somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বকাপীয় কথনঃ কেন লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনার লোকেদের দু চোখের বিষ!!!!

১১ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৭:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


টানা চারবার ব্যালন ডি অর জেতা ভিনগ্রহের ফুটবল খেলা লিওনেল মেসিকে এসময়ের কেন, অনেকে তো সর্বকালের ফুটবল গ্রেটদের তালিকাতেও রাখেন। কিন্তু মজার বিষয় হল এই তারকাকে তার নিজ দেশ আর্জেন্টিনার লোকেরা দুচোখে দেখতে পারে না! কিন্তু কেন?!!! চলুন জানি...

ব্রাজিলের মাঠে যখন লিওনেল মেসি এবারের বিশ্বকাপ মিশনে নামবেন তখন তার মাথার উপর সবচেয়ে বড় বোঝা হয়ে থাকবে যে বিষয় সেটা হল তাকে জিততেই হবে! তা না হলে তার নিজ দেশের লোকেদের মুখে তাকে শুনতে হবে যে সে দেশের জন্য খেলে-না ক্লাবের জন্য খেলে!

২৬ বছরের খেলোয়াড়ী জীবনে কি না জিতেন নি তিনি! শুধু আক্ষেপ একটাই আর সেটা হল বিশ্বকাপ অধরা থেকে যাওয়া! বার্সেলোনার হয়ে ছয়টি লীগ শিরোপা, তিনটি চ্যাম্পিয়েন্স লীগ আরো কত কি! কিন্তু এত কিছু জেতা মেসিকে আর্জেন্টিনার লোকেরা একেবারেই দেখতে পারে না! অদ্ভুদ! তাই না? অনেকেই তো আছেন যারা ক্লাবের হয়ে অনেক ভাল খেলেন কিন্তু দেশের হয়ে তার ক্যারিয়ার ততটা ভাল না- কিন্তু তাদের তো নিজ দেশের মানুষ দেখতে পারে না এমন তো কখনো হয় না! কিন্তু মেসির বেলায় কেন এমনটি????

মেসির ব্যাপারে আর্জেন্টাইনদের যত ক্ষোভ তার ভেতর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হল মেসি অনেক ছোট বেলায় দেশ ত্যাগ করেছে, ঘরোয়া লীগে সে খেলে নি। তবে এই দোষটা পুরটা মেসির নয়- এখানে হাত ছিল তার ভাগ্যদেবীর! মেসির ভাগ্যদেবী তার জন্য অন্য কিছু লিখে রেখেছিলেন, তাই তিনি গ্রোথ হরমোনের ঘাটতি জনিত রোগে আক্রান্ত হন আর ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার সহায়তা পান-আর বার্সেলোনা পায় তার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়কে।
কিন্তু আর্জেন্টাইনদের আরেকটি আক্ষেপ হল, মেসি জাতীয় সংগীত এর সময় সবার সাথে তাল মিলিয়ে দেশের জাতীয় সঙ্গীত গান না। তাই তারা মনে করেন মেসির দেশের প্রতি কোন টান নেই, তার দেশের জার্সির প্রতি কোন মায়া নেই!

আরেকটি মজার বিষয় হল মেসির সহজাত সরল প্রবৃত্তির কারণে আর্জেন্টাইনরা মনে করে যে মেসির কোন ব্যক্তিত্ব নেই! নানা কারণে সবসময় আলোচনায় থাকা ফুটবলগ্রেট ম্যারাডোনাকে দেখে অভ্যস্ত আর্জেন্টাইনরা বোধহয় মেসির সরল স্বভাবকে একজন ফুটবলারের স্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব বলে মনে করে না।

তবে যে একটা বিষয়ের জন্য যে এখনো মেসিকে আর্জেন্টাইনরা একেবারেই ছুড়ে ফেলে নি তা হল তার আর্জেন্টাইন স্প্যানিশের উচ্চারণ! সুদূর স্পেনে গিয়েও মেসি তার দেশের উচ্চারণেই কথা বলেন স্প্যানিশ ভাষায়। আর্জেন্টাইনরা এই একটা কারণেই বলতে গেলে আর্জেন্টিনা দলে মেসিকে মেনে নেয় তা না হলে তারা তাকে হয়ত জাতীয় দলেই ঢুকতে দিত না! আর্জেন্টাইনদের দৃষ্টকোণ থেকে মেসি আর ম্যারাডোনার ভেতর সবচেয়ে বড় তফাত হল ম্যারাডোনা ফুটবল শিখেছেন আর্জেন্টিনার কাদা মাটিতে আর মেসি ফুটবল শিখেছেন দামি কাতালান কাপড় গায়ে জড়িয়ে! সাধারণ আর্জেন্টাইনদের পরিবারে জন্ম নেয়া ম্যারাডোনাকে আর্জেন্টাইনরা নিজেদের লোক বলে মনে করে!

২০০৬ সালের বিশ্বকাপে জার্মানীর কাছে বিধস্ত হওয়ার পর মেসি নিজের দেশের মানুষের কাছে আরো বড় খলনায়কে পরিণত হন! তবে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ১০ টি গোল করে আর্জেন্টিনাকে মূল পর্বে খেলার সুযোগ করে দিয়ে তিনি দেশের মানুষের কাছে নিজের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও পরিবর্তন করতে পেরেছেন।

মেসি কি পারবেন এবার বিশ্বকাপ জিতে নিজ দেশের মানুষের কাছে নিজের একটই পাকা স্থান তৈরি করে নিতে? সময়ই দিতে পারবে এর সঠিক জবাব.........

বিঃ দ্রঃ আমি নিজে একজন অন্ধ মেসিভক্ত তাই পোস্টটিকে মেসির বিপক্ষে লেখা বলে মনে করার কোন কারণ নাই!!!!

(তথ্যসূত্রঃ ফক্স সকার, গোল ডট কম, মুন্ডো ডেপোর্টিভো, ব্লিচার রিপোর্ট)
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×