতই আমাদের ইতিহাসকে গৌরবজ্জ্বল বলার চেস্টা করি না কেন, আমাদেরকে ততদিন পর্যন্ত এই গৌরবের মাঝেও একটা কলঙ্ক বয়ে বেড়াতে হবে যে আমরা রাজাকারদের এই দেশের মাটিতে তাদের স্থান দিয়েছি, তাদেরকে এই দেশের পবিত্র বাতাসে শ্বাস নেয়ার সুযোগ দিয়েছি, শুধু তাই নয় তাদেরকে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়েছি, তাদেরকে আবার ক্ষমতায় বসিয়েছি, অথচ এই হায়েনাগুলার কীর্তিকলাপ আজকে নানানভাবে প্রমান করার পরেও তাদের কেউ কেউ বলছে প্রহসনের বিচার। তাদেরকে রক্ষার জন্য রাজনৈতিক ততপরতাও চলছে। এত বড় আগাছা নিয়ে এত বড় গলদ নিয়ে এই ইতিহাস খুব বেশিদিন টিকবে না। এদেরকে এবং এদের যত বীর্যবাহিত অপরাধ আছে সবগুলোকে সমূলে উপড়ে না ফেললে আমাদের এই ইতিহাস একসময় আমাদের জন্যেই বোঝা হয়ে যাবে। আজকে এই গোলাম আযম, নিজামী, এই সাকা চৌ, এই মুজাহিদের একটা দৃষ্টান্তমূলক বিচার বাংলার মাটিতে না হয় তাহলে মওদুদীর গড়া ইসলাম বেচে খাওয়া জামাতের দলের এই রাজাকারগুলোর আদর্শে বড় হওয়া জঘন্য মানুষগুলোকে এই পবিত্র মাটি থেকে তাড়ানো না যায়, তাহলে এরাই একটা গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে উঠবে। ইতিমধ্যে একটি বিচার শুরু হয়েছে। আমজনতা খুব আশা নিয়ে বসে আছে একটা বিচার দেখবে। ইতিমধ্যে কয়েকটি ১৬ ডিসেম্বর পার হয়েছে। সেক্টরস কমান্ডার ফোরাম “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই” শীর্ষক কিছু সভা-সেমিনার-মানববন্ধন করেছে। কিন্তু, তাতে কি বিচার প্রকৃয়াতে কোন গতি এসেছে? যেকোন ভাবে যদি আর দুটি বছর পার করা যায় তাহলেই তো আর হয়ত এদের আটকে রাখা যাবে না। এরা আবার বের হবে, আবার তাদের আদর্শ ছড়াবে, আবার তাদেরকে ভোট দেয়ার মত বাঙালি জন্ম নেবে, আবার তারা হয়ত বাংলাদেশের পতাকাখচিত গাড়িতে করে স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে যাবে।

➽ ➽ কি করনীয়?

* যুদ্ধাপরাধীদের যেভাবেই হোক না কেন অন্তত চলমান বিচার প্রকৃয়ার মাধ্যমে শাস্তি দিতে হবে। তাদের শাস্তিটা হয়ত একবার দেয়া যাবে, কিন্তু এরা যেই জঘন্য কাজে মদদ যুগিয়েছে, যেই নৃশংস ঘটনার জন্ম দিয়েছে তার তুলনায় তাদেরকে একবার মৃত্যুদন্ড দেয়াটা নিতান্তই বেত্রাঘাত সমতূল্য। তাদের শাস্তি হতে হবে জনসম্মুক্ষে এমনভাবে যাতে তাদের আদর্শের মানুষেরা শিউরে ওঠে। গোটা বিশ্ব জানুক চল্লিশ বছর পর হলেও তাদের শাস্তিটা চল্লিশ হাজার বছর মনে রাখার মত।

* এই “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার” আগামী নির্বাচন থেকে বেশ গরম একটা পয়েন্ট হবে যেকোন রাজনৈতিক দলের জন্য। এমনকি হয়ত জামাত ও তাদের ইশতেহারে এই পয়েন্টটা লাগাতে পারে। তাই এই যুযোগটা যদি বাংলাদেশের জনতা তাদেরকে (রাজনীতিবিদদের) দিয়েই দেয় তার পরিনতি নিশ্চয়ই বুঝতে কারো বাকি নেই, আমাদের এত রক্ত এত ত্যাগ এত কষ্টের ইতিহাস স্রেফ একটা রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিনত হবে। এই ইস্যু এমন এক পর্যায়ে পৌছাবে আমরা হয়ত এই ইতিহাসকে ভবিষ্যতে লুকিয়ে রাখব লজ্জায়।

* আওয়ামীলীগের মত ঝানু রাজনৈতিক দলও এই ইস্যু নিশ্চয়ই নির্বাচন পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখবে। অন্তত তাই মনে হচ্ছে, তবে কোনভাবে যদি তারা ব্যর্থ হয় তার পরিনতি যা হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।কিন্তু এত বড় আশঙ্কা থাকার পরেও আমার মনে হয় এভাবে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকাটা রীতিমত অন্যায়। সরকারকে একটা বিচারপূর্বক শাস্তির ব্যবস্থা করাতে বাধ্য করাতে হবে। প্রয়োজনে আমাদেরকে মাঠে নামতে হবে, আমাদেরকে আবার বিচারের দাবিতে সোচ্চার হতে হবে, সরকারকে বাধ্য করাতে হবে যাতে ঐ শুয়োরগুলো আর কোনদিন এই দেশের পবিত্র আলো দেখতে না পায়।


* অনেকে বলে এটাই কি দেশের একমাত্র সমস্যা নাকি? এটার পেছনে এত মাতামাতি কি আছে? তাদেরকে বলতেই হয় “তোমার মাকে কেউ একজন ধর্ষন করে যাক, তারপর তুমি তোমার সাধারন জীবন যাপন করবে নাকি ধর্ষকের বিচার তোমার কাছে মূখ্য হবে?” এই ধরনের লোকগুলোকে পাশ কাটিয়ে যেভাবে হোক এই আমজনতাকেই কাংখিত বিচার ছিনিয়ে আনতে হবে। অন্তত যাদের মনে এতটুকু আবেগ আছে এই দেশ আর এই দেশের ইতিহাস নিয়ে।

* যাদের অন্তর ঐ ইতিহাস নিয়ে কাঁপে না তাদের জন্য কয়েকটা ছবি দিলাম। এই ছবিগুলো দেখেও যাদের অন্তরে ধাক্কা লাগে না তাদেরকে আমি মানুষ বলতে রাজি না।



প্রতিটি নদী ৭১ এ মানুষের রক্তে লাল হয়েছিল।


এই একটা ছবিই যেকোন "মানুষ" এর বুক কাঁপাতে বাধ্য



এইরকম কত শত বধ্যভূমি আজকে অবহেলিত, অজানা



৭১ এর দিনগুলো একটু গভীরভাবে স্মরন করলেই আমরা বাংলাদেশি হতে পারব

{ছবিগুলো গুগল থেকে সংগৃহীত}

শুধুই কি বিচার চাই?

ধরুন, কেউ আপনাকে একটা ভয়ংকর বিপদ বা দুর্ঘটনা থেকে উদ্ধার করল, যে করল সে নিজেও তার জীবনের ঝুঁকি নিল। ফিরে এসে আপনি কি সেই মানুষটার প্রতি মৃত্যু পর্যন্ত কৃতজ্ঞ থাকবেন না বা থাকা কি উচিত না? যে আপনার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিল তাকে কি আপনার মৃত্যু পর্যন্ত সুখী দেখতে চান না? সেই মানুষটার প্রতি কি আপনি একবারে নির্মল একটা আবেগ অনুভব করবেন না? তাহলে কেন আমরা সেই বীর সেনানিদের ভুলে গেলাম?

একটু অনুভব করুন, কিছু মানুষ শুধুমাত্র মনের বলে আর প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসকে অস্ত্র করে কামান আর বুলেটের নিচে নিজেদের বুক কে উন্মুক্ত করে দিল নিশ্চিত মৃত্যুর সামনে। দেশের জন্য নিজের অস্তিত্ত্বের জন্য কতবড় আত্মত্যাগের সামনে নিজেদেরকে সঁপে দিয়েছেন? কতবড় মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন? বাঙালি জাতিকে কত মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন তাদেরকে আজ আমরা কি দিয়েছি? তাঁদের প্রতি কি আমাদের কোন দায়িত্ব নাই?

* কোটা প্রথাই কি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একমাত্র পন্থা?

না। কোটাপ্রথা চালু করে হয়ত অনেক মুক্তির যোদ্ধাদের কিছু কষ্ট লাঘব করা যায়, তাদের সন্তানদের কোটার আওতায় এনে সেই পরিবারে কিছুটা শান্তির পরশ দেয়া যায়, আর প্রশাসনের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। কিন্তু প্রকৃত অর্থে এর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনভাবেই সম্মান প্রকৃত সম্মান প্রদর্শন করা যায় না।{একবার এক পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে এক চাকরি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে আমাকে শুনতে হয়েছিল “সব মুক্তিযুদ্ধার সন্তানকে ব্রাশ ফায়ার কইরা মাইরা ফেলাইতে পারলে চাকরি পাওয়া যাইত”} এই কোটা প্রথা যে মাঝে মাঝে বিরূপ প্রভাবও ফেলে তারই দৃষ্টান্ত এটা। হ্যাঁ, এই কোটা একটা খুব ছোট অংশ একজন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মানিত করার জন্য বা প্রশাসনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।

* আজকে একজন মুক্তিযোদ্ধার বয়স কত?

ধরি ২০ বছর বয়সে একজন মুক্তিযুদ্ধ করলেন, আজকে তার বয়স কত? ৬০? বাংলাদেশের একজন মানুষের গড় আয়ূ কত? ৬০ কাছাকাছি একটা সংখ্যা। তারমানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া সেই বীরদের প্রজন্ম আমাদের মাঝ থেকে চলে যাচ্ছে। একেবারে নিভৃতেই তাঁরা চলে যাচ্ছেন। আমি জানি অনেক ব্যাথা আর অভিমান নিয়ে তাঁরা চলে যান, আমি দেখেছি ব্যাংকে কিভাবে তাদেরকে একটা রংচটা পাঞ্জাবি পরে ভাতার কিছু টাকার জন্য বুভূক্ষের মত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কতটা অসহায় বোধ করেন তারা যখন মাত্র অল্প কয়েকটা টাকার জন্যে এভাবে লাইনে দাঁড়াতে হয়। তাদেরকে তো এ টাকাগুলো সম্মানের সাথে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসা উচিত। তাঁদের প্রজন্ম এরকম হাজারো মান-অভিমান নিয়ে আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন আর আমরা আমাদের আত্মকেন্দ্রিকতাময় জীবন নিয়ে হুড়োহুড়ি করে ব্যস্ততার অভিনয় করে যাচ্ছি। আমাদের প্রজন্মের প্রতিটি মানুষের এই মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মেতে থাকার কথা ছিল। আর আজ আমাদের ডিসেম্বর, মার্চ ইত্যাদি দিবস খুঁজতে হয় মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলার জন্য, মুক্তিযোদ্ধাদের দিবস খুঁজে তাদের সম্মানিত করতে হয়!

* মুক্তির যোদ্ধারা ভাতা চান না, তাঁরা দিবস অনুযায়ী ফুলের মালা নিতেও আগ্রহী না এমনকি কোটা ব্যবস্থাতেও তাঁদের কারোই প্রবল আগ্রহ নেই তাঁরা শুধু এ দেশটারে ভাল থাকুক এটাই চায়, এই দেশে যাতে কোন রাজাকার মন্ত্রী না হয় এটাই দেখতে চায়। আর তাঁরা সমাজের মাঝে একটু সম্মান চায়। আর আমরা কি নির্লজ্জ জাতি, এত বড় বড় মহতপ্রান মানুষগুলোকে ঠিকমত চিনিই না, তাদেরকে সম্মান করব কিভাবে? তাঁদেরকে যথাযথ সম্মান দিতে না পারলে সমাজে তাঁদেরকে সম্মানের আসন দিতে না পারলে অকৃতজ্ঞ আর নির্লজ্জ জাতিতে পরিনত হবে আমরা। উন্নত দেশগুলোতে সামান্য কোন কাজে কেউ বীরত্ব দেখালে তার নামে রাস্তার নাম হয়ে যায়, ভাস্কর্য হয়, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তাদের দেখে অনুপ্রানিত হতে হতে বড় হয়। আর আমাদের দেশের এই বীরদের মত গোটা পৃথিবীতে আর কোন বীর নাই, তারপরেও আমরা এই বীরদের এখনো ঠিকমতই চিনি না (৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের নাম একসাথে বলতে পারবে এমন বাঙালি খুব কমই আছে, কী লজ্জা, কী লজ্জা)। হয়ত তাদের প্রজন্ম পুরোপুরি চলে যাবার পর আমরা তাদের নিয়ে অনেক মাতামাতি করব কিন্তু তা আসলে ফলপ্রসূ কিছু হবে, একবার তাদেরকে অবহেলা করার কলঙ্ক লেগে গেলে এই বাঙালি জাতিকে সেটা বয়ে বেড়াতে হবে অনন্তকাল। আমাদেরকেই জাগতে হবে, তাঁদেরকে যথাযথ সম্মান দিতেই হবে। এর কোন বিকল্প নাই।তাঁদেরকে সম্মানিত করা ব্যতিরেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমাজে সফলভাবে কোনদিনও প্রতিষ্ঠিত হবে না।


ইতিহাস না বাঁচলে বাঙালি জাতির বেঁচে থেকে কি লাভ?


ধরুন আপনি পঞ্চম শ্রেনীর একটা ক্লাসে বসে আছেন। স্যার এসে আপনাকে স্বাধীনতার ঘোষকের নাম বললেন। বই থেকে পড়ে শোনালেন তাঁর জীবনকাহিনী। এর পরের ক্লাসেই আর একজন শিক্ষক এসে আর একজনের নাম বললেন। পরের বছর হয়ত পাঠ্য বইয়েও দেখতে পেলেন তাঁর নাম। তারপর আপনি মনে মনে কি ভাববেন? সেই পঞ্চম বা ষষ্ঠ শ্রেনীতেই আপনি চরমভাবে এই চ্যাপ্টার থেকে বিকর্ষন অনুভব করলেন, থাক তো এই বিষয়ে অনুপ্রানিত বা আবেগ অনুভব করা!!

* আমাদের বাঙালি জাতির চার হাজার বছরের ইতিহাস আছে ঐতিহ্য আছে। ৭১ এর ইতিহাস বাঙালি জাতিকে এক মহিমান্বিত জাতিতে পরিনত করেছে, কিন্তু কয়জন নিজেকে শ্রেষ্ঠ এভাবে অনুভব করতে পারেন? এই দোষটা কার? দোষটা হল ইতিহাস বিকৃতির। ৭১ এর পর থেকে যে যেভাবে পেরেছে নিজের জন্য ইতিহাসকে বিকৃত করে নিয়েছে সুযোগ পেলেই সে বিকৃত ইতিহাস সবার মাঝে ছড়িয়েছে। আমাদের এত গৌড়বজ্জ্বল ইতিহাস আজ থেকে হয় ১০/১৫ বছর সামনে দৃঢ়চিত্তে বলার মত অবস্থা থাকবে না। ইতিহাস থাকবে কি না সেটাই সন্দেহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। থাকবে কি করে আমরা আমাদের নেতাদেরই বাঁচিয়ে রাখতে পারি না, ইতিহাস বাঁচবে কি করে? যার যা মর্যাদা তাকে সে মর্যাদা দেয়ার মত মানসিকতা আমাদের মাঝে খুব কমই আছে। অথচ এই দৈন্যতা যে আমাদের দিন দিন দুর্বল করে দিচ্ছে সে হিসেবটা কেউ রাখছে না। আমাদের সেই অর্থে কোন আক্ষরিক সম্পদ নাই, তবে বিশ্বের সবচেয়ে দামি সম্পদের অধিকারী আমরা , সেই দামি সম্পদকে না পারছি আমরা ভোগ করতে না পারছি রক্ষা করতে। এটা আমাদের দুর্বলতা।

এতক্ষন অনেক বড় বড় কথা বললাম। অনেক দিন বলব বলব করে এত কথা জমে গেছে খেয়াল করি নি, তবে সব শেষে একটা কথা বলতে চাই, বিজয়ের মাস এসেছে। আমাদের মাঝে লাল সবুজের চেতনা জন্ম নিবে। কারো কারো মাঝে আবেগ কাজ করবে। আসেন এই আবেগ আর চেতনাটাকে কাজে লাগাই। ক্ষণস্থায়ী এই আবেগ আর চেতনাটাকে দীর্ঘস্থায়ী করি। নিজের মাঝে নিজের দেশের প্রতি একটা দায়বোধের স্থান উন্মোচন করি। যুদ্ধাপরাধীদের দাবিতে সোচ্চার হই। যে কয়জন মহান বীর মুক্তি যোদ্ধা বেঁচে আছেন তাঁদের নিয়ে সমাজে অন্যরকম একটা আবহ তৈরি করি। তাঁদের নিয়ে ইতিহাসকে নতুন করে প্রস্ফুটিত করি। আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে, কারন এটা আমাদের সম্পদ, আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে।

উতসর্গঃ মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোন(A Page totally based on liberation war'71)

***************************************************



সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:০২
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×