ইমরানের ৬ প্রশ্ন ও আমার ছোট করে তার উত্তর
রাষ্ট্রের কাছে ছয়টি প্রশ্নের উত্তর চেয়েছেন ইমরান।
১. জামায়াত-শিবির চক্র ব্লগে এবং ফেইসবুকে মওদুদীবাদ প্রচারের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মকে নানাভাবে যখন প্রশ্নবিদ্ধ করে, তখন কোথায় থাকে রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞপ্তির ধর্মানুভূতি?
উত্তরঃ তখন তোমাদের কল্যাণে ওদের ব্লগ, ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো আর সরকার সব সময় নজরদারি করছে আর এর ফলে অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু সরকার কখনই নাস্তিক দের উপর নজর রাখেনি।
২. যখন জামায়াত জাতীয় মসজিদে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করে তখন কী রাষ্ট্রের ধর্মানুভূতি শীতনিদ্রায় থাকে?
উত্তরঃ নাহ, তখন তাদের উপর ও গুলি করা হয়েছিল। আর সরকার এদের কে সায় ও দেয়নি। কিন্তু যখন নাস্তিকরা মসজিদ নিয়ে উল্টা পাল্টা কথা বলে বা হজ্জ নিয়ে কথা বলে তখন তো সরকার কিছুই বলেনি বা করেনি।
৩. যখন চট্রগ্রামে আলেম সমাজকে হত্যার হুমকি দেয় জামায়াত-শিবিরের শ্বাপদরা, তখন কি রাষ্ট্রের অভিধানে ধর্মানুভূতি শব্দটি অনুপস্থিত থাকে?
উত্তরঃ সেই হুমকি কারিদের বিরুদ্ধে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু একজন নাস্তিক যখন ঘাতকের আঘাতে মারা যায় তখন তাকে শহীদ বলার পরও সরকার কিছু বলেনি এবং সায় দিয়েছে। অথচ বিশ্বজিৎ পায়নি শহীদের মর্যাদা।
৪. যখন জামায়াত-শিবির পুলিশের উপরে নির্বিচারে হামলা চালায়, তাদের হত্যা করে, চিকিৎসককে আগুনে পুড়িয়ে মারে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধের হুমকি দেয়, রাষ্ট্র তখন কেন তদন্ত কমিশন বানায় না? তখন কি রাষ্ট্র আঘাতপ্রাপ্ত হয় না?
উত্তরঃ রাষ্ট্র আর দেশ এর মাঝে তফাৎ তা কি বুঝিয়ে বলবেন? তখন সবাই আঘাত পেয়েছে আর এর পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী গুলি করার অর্ডার করেছেন। তদন্ত দিয়ে এই দেশে কিছু হয় না। সাগর রুনির মারা যাওয়ার তদন্তের ৪৮ ঘণ্টা এখনো শেষ হয়নি। আর মঞ্চের পিছনে ককটেল ফুটলেও তদন্ত ছাড়াই বলা হয়েছিল জামাত শিবির করেছে। তখন কোথায় ছিল তদন্ত কমিশন আর আঘাতপ্রাপ্ত এর প্রশ্ন?
৫. হরতালের নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবির যখন দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেয়, ব্লগের ক্ষুদ্র গণ্ডি থেকে যে সব গণমাধ্যম ধর্মীয় অবমাননাকর বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসে, তখন রাষ্ট্র কেন কমিশন করে উদ্যোগ নেয় না?
উত্তরঃ হরতাল সারাজীবন ধরেই আছে। আপনারা যখন বলেন ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচী দিবেন তখন সেটাও হরতাল সামিল। সব ধরনের হরতালই দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেয়। আপনারা শাহবাগের যে জায়গায় ছিলেন সেটাও অনেকের জন্য অস্থিতিশীল হয়েছিল।
৬. যখন অনলাইন এবং ব্লগে জামায়াত-শিবির বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অপপ্রচার চালায়, তখন কেন মহাজোট সরকার তার বিরুদ্ধে উদ্যোগ নেয় না? আজ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার বিরুদ্ধে সরকার কি কোনো উদ্যোগ নিয়েছে?
উত্তরঃ যখন অনলাইন এবং ব্লগে নাস্তিকরা ইসলাম নিয়ে, ধর্ম নিয়ে নবী রাসুল নিয়ে অপপ্রচার চালায়, তখন কেন আপনারা তার বিরুদ্ধে উদ্যোগ নেননি? কেনো তাকে শহীদ বলে চেচিয়েছিলেন? আপনারাও কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বানিয়ে ফেলেছেন। সরকার তখনও কোনো উদ্যোগ নেন নি। তখন তো সরকার কে ভালো লেগেছিল আপনাদের।
সব গুলো প্রশ্ন জামাত শিবির কে নিয়ে করা হলো। হা অবশ্যই আমাদের দেশের বর্তমান যে অবস্থা তার প্রতি সত্যি আমি খুব অবাক আর ভীত। আমাদের দেশের মানুষ কিভাবে এতো অমানুষের মতন আচরন করছে তা ভাবতেই পারিনা। একটা মানুষ কে (সে পুলিশ হোক আর যেই হোক) কিভাবে পিটিয়ে এইভাবে মারতে পারে? আমি লাঠি বৈঠা মিছিল থেকেও এরকম দেখেছিলাম যদিও আপনারা কেও সেটা মনে রাখেন নি। আমি বিশ্বজিৎ এর থেকেও সেটা দেখলাম, যদিও আপনারা কেও সেটা বলেননি। আপনারা শুধু রাজীব কে নিয়ে বলেছেন আর আসিফ মাহমুদ কে নিয়ে বলেছেন। তারা নাকি মুক্তমনা। কিন্তু আপনারা আজ যেসব প্রশ্ন করলেন সেটা শুধু মাত্র সরকার আপনাদের বিপক্ষে গেছে বলেই করেছেন তবে একটা ছোট ভুল করেছেন বার বার, সেটা হলো আপনারা রাষ্ট্র নিয়ে বলছেন বার বার, যেটা আমার কাছে খুব বিরক্ত মনে হয়েছে, রাষ্ট্র আমাদের একটা আর সেটা বাংলাদেশ। তাই আপনাদের রাষ্ট্র না বলে সরকার বললে ভালো হতো। আর আপনারা শুধু আপনাদের নিয়েই বললেন, একবারো দেশের মানুষের অবস্থা নিয়ে বলেন নি।
একবারও কি ভেবে দেখেছেন আপনারা কবে থেকে দেশের এই অবস্থা শুরু হয়েছে? হে, সেদিন থেকে যেদিন থেকে আপনারা একজন নাস্তিকের মৃত্যু নিয়ে নাটক শুরু করেছিলেন, তার জানাজা নিয়ে নাটক শুরু করেছিলেন। আপনারা কিছু হলেই জামাত শিবির বলে চেচিয়ে ছিলেন। আমি অবশ্যই আপনাদের বিপক্ষে এইদিক থেকে যাবো না কারন আসলেই কিছু পাগল শ্রেণীর জামাত শিবির এই কাজ করেছে তবে তাদের সাথে অবশ্যই কিছু অন্য পক্ষ ছিল। কারন কখনই একটা শ্রেণীর এতো সাহস হতে পারে না যে তারা দেশ কে অস্থিতিশীল করে দিবে। আপনারা প্রথম যে দাবী নিয়ে নেমেছিলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী, তখন আমরা সবাই আপনাদের সাথে ছিলাম। তবে আপনারা শুধু মাত্র গোটা কয়েকজনের নাম বলেছিলেন, যাদের সবাই জামাত এর লোক। এইভাবে আপনারাই দেশের মাঝে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন। আপনারা এক পক্ষ হয়ে কথা বলেছেন সব সময়। যেটা দেশের মাঝে এইরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সহযোগিতা করেছে। আর আপনারা বুদ্ধিমান হয়ে কেনো সরকার কে বার বার বলছেন একটা রাজনৈতিক দল বাদ দেয়ার জন্য? আপনারা কি জানেন না সরকার চাইলেও একটা রাজনৈতিক দল বাদ দিতে পারেন না? তাহলে তো যে কোনো সরকার তার বিরোধি দল কে যে কোনো সময় বাদ দিয়ে দিতে পারতো। আপনারা বার বার কেনো পাগলের মতন সরকার কে দোষ দিচ্ছেন? আবার আপনারা তারিখ ও বলে দিচ্ছেন যে ৪ এপ্রিল এর মাঝে এ কাজ করতে হবে। মগের মুল্লুক নাকি? আমিও চাই পাকিস্তানী দালালের দল বাদ হোক তবে এর মানে এই না যে পাগলের মতন তারিখ দিয়ে চেচাবো।
আপনারা দাবী তুলেছেন, দাবী অবশ্যই বাস্তবায়ন হবে তবে যদি পরবর্তী নির্বাচন এ ওরা আবার দাড়ায় তবে আপনারা আবার মঞ্চে আসুন, তখন বলুন কেনো এটা হলো। এখন আপনারা শান্ত হন আর দেশের জন্য কাজে নেমে যান। আপনাদের জন্য প্রতিদিন দেশের অনেক সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। কারন আপনারা কোনো যুদ্ধ থামাতে পারেন নি বরং আপনাদের জন্যই দেশের অবস্থা অস্থিতিশীল হয়েছে। আমরা সবাই সব সময় সরকারকে দোষ দেই। আমিও দেই। তবে কিছু কিছু বেপার সরকারের হাতে থাকে না সেটা বুঝতে হবে। অন্তত আপনাদের সেটা বুঝা উচিৎ। আর দেশ নিয়ে যারা বাজে বাজে কথা বলে, দেশের মহান নেতাদের নিয়ে যারা উল্টা পাল্টা বলে, যারা নাশকতার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে যেমন সরকার পদক্ষেপ নিবে, ঠিক তেমনি নাস্তিক মুক্তমনা, ইসলাম বা ধর্ম বিরোধি ব্লগার দের বিরুদ্ধেও সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে কারন এইটা সংবিধান বিরোধি ও মানবতা বিরোধী।