উন্নত রাষ্ট্রের নাগরিকেরা ইসলাম মানে না। আর যেসব রাষ্ট্রের নাগরিকেরা ইসলাম মানে সে সব রাষ্ট্র অনুন্নত। তবে কি উন্নতির জন্য ইসলাম ছাড়তে হবে? কিন্তু ইসলাম মানলে পরকালে যে সব লাভ হওয়ার কথা বলা আছে ইসলাম ছাড়লে পরকালের সে সব লাভ হওয়ার কথা নয়।কাজেই পরকালের উন্নতি চাইলে ইহকালে উন্নতি না হলেও ইসলাম মানতে হবে।প্রাপ্ত সংবাদ অনুযায়ী ইহকালের সময় সামান্য আর পরকালের সময় অন্তহীন। বিশ্বের বেশীরভাগ মানুষ ইসলাম মানে না কারণ তারা এতে নগদ লাভ দেখছে না। আর ইসলাম মানায় যে বাকী লাভের সংবাদ রয়েছে সে সংবাদ তারা সঠিক বলে বিশ্বাস করে না। যতটা যাচাই করলে সে সংবাদের সঠিকতা বুঝা যেত তাদের যাচাই এর স্তর সে স্তর পর্যন্ত উঠেনি। তবে যারা ইসলাম মানে ইসলামের পরকাল সংক্রান্ত সংবাদ তারা বিশ্বাস করে। তারা এ সংবাদের সঠিকতা বুঝতে সক্ষম হয়েছে। অথবা ইসলাম না মানায় পরকালীন যে অনন্ত অবনতির সংবাদ দেওয়া আছে সে অবনতির ঝুঁকি তারা গ্রহণ করতে রাজি নয়। তারমানে পরকালিন অবনতির ভয় ইসলাম মান্যতার প্রধান কারণ।সংগত কারণে ইহকালিন উন্নতি ও অবনতি ইসলাম পরিত্যাগের মোক্ষম কারণ নয়। তবে ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ সাধারণ জ্ঞান ও বিশেষ জ্ঞানে রয়েছে।অনুসন্ধান সঠিক হলে এ সংক্রান্ত জ্ঞান লাভ কঠিন কিছু নয়। কাজেই ইহকালিন উন্নতি হোক অথবা না হোক যারা ইসলামের অনুসারী তারা সঠিক পথেই আছে।যেসব রাষ্ট্রের নাগরিকেরা ইসলাম মানে সে সব রাষ্ট্র অনুন্নত এটা ইসলামের বেঠিকতার প্রমাণ নয়। পৃথিবীর বেশীরভাগ মানুষ ইসলাম মানে না এটাও ইসলামের বেঠিকতার প্রমাণ নয়। কারণ লোকদের ইসলাম মানার মূল কারণ পরকাল। কাজেই ইসলাম মানার যথেষ্ট কারণ এর সঠিকতা।অনেকে ইসলামের সঠিকতার প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারলেও তারা বুঝে ইসলাম সঠিক।অনেকের অভিযোগ হলো মুসলমানের সন্তান হওয়ায় অনেকে ইসলাম মানে। কিন্তু তারা ইসলামের সঠিকতা বুঝতে চেষ্টা করেনি সেটা কি করে বলা যায়? যারা সঠিক পথে আসতে চা্য় না। তাদেরকে জোর করে সঠিক পথে আনার কোন দরকার নেই। কারণ তাদের ক্ষতির দায় তারা বহন করবে। যারা সঠিক পথে আছে তাদেরকেই বেঠিক পথে নেওয়ার চেষ্টা করার দরকার নেই। কারণ অহেতুক কারো ক্ষতি করা ভাল কাজ নয়। প্রত্যেকের নিজ নিজ সীমায় অবস্থান শান্তির সহায়ক। সীমালংঘন কিছুতেই সঠিক হতে পারে না।
লোকেরা যখন আমাদেরকে বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে ইসলাম ছাড়তে বলে তখন আমাদেরকে বলতে হয় আমরা সঠিক পথেই আছি কাজেই তোমাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার কোন প্রয়োজন আমাদের নেই। যখন তারা বলে ইসলাম কিভাবে সঠিক তখন আমাদেরকে ইসলামের সঠিকতার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হয়। ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ উপস্থাপন করলে তারা বলে তাহলে মুসলিম রাষ্ট্র সমূহ অনুন্নত কেন? এখন কেউ যদি মাসিক চুক্তিতে কাজ নিয়ে মাসের আগেই বেতন চায় তবে সেটা কেমন হয়? আল্লাহর সাথে মুসলমানের চুক্তি তাদের কাজের দাম তারা পরকালে পাবে এখন তারা যদি ইহকালেই দাম চেয়ে বসে থাকে তবে তাদেরকে সে দাম কে দেবে? কেউ যদি বলে দামের কিছু অংশ ইহকালে দেওয়া হোক। এখন আল্লাহ যদি দেখেন ইহকালে দিলে পরকালে বিপদ হবে তাহলে ইহকালে দেয় কেমন করে? যারা পরকাল চায় না তাদের সব প্রপ্য যদি ইহকালেই দেওয়া হয় তবে তাদের উন্নতি না হয়ে উপায় কি? কেউ যদি বলে তারাতো আল্লাহর কাজই করেনা তাদের আবার দাম কি? কিন্তু তারা অনেক ভাল কাজ করে আর ভাল কাজ করা আল্লাহর কাজ কাজেই তাদেরো দাম পাওয়ার বিষয় রয়েছে। আর পরিশ্রম করাও আল্লাহর কাজ সেটাও তারা করে। কাজেই আল্লাহর দপ্তরে তাদেরও পাওয়া যোগ হচ্ছে।তাদের পাওনা ইহকালে দিয়ে দিলে আর মুসলমানের পাওনা পরকালের জন্য জমা থাকলে মুসলমানের ইহকালিন অবনতি আর অন্যদের ইহকালিন উন্নতি হয়না কেমন করে? কেউ যদি বলে মুসলমানেরা অমুসলমানদের দেশে যায় কেন? এখানে কথা হলো ইহকালিন কাজ এক জিনিস আর পরকালিন কাজ অন্য জিনিস। এখন মুসলমানের ইহকালিন কাজের যোগ্যতা কম বলে কি তারা পরকালিন কাজ করবে না? আর ইহকালিন কাজের যোগ্যতা যাদের বেশী তারা তাদের পিছনে দৌড়ালে সমস্যা কি? অযোগ্যরা যোগ্যদের পিছনে দৌড়ায় এটাইতো নিয়ম। ইহকালিন বিষয়ে মুসলমানেরা যাদের পিছনে দৌড়ান দরকার মনে করছে তারা তাদের পিছনে দৌড়াচ্ছে। পরকালিন বিষয়ে কেউ মুসলমানের পিছনে দে্ৗড়ান দরকার মনে করলে মুসলমান চিরকাল তাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছে। যদি মুসলমানে পিছনে যারা দৌড়ায় তাদেকে মুসলমানেরা তাড়িয়ে দিত তাহলে না হয় এ ক্ষেত্রে মুসলমানের দোষ ধরা যেত। কিন্তু তেমন অসৌজন্য যখন মুসলমান করছেনা তখন তাদের দৌড়ানোকে স্বাগত না জানিয়ে উল্টা তাদেরকে কেন দোষারোপ করা হয়? কেউ যদি পরকাল বিষয়ে মুসলমানের পিছনে দৌড়ান দরকার মনে না করে তাতেই বা মুসলমানের দায় কোথায়? মুসলমান যেটা দরকার মনে করে সেটা তারা করছে অন্যদের দরকারে দৌড়ানোকেও মুসলমান স্বাগত জানায়। কাজেই অহেতুক মুসলমানের ইজ্জত নিয়ে টানাটানির কোন দরকার নেই।
সার কথা ইসলাম একটা কাজ। এ কাজ যার পোষায় সে করবে। আর এ কাজের দাম যিনি দিবেন তিনি সেটা যখন দেন তখনই সেটা নিতে হবে।তাঁর স্বভাব বুঝে যারা তাঁর কাজে শ্রম দিবে এটা একান্তই তাদের ব্যপার। নগদ উন্নতি করার জন্য যারা কাজ করছে তাদের নগদ উন্নতি হবে এটাও নিতান্ত স্বাভাবিক। এসব ক্ষেত্রে নির্বোধের মত কথা বলা ঠিক নয়।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫১